“হিসাববিজ্ঞান নীতিমালা” এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং মোটামুটি কঠিন একটি টপিক, কারণ মনে রাখা কঠিন। এই টপিক থেকে প্রতিবছর এডমিশন এক্সামে ২-৩ প্রশ্ন থাকেই। তাহলে বুঝতেই পারছো।
চলো তাহলে সহজভাবে শিখে নেই। একটু বড় কিন্তু ধৈর্যসহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ে বুঝে নিতে পারলে আর কোন সমস্যা থাকবে না আশা করি।চলো শুরু করা যায় তাহলে..
♻আর্থিক মূল্যের একক ধারণাঃ
হিসাববিজ্ঞানে শুধু ঐ সমস্ত ঘটনা লিপিবদ্ধ করতে হবে যেগুলো অর্থের মূল্যে পরিমাপ করা যায়।
যেমনঃ রহিমের নিকট থেকে পন্য ক্রয় ২,০০০ টাকা এবং বন্ধুর জন্মদিনে উপহার প্রদান ৩,০০০ টাকা। এখানে দুটিই ঘটনা কিন্তু প্রথম ঘটনাটি ব্যবসায়ীক উদ্দেশ্যে এবং তা অর্থের মূল্যে পরিমাপ করা যায় কিন্তু দ্বিতীয় ঘটনায় বন্ধুত্বটা মূখ্য তা অর্থের মূল্যে পরিমাপ করা যায় না। তাই প্রথম ঘটনাই লেনদেন যা লিপিবদ্ধ হবে।
▪এটাকে হিসাববিজ্ঞানের মৌলিক ধারণা বলা হয়।
▪ এই নীতির দুইটি সীমাবদ্ধতা রয়েছেঃ
১. অর্থ হলো ঘটনা পরিমাপের অস্থিতিশীল মাপকাঠি। কেননা অর্থের ক্রয় ক্ষমতা স্থিতিশীল নয়, তা পরিবর্তনশীল।
২. ব্যবসায়ে এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে, যা অর্থের দ্বারা পরিমাপ করা যায় না।
♻ব্যবসায় স্বত্ত্বা ধারণাঃ
মনে করো মি.X এবং মি. Y দুজন বন্ধু....তারা পরস্পর দুজন বন্ধু হলেও দুজনই কিন্তু আলাদা ব্যক্তিস্বত্ত্ব ার অধিকারী.....তার া দুজনই আলাদা আলাদা হিসাব রাখে...মনে করো মি.X বাজার থেকে ১০০ টাকার আম কিনছে...কিন্তু সেটা মি. X এর বইয়ে খরচ হিসেবে না দেখিয়ে মি. Y এর বইতে দেখানো হলো,যা সম্পূর্ণ ভুল....যার খরচ তার বইতেই দেখাতে হবে।এখন মি.Y কে তোমার ব্যবসায় প্রতিস্ঠান হিসেবে চিন্তা করো....তোমার ব্যবসায় প্রতিস্ঠান আর তুমি সম্পূর্ণ আলাদা স্বত্ত্বার অধিকারী...ব্যবস ায়ের কোনো আয় বা ব্যয় তুমি তোমার ব্যক্তিগত আয়/ব্যয় হিসেবে দেখাতে পারবেনা এবং ব্যক্তিগত আয়/ব্যয়কেও ব্যবসায়ের আয়/ব্যয় হিসেবে দেখাতে পারবেনা।এটাই এই নীতির মূল কথা...এই নীতির উপর ভিত্তি করেই হিসাববিজ্ঞানের মৌলিক সমীকরণ A = L+E প্রতিস্ঠিত।এই নীতি অনুসারে উত্তোলনকে মূলধন থেকে বাদ দেওয়া হয়।
♻চলমান প্রতিস্ঠান ধারণাঃ
এই নীতি অনুসারে মনে করা হয় যে ব্যবসায় প্রতিস্ঠান অনন্তকাল ধরে চলবে,কখনো বিলুপ্ত হবেনা।এই নীতি অনুসারে বার্ষিক অবচয় ধার্য করা হয়,সম্পদ এবং দায়কে চলতি/স্থায়ী হিসেবে শ্রেণিবিভাগ করা হয় এবং আর্থিক অবস্থার বিবরণী তৈরী করা হয়।
