মুক্তিযুদ্ধে প্রান দিয়েছেন ৩০ লাখ মানুষ। তাহলে বীরশ্রেষ্ঠ মাত্র ৭ জন কেনো? সেই সাতজনই আবার সামরিক সদস্য। সাধারন মানুষ কোনো ট্রেনিং ছাড়াই বীরদর্পে লড়াই করে প্রান দিলো তাদের নাম এই তালিকায় কেউ নেই? এসব কথা মাথায় এসেছে কখনো? সম্ভবত এসেছে বা আসেনি। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এইদেশে লেখনীর সংখ্যা নেহাতই কম নয়। সদ্য লেখা শুরু করা লেখক থেকে, নামকরা সবাই লিখেছেন, লিখছেন। কিন্তু এই প্রজন্ম যারা সরাসরি মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি, তারা কতটা সুযোগ পাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সঠিকভাবে জানার? সব দিনলিপি, উপন্যাস বা ঐতিহাসিক উপন্যাস কতটা দেখাতে পারছে সেই চিত্র? একই স্থানের দুইজন আলাদা ব্যক্তির দিনলিপিতেই দিনের অবস্থার কথা দেখলাম ভিন্ন ভিন্ন। একজন বলছে সুন্দর রোদেলা আকাশ তো অন্যজন লিখেছে বৃষ্টির কথা। হাজারো এরকম লেখনীর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের ছোটখাটো একটা চিত্র সুন্দরভাবেই উপস্থাপন করা হয়েছে জোসনা ও জননীর গল্প উপন্যাসে৷ উপন্যাসের প্রয়োজনেই লেখক ইতিহাস ঘেটেছেন,নিজের দেখা যুদ্ধকে মিশিয়েছেন যে তথ্য তার কাছে অযৌক্তিক লেগেছে সেটা ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন। লেখকের উপন্যাসে মুক্তিযুদ্ধের দলিল থেকে সরাসরি অনেক অংশ ব্যবহার করা হয়েছে। এই দলিল নিয়েও আমার, লেখকের কিছু খটকা আছে। একটি শুধু বলি–রাজারবাগ পুলিশ লাইনে বন্দি তরুণীদের উপরে নির্যাতনের সাক্ষ্য গ্রন্থাবদ্ধ করা হয়েছে। বলা হচ্ছে তাদেরকে পায়ে দড়ি বেঁধে বুলিয়ে রাখা হতো। যে তরুণীদের রাখা হয়েছে ভোগের জন্যে তাদেরকে এভাবে বুলিয়ে রাখার পেছনের যুক্তি আমার কাছে পরিষ্কার না। তারপরেও ধরে নিলাম। তাই করা হয়েছে। যা আমার কাছে একেবারেই গ্রহণযোগ্য না। তা হলো সাক্ষ্যদানকারী বলছেন এইসব তরুণীদের সঙ্গে বই-খাতা-কলম ছিল। অর্থাৎ স্কুল বা কলেজে যাবার পথে তাদের ধরা হয়েছে। যে ভয়ঙ্কর সময়ের কথা বলা হচ্ছে সে-সময় স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটি সবই বন্ধ। বইখাতা নিয়ে কারো বাইরে যাবার প্রশ্নই উঠে না। আমার ধারণা সাক্ষ্যপ্রমাণমূলক তথ্যগুলি ভালোমতো যাচাই করা হয় নি। তাছাড়া জাতিগতভাবেও আমরা অতিকথন পছন্দ করি।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর কার্যক্রম ছোট করে দেখানোর একটি প্রবণতাও আমাদের আছে। মুক্তিযুদ্ধে দেশের সব শ্রেনীপেশার মানুষের যেমন অবদান আছে, ভারতীয় বাহিনীর অবদানও নেহাতই কম নয়। এইসব অতিকথন বা কাল্পনিক মুক্তিযুদ্ধের বাইরে যেয়ে কিছু চরিত্র উপন্যাসের স্বার্থে রচনা করে মুক্তিযুদ্ধের একটা বাস্তব চিত্রই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন হুমায়ুন আহমেদ এবং বেশ জোর গলায় বলতে পারছি তিনি সফল। উপন্যাস আসমানী কিতাব না৷ আর হুমায়ুন আহমেদ উপন্যাসতো আপনাদের মতে মোটেই না। ভুল ভ্রান্তি থাকবেই। তবে জোসনা ও জননীর গল্প আমাদের মুক্তিযুদ্ধের গল্প, আমাদের গল্প।
বইটি অবশ্যই পাঠকের ভালো লাগবে৷
ধন্যবাদ।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর কার্যক্রম ছোট করে দেখানোর একটি প্রবণতাও আমাদের আছে। মুক্তিযুদ্ধে দেশের সব শ্রেনীপেশার মানুষের যেমন অবদান আছে, ভারতীয় বাহিনীর অবদানও নেহাতই কম নয়। এইসব অতিকথন বা কাল্পনিক মুক্তিযুদ্ধের বাইরে যেয়ে কিছু চরিত্র উপন্যাসের স্বার্থে রচনা করে মুক্তিযুদ্ধের একটা বাস্তব চিত্রই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন হুমায়ুন আহমেদ এবং বেশ জোর গলায় বলতে পারছি তিনি সফল। উপন্যাস আসমানী কিতাব না৷ আর হুমায়ুন আহমেদ উপন্যাসতো আপনাদের মতে মোটেই না। ভুল ভ্রান্তি থাকবেই। তবে জোসনা ও জননীর গল্প আমাদের মুক্তিযুদ্ধের গল্প, আমাদের গল্প।
বইটি অবশ্যই পাঠকের ভালো লাগবে৷
ধন্যবাদ।
Review Writer: Asif Upol