পরীক্ষার হলে মাথা ঠান্ডা রেখে লেখার জন্য কিছু সাধারন টিপস



পরীক্ষায় ঠান্ডা মাথায় লিখতে পারার জন্য আগের রাতে একটা ভাল ঘুম প্রয়োজন। অনেকে পরীক্ষার আগের দিন সারারাত জাগে বা অনেক রাত পর্যন্ত জাগে, এটা একেবারেই অনুচিত। সাইকোলজি বলে, আমরা যখন কোন ইনফরমেশন মাথায় নেই, তারপরপরই যদি একটা ভাল ঘুম দেয়া যায় তাহলে সেটা আমাদের মেমরিতে বেশি স্থায়ী হয়।

দ্বিতীয়ত, পরীক্ষার হলে যাওয়ার যাস্ট আগে টেনশন হবে এটাই স্বাভাবিক, বিশেষ করে প্রথম দিন সবচেয়ে বেশি টেনশন হয়। এই স্বাভাবিক জিনিস নিয়ে ঘাবড়ানোর কিছুই নাই। সাইকোলজির মতে, স্ট্রেস মানেই খারাপ না, একটা নির্দিষ্ট পরিমান স্ট্রেস বরং আমাদের সবার জীবনেই থাকা প্রয়োজন। পরীক্ষার ক্ষেত্রে এই নির্দিষ্ট মাত্রা ক্রস করে তখনই যখন কারো প্রিপারেশন খারাপ থাকে। এখন এই প্রিপারেশন তো আসলে একদিনের ব্যাপার না। এটা অনেক দিনের ফলাফল। সারাবছর না পরে পরীক্ষার একদিন আগে পড়ে বিশাল কিছু করে ফেলা যেমন সম্ভব নয়, তেমন সারাবছর পড়াশুনা করে পরীক্ষার আগের দিন একটু কম পড়ে রেজাল্ট খারাপ হওয়াও সম্ভব না। কারন পরীক্ষায় আমরা যা লিখি সেটা আমাদের রেসিডুয়াল নলেজ থেকে লেখা হয়, যেটা কিনা অনেক দিনের চর্চার ফল।

আর হলে বসে যেটা করনীয় সেটা হল, অবশ্যই অবশ্যই অবশ্যই প্রশ্নপত্র পাওয়ার পর সময় ভাগ করে লেখা শুরু করা। অর্থাৎ প্রতিটা প্রশ্ন কতক্ষন ধরে লেখা হবে সেটা শুরুতেই ঠিক করা এবং সেই সময় অনুযায়ী লেখা। কোনভাবেই একটা প্রশ্ন ১০ মিনিট ধরে লিখে আরেকটা সময়ের অভাবে তিন মিনিট লিখলে পরীক্ষার নাম্বার খুব ভাল আশা করা যাবেনা। আর কোন প্রশ্ন কখনোই ছাড়া যাবেনা। মনে রাখতে হবে, পরীক্ষা মানে আমি কতটা জানি সেটা জাহির করা না, পরীক্ষা মানে আমি স্বল্প সময়ে, স্বল্প কথায় মূল বক্তব্য গুছিয়ে লিখতে পারি কিনা সেটা। 

আরেকটা খুব গুরুত্বপূর্ন বিষয় হচ্ছে হাতের লেখা সুন্দর না হলেও অসুবিধা নেই, শুধু যেন পরিষ্কার হয়, যেন স্যাররা খুব সহজেই পড়তে পারেন। কারন মনে রাখতে প্রয়োজন, স্যারদের আসলে এত টাইম থাকেনা এত এত খাতার প্রত্যেকটা ধরে ধরে খুটিয়ে খুটিয়ে পড়া। স্যাররা গ্রসলি প্রতিটা উত্তরে চোখ বুলিয়ে যান। এখন কোনো খাতা দেখতে গিয়ে যদি স্যারের চোখের আরাম না হয়, স্টুডেন্ট কী লিখেছে সেটা বুঝতে অনেক সময় লেগে যায় তখন স্যারের মেজাজ খারাপ হয়ে যাবে এবং অবধারিতভাবে নাম্বার কম আসবে।

আমাকে বলা হয়েছিল পরীক্ষার হলে টেনশন কমিয়ে, ভয় না পেয়ে, ঠান্ডা মাথায় কিভাবে লেখা যায় সেটা নিয়ে একটা পোস্ট লিখতে, তাই এই লেখা। এখানে যেগুলো লিখেছি এগুলোর সামান্যই বৈজ্ঞানিক, বেশিরভাগই অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান। কারন আমি নিজে একসময় মেডিকেল কলেজের লেকচারার ছিলাম এবং স্টুডেন্ট থাকাকালীন টিচারদের যে বিষয়গুলো বুঝতামনা, টিচার হওয়ার পর সেগুলো অনেকটাই বুঝলাম। সেই অভিজ্ঞতাই শেয়ার করলাম যাস্ট। পরীক্ষার্থীদের সবাইকে অনেক অনেক শুভকামনা। 🧡

Dr. Mahabuba Rahman

Resident, Child & Adolescent Psychiatry, BSMMU.

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form