♻হিসাবকাল ধারণাঃ
চলমান প্রতিস্ঠান নীতি অনুসারে মনে করা একটি ব্যবসায় প্রতিস্ঠান অনন্তকাল ধরে চলবে....মনে করো একটা ব্যবসায় প্রতিস্ঠান ১০০ বছর চলবে। এখন যদি সেই প্রতিস্ঠানের হিসাব-নিকাশ ১০০ বছর পর করো তাহলে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হবে....ব্যবসায়ে র বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য একটা নির্দিষ্ট সময় পর পর (৬ মাস/১ বছর) ব্যবসায়ের মোট লাভ,নীট লাভ,মোট সম্পদ,মোট দায় ইত্যাদি জানার প্রয়োজন পড়ে....এজন্য ব্যবসায়ের অনন্ত জীবনকে কতকগুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র (৩ মাস/৬ মাস/১ বছর) হিসাব বছরে ভাগ করে আর্থিক বিবরণীসমূহ প্রস্তুত করা হয়।এটাই এই নীতির মূলকথা। এই নীতি অনুযায়ী সমন্বয় এবং সমাপণী দাখিলা দেওয়া হয়।এই নীতি কাজ করে মুনাফাজাতীয় লেনদেন নিয়ে।
▪উল্লেখ্য আর্থিক বিবরণীগুলোর মধ্যে বিশদ আয় বিবরণী,রক্ষিত আয় বিবরণী প্রস্তুত করা হয় হিসাবকাল ধারণা অনুযায়ী আর আর্থিক অবস্থার বিবরণী(উদ্বৃত্ত পত্র) তৈরী করা হয় চলমান প্রতিস্ঠান ধারণা অনুযায়ী।
♻ ঐতিহাসিক ব্যয় নীতিঃ
মনে করো ব্যবসায়ের জন্য আমেরিকা থেকে ৫,০০,০০০ টাকায় একটি যন্ত্র কেনা হলো...সেটিকে চিটাগং বন্দরে জাহাজে করে নিয়া আসার জন্য জাহাজ ভাড়া দেওয়া হলো ২০,০০০ টাকা....বন্দরে ডক চার্জ দিতে হলো ২,০০০ টাকা...এরপর যন্ত্রটিকে ঢাকায় নিয়ে আসার জন্য ট্রাক ভাড়া দেওয়া হলো ৫,০০০ টাকা....যন্ত্রট িকে ব্যবসায় প্রতিস্ঠানে নির্দিষ্ট জায়গায় স্থাপন করার জন্য সংস্থাপন ব্যয় হিসবে প্রদান করা হলো ৩,০০০ টাকা.....তাহলে যন্ত্রটির অর্জনমূল্য হবে
( ৫,০০,০০০+২০,০০০ +২,০০০+৫,০০০+৩, ০০০) = ৫,৩০,০০০ টাকা.....ঐতিহাস িক ব্যয় নীতির মূলকথা হচ্ছে কোনো স্থায়ী সম্পদ অর্জন করতে মোট যত ব্যয় হবে তত টাকা দিয়েই উক্ত সম্পদকে হিসাবভুক্ত করতে হবে,ক্রয়মূল্য দ্বারা হিসাবভুক্ত করা যাবেনা....তাই এখানে যন্ত্রটি ৫,০০,০০০ টাকায় না দেখিয়ে ৫,৩০,০০০ টাকায় দেখাতে হবে।
♻ব্যয় স্বীকৃতি বা মিলকরণ নীতিঃ
মনো করো তুমি ২০১৭ সালে তোমার প্রতিস্ঠানের হিসাব করতেছো এবং তোমার অফিসের ভাড়া বাবদ ২০১৭ তে প্রদান করেছো ১০,০০০ টাকা যার মধ্যে ২০১৮ সালের ভাড়া বাবদ অগ্রিম ২,০০০ টাকা অন্তর্ভুক্ত আছে....এই বছর ভাড়া বকেয়া আছে ৫,০০০ টাকা। তাহলে ২০১৭ সালের আসল ব্যয় কত হবে? আসল ব্যয় হবে নিম্নরূপ :
