ভৌতিক গল্পঃ দ্যা হন্টেড নাইট (পর্ব ১)


রাত প্রায় ১:৩০, লম্বা হাইওয়ের দু ধারে গাছগাছালি ঘিরে রেখেছে দুপাশ। পূর্ণিমার রাত, আকাশে হালকা মেঘের সঙ্গে যেন গোলাকার চাঁদ লুকোচুরি খেলছে। হাইওয়ের এক কোণ থেকে রাতের পরিবেশ ছিড়ে এগিয়ে আসছে একটি গাড়ির হ্যাডলাইটের তীব্র আলো, একটি সাদা রঙের গাড়ি। পূর্ণিমার রাতে যেন গাড়িটিকে আভছা আলোতে স্পষ্ঠ দেখা যাচ্ছে। ফাঁকা রাস্তা পেয়ে বেশ স্পিডে চলছে গাড়িটি। বেশ কিছুক্ষণ পর, হঠাৎ মাঝ পথে গাড়িটির স্টার্ট বন্ধ হয়ে যায়। অনেক চেষ্টার পরও চলছে না। হতাস হয়ে সিটের সাথে হেলান দিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে ড্রাইভিং সিটে বসা ফারাবী।
- গাড়ি নষ্ট হয়ে গেছে। ফারাবী বলল
- এখন কি করবে? পাশ থেকে সাবিহা বলল
- ভাবছি, হয়তো ইঞ্জিনে কোনো সমস্যা।
- পরিবেশটা কেমন যেন ছমছমে।
- ভয় করছে তোমার? সাবিহার দিকে তাকিয়ে বলল ফারাবী
- না, কারণ তুমি আছো। মুচকি হেসে বলল সাবিহা
- ঠিক আছে, এবার চলো নামি। কি প্রবলেম তা তো দেখতে হবে।
গাড়ি থেকে নেমে পড়লো দুজন, বাহির থেকে পরিবেশটা দেখতে আরো ভূতুরে বলো মনে হচ্ছে। ফারাবী গিয়ে গাড়ির ইঞ্জিন দেখতে লাগলো। তার পাঁশে ভীত হয়ে দাঁড়িয়ে আশেপাশে তাকাচ্ছে সাবিহা। দুপাশে ঘন জঙ্গল, হঠাৎ জঙ্গেল মাঝে কিছু একটার উপস্থিতি টের পেল সে! ভীত কন্ঠে ফারাবীকে ডাকলো,
- ফারাবী! ওখানে!
- কি হয়েছে?
- ওখানে কিছু একটা ছিল ফারাবী, তুমি আসতেই সরে গেল!
- কি বলছো!
কয়েক পা এগিয়ে জঙ্গলের মাঝে টর্চের আলো ফেলল ফারাবী, তবে কেউ নেই। সাবিহার কথা তার বিশ্বাস হলো না, সাবিহা মেয়েটি খুব ভীতু, তাই হয়তো এমন পরিবেশে যা তা দেখছে। সাবিহার কাছে এসে ফারাবী বলল, সত্যিই তো! ওখানে, ওখানে একটা লেপার্ড আছে! কথাটি বলা মাত্র চিৎকার করে গাড়ির ভেতর চলে যেতে চায় সাবিহা, ফারাবী তার হাত ধরে থামিয়ে হাসতে হাসতে বলে, আরে বাবা শান্ত হও, ওখানে কিছুই নেই।
- কিছু নেই মানে? তুমি না বললে.. .
- কিছু নেই মানে কিছু নেই, অযথা ভয় পাচ্ছো। আমি আছি না?
- ওসব বাদ দাও, বলো গাড়ির কি হয়েছে?
- ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে গিয়েছে, মেকানিন ছাড়া ঠিক হবে না।
- কি বলো? এখন মেকানিক কই পাবে!
- তাই ভাবছি, রাতও গভির হয়ে আসছে। জায়গাটাও ঠিক বলে মনে হচ্ছে না।
- এরচেয়ে এক কাজ করো, হেঁটে যেয়ে দেখি যদি কোনো মানুষের দেখা পাই।
- হুম এছাড়া কোনো উপায় নেই, চলো। দীর্ঘশ্বাস ফেলল ফারাবী
একসঙ্গে হাঁটতে শুরু করে ফারাবী ও সাবিহা। চাঁদের সঙ্গে দুষ্টু মেঘগুলো লুকোচুরি খেলছে, মৃদু বাতাস যেন শরীরে শীত ধরিয়ে দিচ্ছে তাদের। এমন নির্জন এলাকায় গাছের পাতা ও তাদের জুতোর শব্দ যেন পরিবেশটাকে আরো ভূতুড়ে করে তুলেছে। কোথায় যেন একটা পেঁচা অদ্ভুত ভাবে থেকে থেকে ডাকছে। ফারাবীর হাত জড়িয়ে ধরে সাবিহা।
- ফারাবী আমার খুব ভয় করছে! সাবিহা বলল
সাবিহার কথা শুনে দাঁড়িয়ে গেল ফারাবী, ভ্রু তুলে বলল,
- কেন?
