ব্রাউজারে কোনো লিংকে ক্লিক করলে, সেই লিংকের ওয়েবসাইটটি জানে আপনার ডিভাইসে কী সেন্ড করতে হবে। সাইট থেকে প্যাকেট সেন্ড করা হয় আপনার কাছে, সেটা অন্য কাউকে বা প্রতিবেশিকেও সেন্ড করবে না কারণ ওয়েবসাইটটা আপনার আইপি এড্রেস সম্পর্কে অবগত যেটা অনেকটা চিঠির মতো কাজ করে। IP এড্রেস মডেম এর জন্য নির্ধারিত থাকে, ডেটা সেই আইপি এড্রেস খেয়াল করে আসে। তবে বর্তমানে প্রায় সবারই রাউটারের সাথে অনেকগুলো ডিভাইস সংযুক্ত থাকে, ওয়্যারলেস বা ল্যান দুই ভাবেই। স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ, কম্পিউটার সহ আরও অনেক ডিভাইস প্রায় একই সময়ে চালানো হয়ে থাকে। তাহলে রাউটার কীভাবে জানে ডেটা নির্দিষ্ট কোন ডিভাইসে সেন্ড করতে হবে, সেটা আপনার না আপনার আব্বু-আম্মুর ফোনে
এখানেই আসে MAC address এর কাজ। প্রতিটা ডিভাইসে Network interface card বা NIC থাকে, যার হার্ডওয়্যার এড্রেস হলো এই MAC এড্রেস। IP এড্রেস যেখানে TCP বা নেটওয়ার্ক সফটওয়্যারের সাথে সংযুক্ত থাকে, আর MAC এড্রেস নেটওয়ার্ক এডাপ্টারের হার্ডওয়্যারের সাথে সম্পর্কযুক্ত। আসুন জেনে নেই MAC এড্রেস আসলেই কী?
MAC এড্রেস জানার সাথে IP সম্পর্কে ধারণ থাকা জরুরি। এখানে IP Address সম্পর্কে পড়ুন।
MAC Address:
MAC এ্ড্রেস হলো ইউনিক ৪৮-বিটের হার্ডওয়্যার নম্বর, যা NIC তৈরী করার সময় প্রদান করা হয়। স্ট্যান্ডার্ড IEEE 802 এ, ডেটা লিংক স্তর প্রাথমিকভাবে দুই স্তরে বিভক্ত হয়-
- Logical Link Control (LLC) Sublayer.
- Media Access Control (MAC) Sublayer.
MAC এড্রেস ডেটা লিংক স্তরের Media Access Control (MAC) ব্যবহার করে। MAC এড্রেস পৃথিবীর প্রতিটা ডিভাইসের ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র। মিলিয়ন মিলিয়ন নেটওয়ার্ক ডিভাইস প্রচলিত আছে, সেজন্য প্রতিটা ডিভাইস স্বতন্ত্রভাবে শনাক্ত করা জরুরী।
MAC এড্রেস মূলত ১২ ডিজিটের হেক্সাডেসিমেল নম্বর (৬ বাইট বাইনারি নম্বর), যার বেশিরভাগ কোলন-হেক্সাডেসিমেল চিহ্ন দিয়ে প্রকাশ করা হয়। MAC এড্রেসের প্রথম ছয় ডিজিট ডিভাইস প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান শনাক্ত করার জন্য, যাকে OUI (Organization Unique Identifier) বলা হয়। IEEE Registration Authoritiy Committee ডিভাইস প্রস্ততকারক প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট এই অংশটি দিয়ে থাকে।
কয়েকটা প্রচলিত কোম্পানির প্রথম ছয় ডিজিট-
CC:46:D6 - Cisco
3C:5A:B4 - Google, Inc.
3C:D9:2B - Hewlett Packard
00:9A:CD - HUAWEI TECHNOLOGIES CO.,LTD
পরের ছয় ডিজিট Network Interface Controller -কে বোঝায়, যেটা প্রস্ততকারী প্রতিষ্ঠান দিয়ে থাকে।
📷
ওপরে বলা MAC. এড্রেসে কোলন-হেক্সাডেসিমেল চিহ্ন বাদেও হাইপেন, Period-separated চিহ্ন ব্যবহার করা হয়।
📷
ডিভাইসের নির্দিষ্ট MAC এড্রেস খোঁজার উপায়-
অপারেটিং সিস্টেম কমান্ড-
UNIX/Linux - ifconfig -a
ip link list
ip address show
Windows OS - ipconfig /all
MacOS - TCP/IP Control Panel
Andriod- Setting> My device> All specs> Status.
Ios- setting> General > about > wifi address.
MAC এড্রেসও বিভিন্ন ধরণের হতে পারে-
Unicast-
ইউনিকাস্ট এড্রেস ফ্রেমে ইন্টারফেস (রাউটার) থেকে তথ্য শুধু নির্দিষ্ট NIC -তে প্রেরণ করা হয়। MAC এড্রেস ইউনিকাস্ট এর একমাত্র মাধ্যম।
Multicast-
মাল্টিকাস্ট এড্রেস নির্দিষ্ট গ্রুপের ডিভাইসের তথ্য প্রেরণে সহায়তা করে।
এখানে প্রথম আটটি নম্বর একই রাখা হয়, বাকিগুলো ডিভাইস অনুযায়ী।
Broadcast-
ব্রডকাস্টে নেটওয়ার্কের প্রতিটা ডিভাইসে একই তথ্য প্রেরণ করা হয়। এক্ষেত্রে প্রতিটা ডিভাইসের MAC এড্রেস, ব্রডকাস্ট এড্রেস (FF-FF-FF-FF-FF-FF) হিসেবে হিসেবে কাজ করে। কোনো ডিভাইস নেটওয়ার্কের প্রতিটা ডিভাইসে তথ্য পাঠাতে চাইলে, এই এড্রেসকে ম্যাক এড্রেস হিসেবে ব্যবহার করে।
MAC এড্রেস দিয়ে রাউটারে ইউজার ব্লক:
MAC এড্রেস স্বতন্ত্র একটা নম্বর। তাই অনেক রাউটারে wireless Mac filtering আলাদা অপশন থাকে।
এখানে ওপরে বলা পদ্ধতি অনুসরণ করে MAC এড্রেসটি রাইটারে অ্যাড করলে, সেই ডিভাইস বাদে অন্য কোনো ডিভাইস রাউটারে কানেক্টেড হতে পারবে না। সর্বোচ্চ ডিভাইস সংখ্যা রাউটারের ওপর নির্ভর করে।
এবং কেউ রাউটারের পাসওয়ার্ড পেয়ে গেলেও ইন্টারনেট সংযোগ পাবে না। কারণ রাউটারে তার ডিভাইসের ম্যাক এড্রেস সেভ নেই।
এভাবে রাউটারে ইউজার সংখ্যার লিমিট ও সুরক্ষার মান বাড়ানো যায়।
সোর্স:
Writer: Rownok Shahriar
Tags:
Technology