প্রদত্ত ভাড়া + বকেয়া - অগ্রিম (১০,০০০+৫০০০-২, ০০০) = ১৩,০০০ টাকা.....অগ্রিম ভাড়া টা বাদ দিয়ে দেওয়া হল কারণ এটা এই বছরের খরচ না...বকেয়া যোগ করা হলো কারণ এটা এই বছরেরই খরচ যা এখনো প্রদান করা হয়নি বা বকেয়া রয়েছে। মিলকরণ নীতির মূলকথা হলো কোনো হিসাবকালে ঠিক যতটুকু ব্যয় হয় ততটুকুই দেখাতে হবে....এক হিসাবকালের ব্যয় অন্য হিসাবকালে দেখানো যাবেনা। এজন্যই বকেয়া ব্যয় যোগ করা হয় আর অগ্রিম ব্যয় বাদ দেওয়া হয়।
▪এই নীতি অনুযায়ী বার্ষিক অবচয় হিসাবভুক্ত করা হয়
▪অনাদায়ী পাওনা চার্জ করা হয়
▪যে হিসাবকালে ব্যয় সংঘটিত হয়(নগদে বা ধারে যেটাই হোক) সেই হিসাবকালেই দেখাতে হয়
▪হিসাব কাল ধারণার উপর প্রতিস্ঠিত
▪ব্যবসায়ের আয় অর্জনের জন্য যতটুকু ব্যয় হত ঠিক ততটুকুই আয়ের সাথে সমন্বয় করা হয়
♻আয় স্বীকৃতি নীতিঃ
এটাও ব্যয় স্বীকৃতি নীতির অনুরূপ.....যে হিসাবকালের আয় সেই হিসাবকালেই দেখাতে হয়....এই নীতি অনুযায়ী :
▪বকেয়া আয় যোগ করা হয়
▪অগ্রিম আয় বাদ দেওয়া হয়
▪এটাও হিসাবকাল ধারণার উপর প্রতিস্ঠিত।
♻ পূর্ণ প্রকাশ নীতিঃ
পূর্ণ প্রকাশ নীতির মূলকথা হলো “প্রতিষ্ঠানের সকল গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক তথ্য আর্থিক বিবরণীর সাথে সংযুক্ত আকারে তা হিসাবতথ্যের সকল অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক ব্যবহারকারীদের নিকট তুলে ধরতে হবে”।
যেমনঃ মজুদ পন্যের মূল্যায়ন প্রনালী, বিনিয়োগের বাজারমূল্য, সম্ভাব্য দায় ইত্যাদি নোট আকারে আর্থিক বিবরণীর সাথে সংযুক্ত করতে হবে।
এই নীতির সতর্কতা হলোঃ
১. পূর্ণ প্রকাশ থেকে প্রাপ্ত সুবিধা তার ব্যয়ের চেয়ে বেশি হতে হবে।
২. গোপন তথ্য প্রকাশ থেকে সতর্ক থাকতে হবে।
৩. তথ্য বেশি জটিল করা যাবে না।
♻বস্তুনিষ্ঠতার নীতিঃ
এই নীতির মূলকথা হলো, হিসাবনিকাশের সময় কোন তথ্যটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং কোন তথ্যটি কম গুরুত্বপূর্ণ তা বিচার করেই হিসাবনিকাশ করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় তথ্যের সমাবেশ ঘটানো যাবে না।
▪ছোট ও কম মূল্যের সম্পত্তিকে সম্পত্তি হিসেবে বিবেচনা না করে খরচ হিসেবে দেখানো হয় এই নীতির আলোকে। যেমনঃ মনিহারি ক্রয় করে তা সম্পদ হিসেবে না দেখিয়ে মনিহারি খরচ হিসাবে দেখানো হয়।