- দেখো না, জায়গাটা কেমন যেন।
- সাবিহা, তোমায় অনেক দিন যাবত কিছু বলতে চাইছি। তবে, সময় ও পরিস্থিতির কারণে সুযোগ পাইনি।
- কি বলবে? বলো।
- আমি তোমায় ভালোবাসি সাবিহা। জানিনা তোমার উত্তর কি হবে তবে, আশা করছি আমায় ফিরিয়ে দিবে না।
- কি বলছো তুমি?
অনেকটা নিচু স্বরে কথাটি বলল সাবিহা। চারপাশে ঝিঁঝিঁ পোকা ডাকছে, তার মাঝে দাঁড়িয়ে দুজন। ফারাবীর দু কাঁধে হাতসাবিহ রাখলো সাবিহা।
- আমিও তোমায় ভালোবাসি, জানি হারানোর ভয়ে এতদিন বলোনি।
- আমি তোমার জন্য কিছু এনেছি।
জ্যাকেটের ভেতর থেকে একটি আংটি বের করলো ফারাবী। সাবিহার দিকে চেয়ে হাত বাড়িয়ে দিতে বলে, সাবিহার আঙুলে আংটিটি পড়িয়ে দিয়েই একে অপরকে জড়িয়ে ধরে দুজন।
- আংটিটা খুব সুন্দর! সাবিহা বলল
- তোমার পছন্দ হয়েছে? ফারাবী বলল
মাথা নেড়ে সায় দিল সাবিহা, সাবিহাকে আনন্দিত দেখে মুচকি হাসলো ফারাবী। এমন সময় মেঘের আড়াল থেকে পূর্ণিমার চাঁদ পুরোপুরি বেরিয়ে আসলো। কেমন যেন করে উঠলো ফারাবী, বুক চেপে ধরে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো।
- ফারাবী কি হয়েছে তোমার?
- চলে যাও এখান থেকে!
ফারাবীর চেহারা দেখে ভয়ে আতঙ্কে চিৎকার করে উঠে সাবিহা! পূর্ণিমার আলোয় স্পষ্ঠ দেখা যাচ্ছে ফারাবীর প্রায় তিন ইঞ্জি লম্বা সুচালো দাঁত, চোখ জোড়া হলদে রঙ ধারণ করছে, কানগুলো খেক শেয়ালের কানের মতো রূপ নিচ্ছে, দু হাতের নখ গুলো রাক্ষসের নখের মতো লম্বা হয়ে আসছে, গাল দিয়ে বেরিয়ে আসছে খেক শেয়ালের মতো লম্বা লোম! সব মিলিয়ে যেন এক হিংস্র জানোয়ারে পরিণত হয় ফারাবী, ভয়ে আতঙ্কে চিৎকার করে জঙ্গলে পলায়ন করে সাবিহা। আকাশ পানে মুখ করে এক ভয়ানক আওয়াজ দেয় ফারাবী, আওয়াজের সঙ্গে শীতের দিনের কুয়াষার মতো ধোঁয়া বেরিয়ে আসে তার মুখ থেকে। আশে পাশে চেয়ে সাবিহার পিঁছু নেয় ফারাবী।
পাগলের মতো দৌড়ছে সাবিহা, গাছগাছালির কারণে ছুটে চলা প্রায় অসম্ভব। চাঁদের আলোও খুব একটা এসে পৌঁছাচ্ছে না এখানে। তবুও বাঁচার আসায় ছুটতে থাকে সাবিহা, অপরদিকে সাবিহার পিছু ছুটে ছুটে অনেকটা কাছে এসে পড়ে ফারাবী। এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আশপাশ দেখে সামনের গাছে প্রচন্ড থাবা বসিয়ে এগিয়ে গেল সে, তার এক থাবায় অর্ধেক হয়ে যায় গাছটি! দৌড়াতে দৌড়াতে হাপিয়ে উঠলো সাবিহা, হাঁটুতে হাত রেখে একটু জিরিয়ে নিল। তবে থামলে চলবে না, পুনরায় পেছনে চেয়ে সামনে এগুতে যাবে এমন সময় তার সামনে এসে উপস্থিত হয় ফারাবী! ভয়ে আতঙ্কে চিৎকার করে উঠে সাবিহা, পিছু হটতে গিয়ে গাছের ডালে পা লেগে মাটিতে পড়ে যায়। তার দিকে হিংস্র রূপে এগিয়ে আসে ফারাবী, তার ড্রাকুলারের দাঁতের মতো লম্বা দাঁতগুলো বেয়ে লালা পড়ছে! চাঁদের আলোয় তাকে আরো ভয়ানক লাগছে সাবিহার কাছে, ফারাবী আকাশ পানে বিকট আওয়াজে ডেকে হঠাৎ ঝাপিয়ে পড়লো সাবিহার উপর!
