(সম্প্রতি করোনাভাইরাসের মহামারী নিয়ে অনেকরকম কনফিউশান সৃষ্টি হয়েছে। তাই এখানে আমি সবচে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট গুলো আলোচনা করেছি। সময় নিয়ে পড়বেন আশা করি। ভুলত্রুটি মার্জনাপূর্বক ধরিয়ে দেবেন)
১. nCoV এর outbreak হয়েছে চীনে। Abbreviation টার পূর্ণরূপ : Novel Coronavirus.
Novel কেন? উপন্যাসের মত কাহিনী করছে তাই? নাকি কোনো উপন্যাসে এটার কথা predict করা হয়েছিল?
Novel এর অর্থ দুইটা। একটা হচ্ছে "উপন্যাস", আরেকটা হচ্ছে " অভিনব"। Novel drug = অভিনব ওষুধ, novel therapy = অভিনব চিকিৎসা, novel contribution = অভিনব অবদান, Novel virus = অভিনব ভাইরাস।
এখন কথা হল, এই nCoVকে Novel বলছি কেন? শুধু Coronavirus কেন না?
কারন হচ্ছে, Coronavirus আসলে নতুন কিছু না। আমাদের যে seasonal সর্দিকাশি হয় সেগুলার একটা বড় অংশই হয় rhinovirus নাহয় coronavirus দিয়ে।
যেহেতু সবসময়ই এটা দিয়ে infection হয়, তাই সর্দিকাশি ও সবসময় সেরে যায় - আমাদের immune system এসব coronavirus কে চেনে, এদের fight করতে পারে। তবে genetic mutation এর জন্য সবসময়ই ছোটখাটো change হচ্ছে এদের মধ্যে। কিন্তু যদি বড় কোনো change আসে, তখন আমাদের immune system আর ওকে চিনবেনা - সে হয়ে যাবে novel বা অভিনব Coronavirus. যেহেতু immune system ওকে চিনছেনা, তাই nCoV যদি মানুষকে attack করে তাহলে রোগটা পুরাতন CoV এর attack থেকে বেশি risky হবে। আর যেহেতু এবারই এই প্রজাতির corona প্রথম পাওয়া গেল, তাই শুধু এই মাসখানেকের জন্যই এটাকে novel বলা হবে - আবার যদি এই corona দিয়ে epidemic হয়, তখন আর এটা novel Coronavirus থাকবেনা। তাই এই নতুন প্রজাতিটার আপাতত নাম nCoV-2019.
এখন কথা হল, Coronavirus এর মধ্যে বড় change কি এই প্রথম আসলো?
উত্তর হল, না। আগেও বড় change এসেছিল। যেমন, ২০১২ সালে মধ্যপ্রাচ্যে একটা নতুন প্রজাতির উদ্ভব হয় - সেটাকে শুরুতে ডাকা হত nCoV-2012. পরবর্তীতে nCoV-2012 দিয়ে হওয়া infection এর নাম দেয়া হয় middle east respiratory syndrome বা MERS, আর nCoV-2012এর নাম হয় MERS Coronavirus. nCoV-2019 দিয়ে হওয়া infection এর নাম দেয়া হলে ভাইরাসটার নামও বদলিয়ে যাবে।
২. nCoV-2019 outbreak হওয়ার পর থেকে দেশের ফেরিওয়ালা আর ফুটপাথের mask বিক্রেতাদের বিক্রি অনেক বেড়ে গেছে। আমি তাদের ব্যবসার ক্ষতি চাইনা, তবে সত্যি বলতে কী, এই maskগুলো পরলেও লাভ নাই।
কেন? উত্তর জানতে আমাদের জানতে হবে Coronavirus কীভাবে ছড়ায় সেটা।
Coronavirus ছড়ায় respiratory droplets এর মাধ্যমে। অর্থাৎ একজন infected মানুষ হাঁচি কাশি দিলে বা শ্বাস ছাড়লে, শ্বাসের সাথে বের হওয়া জলীয় বাষ্পের কণাগুলো Coronavirus বহন করে। এই droplets সরাসরি আপনার শ্বাসের সাথে ঢুকে যেতে পারে।
অথবা infected মানুষ তার মুখের কাছে হাত নিয়ে হাঁচি কাশি দিল, তার হাতে droplets লেগে গেল। কিছুক্ষণ পর আপনার সাথে সে handshake করল। আপনি সেই হাত দিয়ে চোখ নাক চুলকালেন। আপনি infected হয়ে গেলেন।
অথবা infected মানুষ বাসের সিটে বসে হাঁচি দিল, সিটে droplet ভরে গেল। আপনি পরের স্টপেজে বাসে উঠে ঐখানে বসলেন, সেই জায়গায় হাত লাগালেন, সেই হাত দিয়ে কিছু খেলেন। আপনি infected হয়ে গেলেন।
তার মানে infection থেকে বাঁচতে আমাদের শ্বাসের বাতাস আর হাত - দুইটাকেই infected droplet থেকে মুক্ত করতে হবে। হাতকে মুক্ত করতে ভালমত হাত ধুয়ে খাওয়াদাওয়া করতে হবে। আর শ্বাসের বাতাস কীভাবে পরিষ্কার হবে? রাস্তার কেনা maskগুলো দিয়ে?