▪সঞ্চিতি পদ্ধতির পরিবর্তে সরাসরি অবলোপন পদ্ধতিতে কু-ঋণ অবলোপন করা হয়।
♻রক্ষনশীলতার নীতিঃ
এই নীতি অনুযায়ী, যখন সন্দেহ থাকবে তখন বিকল্প পদ্ধতির মধ্যে এমন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে যে পদ্ধতি সম্পত্তি ও মুনাফা বেশি দেখানো থেকে বিরত রাখবে।
▪সমাপনি মজুদ পন্যের ক্রয়মূল্য ও বাজারমূল্যের মধ্যে যেটি কম তা দেখানো হয় রক্ষনশীলতার নীতির আলোকে।
▪মুনাফা বেশি দেখানো থেকে বিরত থাকা হয় এই নীতির আলোকে।
▪নীট দেনাদার নির্ণয়ে কু-ঋণ ও বাট্টা সঞ্চিতি বাদ দিয়ে দেখানো হয় রক্ষনশীলতার নীতির কারণেই।
▪অবচয় নির্ণয়ের পদ্ধতিগুলোর মধ্যে যে পদ্ধতিতে বেশি অবচয় ধার্য করা হয় (ক্রমহ্রাসমান জের পদ্ধতি, বর্ষসংখ্যার সমষ্টি পদ্ধতি) তা অবলম্বন করা হয় এই নীতির আলোকে।
▪LIFO পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় রক্ষণশীলর নীতির আলোকেই।
এই ছিল হিসাববিজ্ঞান নীতিমালা নিয়ে বিস্তারিত গুছানো একটি পোস্ট
বুঝতে সমস্যা হলে বা কোনপ্রকার প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করে জানাও।
সহযোগিতায়,
মোস্তাকিম মামুন ভাই
Maruf Hossain Munna
Instructor of Accounting
Executive of SILSWA
Department of Marketing
University of Dhaka
চলো তাহলে সহজভাবে শিখে নেই। একটু বড় কিন্তু ধৈর্যসহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ে বুঝে নিতে পারলে আর কোন সমস্যা থাকবে না আশা করি।চলো শুরু করা যায় তাহলে..
♻আর্থিক মূল্যের একক ধারণাঃ
হিসাববিজ্ঞানে শুধু ঐ সমস্ত ঘটনা লিপিবদ্ধ করতে হবে যেগুলো অর্থের মূল্যে পরিমাপ করা যায়।
যেমনঃ রহিমের নিকট থেকে পন্য ক্রয় ২,০০০ টাকা এবং বন্ধুর জন্মদিনে উপহার প্রদান ৩,০০০ টাকা। এখানে দুটিই ঘটনা কিন্তু প্রথম ঘটনাটি ব্যবসায়ীক উদ্দেশ্যে এবং তা অর্থের মূল্যে পরিমাপ করা যায় কিন্তু দ্বিতীয় ঘটনায় বন্ধুত্বটা মূখ্য তা অর্থের মূল্যে পরিমাপ করা যায় না। তাই প্রথম ঘটনাই লেনদেন যা লিপিবদ্ধ হবে।
▪এটাকে হিসাববিজ্ঞানের মৌলিক ধারণা বলা হয়।
▪ এই নীতির দুইটি সীমাবদ্ধতা রয়েছেঃ
১. অর্থ হলো ঘটনা পরিমাপের অস্থিতিশীল মাপকাঠি। কেননা অর্থের ক্রয় ক্ষমতা স্থিতিশীল নয়, তা পরিবর্তনশীল।
২. ব্যবসায়ে এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে, যা অর্থের দ্বারা পরিমাপ করা যায় না।
♻ব্যবসায় স্বত্ত্বা ধারণাঃ