হঠাৎ একটি ঠান্ডা হাত তার কাঁধ চেপে ধরে! মূহুর্তেই সাবিহার ঘুমটা ভেঙে গেল, চিৎকার করে চোখ মেলে সে।
- আরে কি হয়েছে?
কথাটি শুনে ভালো করে তাকায় সাবিহা। সে বিছানায় শুয়ে আছে, তার কাঁধে হাত রেখে দাঁড়িয়ে ফারাবী। কপালে বিন্দু বিন্দু ঘামের উপস্থিতি অনুভব করছে, বুঝতে বাকি রইল না সাবিহার। এতক্ষণ যা দেখেছে তা ছিল দুঃস্বপ্ন, ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন! ফারাবীর দিকে তাকালো সাবিহা, ফারাবী মুচকি হেসে বলল, কোনো দুঃস্বপ্ন দেখেছো? মাথা নেড়ে সায় দিল সাবিহা। ফারাবী সাবিহার মাথায় হাত বুলিয়ে কপালে আলতো চুমু দিয়ে বলল, এভাবে ভয় পেতে হয়? এই বলে টেবিলের উপর রাখা মিলিটারি ক্যাপটি মাথায় দিল ফারাবী।
- আজ আমায় ডাকলে না কেন?
সাবিহা বিছানার উপর বসে বলল, ফারাবী তার পাশে বসে বলল
- কেন যেন, তোমার ঘুমন্ত চেহারা দেখে আর ডাকতে মন চাইল না। তাই আর ডাকা হয়নি।
- তোমার অসুবিধে হবে না?
- উহু, ক্যান্টিন থেকে খেয়ে নিব। যাই হোক, এবার উঠে ফ্রেস হয়ে নাও।
- হুম।
ফ্রেস হতে চলে গেল সাবিহা, এসে দেখে ফারাবী বিছানায় বসে কিছু ফাইল দেখছে। সাবিহাকে দেখে ফাইল বন্ধ করে নিয়ে এগিয়ে যায় দরজার দিকে। প্রতিদিনের মতো ডিউটির কাজে বেরুচ্ছে ফারাবী, সাবিহাও প্রতিদিনের মতো দাঁড়িয়ে আছে দরজার পাশে। হাতে ঘড়িটা ঠিক ভাবে পড়ে বেরুনোর জন্য পা বাড়াতেই বাধা দেয় সাবিহা।
- একটু দাঁড়াও! সাবিহা বলল
- কি হয়েছে? কিছু বলবে? ফারাবী বলল
- কোথায় যাচ্ছো?
- কেন অফিসে!
- কিছু ভুলছো নাতো?
- কই নাতো! রুমেল স্যার কিছু ফাইল দিয়েছিল সেগুলোও তো নিলাম।
- থাক লাগবেনা, যাও।
- কি হয়েছে বলো?
- কিছু হয়নি, তোমার দেরি হচ্ছে যাও।
কিছুক্ষণ ভেবে ফারাবী বলল,
- ওহ সরি ভুলে গিয়েছিলাম।
এই বলে সাবিহাকে কাছে টেনে নিয়ে তার কপালে ঠোঁটের স্পর্শ দিল ফারাবী। মুচকি হাসি দিয়ে সাবিহা বলল,
- ব্যাপার না, যাও।
অনুমতি পেয়ে ফারাবী প্রতিদিনের মতো ডিউটির কাজে বেরিয়ে পড়ে। সকালে হালকা নাস্তা করেই সারাদিনের ডিউটিতে লেগে পড়া। সারাদিন দৌড়াদৌড়ি করতে করতে প্রায় ক্লান্ত, তার উপর বার্তি টেনশনে ভোগতে হচ্ছে ফারাবীকে। ফালতু টেনশনের সাথে কাজের চাপে মাথা ধরে যায়। কোনো সাধারণ মানুষের পক্ষে এমনটা হলে দিন শেষে নিঃসন্দেহে এক বিলতি ভাত খেয়ে নিতে পারবে। তবুও কিছু করার নেই, সামরিক মানেই কষ্ট, এবং কষ্ট মানেই সামরিক। ফারাবীর যত সাহস, শক্তি ও আত্মবিশ্বাস, সব লুকিয়ে আছে এই জলপাই রঙের ইউনিফোর্মটায়। সারাদিন ফাইল হাতে এই স্যারের কাছ থেকে ওই স্যার, আবার ওই স্যার থেকে এই স্যার দৌড়াদৌড়ি করতে করতে অবশেষে কোয়ার্টারে ফিরলো ফারাবী।
