পরিচিতি: কেশরাজ একটা অত্যন্ত উপকারী ঔষধি গাছ। কেশরাজ উদ্ভিদের উপকারিতা হিসাবে পাতা, কাণ্ড, ফুল ও ফল ব্যবহার করা হয়। এই গাছ থেকে কালো একধরনের রং বের করা হয়, যা চুল কে আরো কালো করতে সাহায্য করে। এছাড়া এই গাছের রস চুল পড়াবন্ধ করে। এই কেশরাজ গাছকে অনেকে আবার কেসুতি নামে চেনে। আমাদের দেশে অনেকেই আছে যারা এই কেশরাজ উদ্ভিদটি চেনে না। এর শাখা লতানো। এর শাখা থেকে প্রশাখা বের হয়। শাখা বা প্রশাখা বের হয় বিপরীতভাবে। কেশরাজের পাতা খুবই ছোট গাঢ় সবুজ রঙের। কেশরাজের ফুল সাদা রঙের। অনেকগুলো সাদা সাদা রঙের পরাগনালী। ফল গাঢ় সবুজ প্লটের মতো। ফলের ভেতরে থাকে অতি ক্ষুদ্র বীজ। বীজের খোসা শুকোনো মাটির মতো হয়।
➢ উদ্ভিদটি জাল দিয়ে নির্যাস তৈরী করে মায়োকার্ডিয়াল ডিপ্রেস্যান্ট ও হাইপোটেনসিভ এবং কয়েকটি পাতা বেটে খেলে কৃমি ও কাশি কম হয়।
➢ পাতা, ফুল ও ফলসহ বেটে রস তৈরী করে নিয়মিত কিছুদিন মাথায় দিলে মাথা ঠাণ্ডা হবে, চুল পড়া বন্ধ হবে, চুল লম্বা ও কালো হবে। প্রতিদিন রস সংগ্রহ করা না গেলে এক কাপ রস তৈরী করে ২৫০ মিলিলিটার তিল তেল বা নারকেল তেল মিশিয়ে ব্যবহার করলেও উপকার পাওয়া যাবে।
➢ শরীরের কেটে যাওয়া স্থানে কেশরাজের পাতা বেটে পেস্ট বানিয়ে লাগালে সঙ্গে সঙ্গে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে কাটা স্থানের ক্ষত শুকিয়ে যায়। কেশরাজকে ভেষজ উদ্ভিদ বলা যায়। চুলের জন্য বেশি উপকারি বলে একে কেশরাজ বলা হয়। এছাড়া এই গাছের রস চুল পড়াবন্ধ করে। এই গাছ থেকে কালো একধরনের রং বের করা হয়, যা চুল কে আরো কালো করতে সাহায্য করে।
➢ উকুননাশক: কেশরাজের পাতার রস চুলের গোড়ায় লাগান। এরপর একটি পাতলা কাপড় মাথায় পেঁচিয়ে রাখুন। এক ঘণ্টা পর চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত দু বার এটা করুন। এক মাসের মধ্য উকুনমুক্ত হবে।
➢ ক্যান্সার: ইথনোফার্মাকোলজি পত্রিকার জার্নাল স্টাডিজ দেখায় যে কেশরাজ ক্যান্সার কোষগুলিকে মেরে ফেলতে সক্ষম।
➢ লিভার ও কিডনী ক্ষতিরোধ করে: লিভারের সুরক্ষায় কেশরাজে বিদ্যমান অ্যামিডোপাইরিন এন-ডিমথাইলিন গ্লুকোজ-৬ ফসফেটের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ করে লিভার এ্যাবসেস, লিভার সিরোসিস, লিভারের প্রদাহ, জন্ডিস দূর করতে সাহায্য করে। লিভার টনিক হিসেবে কাজ করে।
➢ নিরাপদ কীটনাশক: কেশরাজ পরিবেশে কোনও প্রতিকূল প্রভাব ছাড়াই মশার লার্ভা প্রসারণ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। দু চা চামচ কেশরাজ এর কাঁচা রস ৫০০ এম এল পানির সাথে মিশিয়ে আপনার ঘরের ভিতর/বাহিরে স্প্রে করে মশার আক্রমন হতে রক্ষা পাবেন।
➢ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে: নিয়মিত ২ চা চামচ পরিমাণ কেশরাজের রস সেবন করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। কেশরাজের রস ব্লাড সুগার লেভেল কমায় ও লিভারের এর কার্যকারিতা বাড়ায়।
➢ মহিলারা শ্বেত প্রদরের শিকার হলে প্রায়ই মাথার চুল উঠে যায়, সে ক্ষেত্রে পাতা সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে দিনে দুইবার মাথা ধুলে ৩/৪ দিনের মধ্যে ফল পাওয়া যাবে।
➢ পায়োরিয়া হলে কেশরাজ পাতা গুঁড়া করে মাজনের মতো ২/৪ মিনিট ব্যবহার করলে পায়োরিয়া সেরে যায়। এ ছাড়াও এতে মাঢ়ী শক্ত হয় এবং মাড়ীতে কোনো ঘা থাকলে কেশরাজ পাতার ক্বাথ দিয়ে কয়েকদিন মুখ ধুলে সেরে যায়।
➢ যকৃৎ ও পল্গীহা বৃদ্ধিজনিত রোগ, জন্ডিস, ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য ও ক্ষতস্থানের জীবাণুনাশক হিসেবে এ গাছের বহুমুখী ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। চর্মরোগে শিকড় বা মূলের মিহিচূর্ণ বাহ্যিকভাবে ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়।