মনে করো মি.X এবং মি. Y দুজন বন্ধু....তারা পরস্পর দুজন বন্ধু হলেও দুজনই কিন্তু আলাদা ব্যক্তিস্বত্ত্ব
♻চলমান প্রতিস্ঠান ধারণাঃ
এই নীতি অনুসারে মনে করা হয় যে ব্যবসায় প্রতিস্ঠান অনন্তকাল ধরে চলবে,কখনো বিলুপ্ত হবেনা।এই নীতি অনুসারে বার্ষিক অবচয় ধার্য করা হয়,সম্পদ এবং দায়কে চলতি/স্থায়ী হিসেবে শ্রেণিবিভাগ করা হয় এবং আর্থিক অবস্থার বিবরণী তৈরী করা হয়।
♻হিসাবকাল ধারণাঃ
চলমান প্রতিস্ঠান নীতি অনুসারে মনে করা একটি ব্যবসায় প্রতিস্ঠান অনন্তকাল ধরে চলবে....মনে করো একটা ব্যবসায় প্রতিস্ঠান ১০০ বছর চলবে। এখন যদি সেই প্রতিস্ঠানের হিসাব-নিকাশ ১০০ বছর পর করো তাহলে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হবে....ব্যবসায়ে
▪উল্লেখ্য আর্থিক বিবরণীগুলোর মধ্যে বিশদ আয় বিবরণী,রক্ষিত আয় বিবরণী প্রস্তুত করা হয় হিসাবকাল ধারণা অনুযায়ী আর আর্থিক অবস্থার বিবরণী(উদ্বৃত্ত
♻ ঐতিহাসিক ব্যয় নীতিঃ
মনে করো ব্যবসায়ের জন্য আমেরিকা থেকে ৫,০০,০০০ টাকায় একটি যন্ত্র কেনা হলো...সেটিকে চিটাগং বন্দরে জাহাজে করে নিয়া আসার জন্য জাহাজ ভাড়া দেওয়া হলো ২০,০০০ টাকা....বন্দরে ডক চার্জ দিতে হলো ২,০০০ টাকা...এরপর যন্ত্রটিকে ঢাকায় নিয়ে আসার জন্য ট্রাক ভাড়া দেওয়া হলো ৫,০০০ টাকা....যন্ত্রট
( ৫,০০,০০০+২০,০০০
♻ব্যয় স্বীকৃতি বা মিলকরণ নীতিঃ
মনো করো তুমি ২০১৭ সালে তোমার প্রতিস্ঠানের হিসাব করতেছো এবং তোমার অফিসের ভাড়া বাবদ ২০১৭ তে প্রদান করেছো ১০,০০০ টাকা যার মধ্যে ২০১৮ সালের ভাড়া বাবদ অগ্রিম ২,০০০ টাকা অন্তর্ভুক্ত আছে....এই বছর ভাড়া বকেয়া আছে ৫,০০০ টাকা। তাহলে ২০১৭ সালের আসল ব্যয় কত হবে? আসল ব্যয় হবে নিম্নরূপ :
প্রদত্ত ভাড়া + বকেয়া - অগ্রিম (১০,০০০+৫০০০-২,
▪এই নীতি অনুযায়ী বার্ষিক অবচয় হিসাবভুক্ত করা হয়
▪অনাদায়ী পাওনা চার্জ করা হয়
▪যে হিসাবকালে ব্যয় সংঘটিত হয়(নগদে বা ধারে যেটাই হোক) সেই হিসাবকালেই দেখাতে হয়
▪হিসাব কাল ধারণার উপর প্রতিস্ঠিত
▪ব্যবসায়ের আয় অর্জনের জন্য যতটুকু ব্যয় হত ঠিক ততটুকুই আয়ের সাথে সমন্বয় করা হয়
♻আয় স্বীকৃতি নীতিঃ
এটাও ব্যয় স্বীকৃতি নীতির অনুরূপ.....যে হিসাবকালের আয় সেই হিসাবকালেই দেখাতে হয়....এই নীতি অনুযায়ী :
▪বকেয়া আয় যোগ করা হয়
▪অগ্রিম আয় বাদ দেওয়া হয়
▪এটাও হিসাবকাল ধারণার উপর প্রতিস্ঠিত।
♻ পূর্ণ প্রকাশ নীতিঃ