এগুলা কাপড়ের তৈরী - কাপড়ের fibre গুলার মাঝে ছোট্ট ছোট্ট ছিদ্র থাকে, সেগুলো দিয়ে ধুলাবালি ঢুকতে পারেনা। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে droplet গুলা আরো অনেক ছোট। কাজেই এসব মাস্ক দিয়ে লাভ নাই। তাহলে কী করা উচিত? ফার্মেসী থেকে surgical mask কিনে নিলে best. এগুলায় filter থাকে, তাই droplets শ্বাসনালী দিয়ে ঢোকার থেকে আপনি বাঁচবেন।
আরেকটা ইম্পর্ট্যান্ট পয়েন্ট। কিছুদিন যাবৎ একটা ছবি শেয়ার হচ্ছে, যেটায় লেখা, সুস্থ মানুষ মাস্কের সাদা দিক বাইরে রেখে পরবে, আর অসুস্থ মানুষ রঙিন দিক বাইরে রেখে পরবে। এটাও সম্পূর্ণ ভুল। সুস্থ হোন বা অসুস্থ - রঙিন দিকটাই বাইরে দিয়ে পরতে হবে। নাহলে কাজ হবেনা।
৩. আরেকটা জিনিস ইদানিং শেয়ার হচ্ছে, চীন মুসলিমদের ওপর জুলুম করছে, তাই আল্লাহ ওদের ওপর এই আযাব দিয়েছেন।
তাহলে বিবিধ প্রশ্ন আসবে যার একটারও satisfying জবাব আপনি খুবসম্ভবত দিতে পারবেননা।
যেমন, মুসলিমদের ওপর জুলুম চীনা সরকার করছে। সরকার না মরে কেন সাধারণ মানুষ মরছে?
তাহলে বিবিধ প্রশ্ন আসবে যার একটারও satisfying জবাব আপনি খুবসম্ভবত দিতে পারবেননা।
যেমন, মুসলিমদের ওপর জুলুম চীনা সরকার করছে। সরকার না মরে কেন সাধারণ মানুষ মরছে?
nCoV-2019 দিয়ে আক্রান্ত হয়েছে কেবল ৭ হাজার এর মত মানুষ, যেখানে চীনের জনসংখ্যা ১৫০ কোটি। আর বাংলাদেশে কদিন আগে যাওয়া ডেঙ্গু মহামারীতে আক্রান্ত হয়েছিল প্রায় ২০-৩০ হাজার মানুষ, যেখানে বাংলাদেশের জনসংখ্যা চীনের মাত্র ১০ ভাগের ১ ভাগ। মানে চীনের তুলনায় আক্রান্ত লোকের হার প্রায় ৩০ গুণ বেশি ছিল বাংলাদেশের ডেঙ্গু মহামারীতে। ওটা কি আযাব ছিলনা তাহলে?
nCoV-2019 দিয়ে আক্রান্তদের মধ্যে death rate 2%, এখন পর্যন্ত দেড় বিলিয়ন চাইনিজদের মধ্যে দেড়শও মরেনি। অন্যদিকে ২০১২ এর Middle East Respiratory Syndrome বা MERS আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার ছিল প্রায় 40%। Middle East এর জনসংখ্যা আধা বিলিয়নও না, কিন্তু প্রায় চারশ লোক মারা গিয়েছিল সেবার। MERS কি তাহলে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর আযাব ছিল?
আফ্রিকায় কোটি কোটি শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে। সেটা কি আফ্রিকার ওপর আযাব?
আল্লাহ কোন জিনিস কী উদ্দেশ্যে করেন সেটা উনিই ভাল জানেন। আন্দাজে তাঁর ওপর মিথ্যা অপবাদ দিয়ে নিজের জাহান্নামের রাস্তা খুলে দিচ্ছিনা ত আমরা?
Writer: Susmit Islam