ক্লান্ত শরীর নিয়ে দরজার সামনে এসে দাঁড়ায় ফারাবী। কলিংবেল চাপতে যাবে এমন সময় তার খেয়াল হলো, দরজা আজানো! কিছুটা অবাক হলো ফারাবী, সাবিহা নিজেকে যথেষ্ঠ নিরাপদ রাখতে জানে। অন্তত এমন বলদের কাজ করার মতো মেয়ে নয়। ভেতরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে সাবিহাকে খুঁজতে থাকে। ড্রইং রুমে এসে দেখে টিভি চলছে, অথচ রুমে কেউ নেই। খানিকটা বিরক্ত হয়েই সোফার সামনে রাখা টেবিল থেকে রিমোট নিয়ে টিভি বন্ধ করে ফারাবী। পেছন ফিরতেই চোখ বেডরুমের দিকে, কেউ একজন কম্বল দিয়ে মুখ ঢেকে শুয়ে আছে। ফারাবীর বুঝতে বাকি রইল না যে এটাই সাবিহা। রিমোট সোফার উপর রেখে বেডরুমে যায় সে, একবার সাবিহার দিকে তাকিয়ে ঘড়ি খুলতে খুলতে বলল, যখন টিভি দেখবে না তখন সেটা বন্ধ করে রেখো! ফারাবীর কথা শুনা মাত্র কম্বল সরিয়ে ফারাবীকে ঝাপটে ধরে সাবিহা! সাবিহার এমন আচরণ আগে কখনো দেখেনি ফারাবী।
- আরে কি হয়েছে এমন করছো কেন? ফারাবী জিজ্ঞেস করলো
- ফারাবী প্লিজ, এই কোয়ার্টারটা চেঞ্জ করো! কাঁদো কাঁদো কন্ঠে সাবিহা বলল
- কেন কি সমস্যা কোয়ার্টারে?
- এই কোয়ার্টারে অশুভ কিছু একটা আছে, প্লিজ তুমি কোয়ার্টার চেঞ্জ করো নয়তো ইউনিটে বলে ট্রাস্নফার নাও।
- আচ্ছা আগে বলো কি দেখেছো? কি অশুভ?
সাবিহাকে বিছানায় বসিয়ে তার সামনের সোফায় বসে ফারাবী।
- এবার বলো? কি হয়েছে? ফারাবী বলল
- আজ সকালে, স্বপ্নে দেখলাম যে তুমি....
- আমি?
- শুনো না!
- আচ্ছা বলো।
- দেখলাম যে তুমি পূর্ণিমার রাতে খেক শেয়ালের মতো হয়ে গেছো। ড্রাকুলার মতো দাঁত, লম্বা নখ, সারা মুখ ঢেকে গিয়েছিল কালো লোমে! উফ... ..
ভয়ে দু হাত দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে নেয় সাবিহা। ফারাবী তাকে অভয় দিয়ে বলল,
- দেখো আজ কাল তুমি হয়তো কিছু নিয়ে বেশি টেনশন করছো, তাই হয়তো এমন লাগছে। আর তুমি যে হরর সিনেমা দেখো? সেসব আর দেখবে না।
- আমার কথা কি তোমার বিশ্বাস হয়না? আমি নিজের চোখে একটা ছায়া দেখেছি যা এই সোফায় বসে ছিল। তুমি যে টিভির কথা বলছো, তাও আমি করিনি। কিভাবে অন হলো কিছুই জানিনা।
ফারাবী একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলল, সাবিহাকে দাঁড় করিয়ে বলল,
- তুমি শুধু শুধুই ভয় পাচ্ছো, অশুভ বলতে কিছুই নেই।
- আমি বিশ্বাস করিনা, একদিন সেটা আমাদের ক্ষতি করে বসবে!
- তাই নাকি? কোথায় তোমার ভূতটা?
- এই ঘরেই।
- এইযে ভূত মশাই, কোথায় আপনি? এখানে থাকলে সাড়া দিন তো! ভূতের উদ্দেশে বলল ফারাবী
কথাটি বলা মাত্র ওয়াড্রবের উপর রাখা কাঁচের ফুলদানিটি পড়ে ভেঙে গেল! আতঙ্কিত হয়ে ফারাবীকে জড়িয়ে ধরে সাবিহা।
(চলবে..)


লিখাঃ ফারহান আহমেদ ফারাবী 


দ্যা হন্টেড নাইট (পর্ব ২)

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form