পূর্ণ প্রকাশ নীতির মূলকথা হলো “প্রতিষ্ঠানের সকল গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক তথ্য আর্থিক বিবরণীর সাথে সংযুক্ত আকারে তা হিসাবতথ্যের সকল অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক ব্যবহারকারীদের নিকট তুলে ধরতে হবে”।
যেমনঃ মজুদ পন্যের মূল্যায়ন প্রনালী, বিনিয়োগের বাজারমূল্য, সম্ভাব্য দায় ইত্যাদি নোট আকারে আর্থিক বিবরণীর সাথে সংযুক্ত করতে হবে।
এই নীতির সতর্কতা হলোঃ
১. পূর্ণ প্রকাশ থেকে প্রাপ্ত সুবিধা তার ব্যয়ের চেয়ে বেশি হতে হবে।
২. গোপন তথ্য প্রকাশ থেকে সতর্ক থাকতে হবে।
৩. তথ্য বেশি জটিল করা যাবে না।
♻বস্তুনিষ্ঠতার নীতিঃ
এই নীতির মূলকথা হলো, হিসাবনিকাশের সময় কোন তথ্যটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং কোন তথ্যটি কম গুরুত্বপূর্ণ তা বিচার করেই হিসাবনিকাশ করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় তথ্যের সমাবেশ ঘটানো যাবে না।
▪ছোট ও কম মূল্যের সম্পত্তিকে সম্পত্তি হিসেবে বিবেচনা না করে খরচ হিসেবে দেখানো হয় এই নীতির আলোকে। যেমনঃ মনিহারি ক্রয় করে তা সম্পদ হিসেবে না দেখিয়ে মনিহারি খরচ হিসাবে দেখানো হয়।
▪সঞ্চিতি পদ্ধতির পরিবর্তে সরাসরি অবলোপন পদ্ধতিতে কু-ঋণ অবলোপন করা হয়।
♻রক্ষনশীলতার নীতিঃ
এই নীতি অনুযায়ী, যখন সন্দেহ থাকবে তখন বিকল্প পদ্ধতির মধ্যে এমন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে যে পদ্ধতি সম্পত্তি ও মুনাফা বেশি দেখানো থেকে বিরত রাখবে।
▪সমাপনি মজুদ পন্যের ক্রয়মূল্য ও বাজারমূল্যের মধ্যে যেটি কম তা দেখানো হয় রক্ষনশীলতার নীতির আলোকে।
▪মুনাফা বেশি দেখানো থেকে বিরত থাকা হয় এই নীতির আলোকে।
▪নীট দেনাদার নির্ণয়ে কু-ঋণ ও বাট্টা সঞ্চিতি বাদ দিয়ে দেখানো হয় রক্ষনশীলতার নীতির কারণেই।
▪অবচয় নির্ণয়ের পদ্ধতিগুলোর মধ্যে যে পদ্ধতিতে বেশি অবচয় ধার্য করা হয় (ক্রমহ্রাসমান জের পদ্ধতি, বর্ষসংখ্যার সমষ্টি পদ্ধতি) তা অবলম্বন করা হয় এই নীতির আলোকে।
▪LIFO পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় রক্ষণশীলর নীতির আলোকেই।
এই ছিল হিসাববিজ্ঞান নীতিমালা নিয়ে বিস্তারিত গুছানো একটি পোস্ট
বুঝতে সমস্যা হলে বা কোনপ্রকার প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করে জানাও।
সহযোগিতায়,
মোস্তাকিম মামুন ভাই
Maruf Hossain Munna
Instructor of Accounting
Executive of SILSWA
Department of Marketing
University of Dhaka