এলিয়েনের যুদ্ধ


(এক)
পাহাড়ে চূড়ায় একটাই ঘর সেটা হলো মাহিমের। তার দাদা প্রথম এখানে এসে বাড়ী করেছিল। দাদা গাছগাছালী খুব ভালোবাসতেন। তবে তিনি আর এখন নেই। দূরের পথে পারি দিয়েছন। চারিপাশে শুধু সবুজ সবুজ গাছে ভারা। মাহিমের বাবা একটি কারখানায় কাজ করত। কিন্তু একদিন সেখানে আগুন লেগে তার বাবা মারা যায়। মাহিম তার মাকে খুব ভালোবাসে। কিন্তু সে কয়েক দিন ধরে অসুস্থ আছেন। ডাক্তার দেখিয়েছেন কিছুই হয়নি। মাহিম ছোট থেকেই কাঠ কেটে রোজগার করত। এখনও তাই করে সে। প্রতিদিন কাঠ কেটে তা বিক্রি করে যা পায় তাতে তাদের দুজের দিন ভালোভাবেই কেটে যায়। প্রতিদিনের মতোই আজকেও মাহিম কাঠ কাটার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। মা তাকে ডেকে বলল..
মা: বাবা,,, আমার খুব অস্তির অস্তির লাগছে। মনে হয় আমি আর বাঁচতে পারব না।
একথা শুনার সাথে সাথে মাহিম বলে উঠল..
মাহিম: তুমি এসব কথা আর কখনও বলবে না। তুমি চলে গেলে আমার কি হবে? কিছুই হবে নানে। সবই ঠিক হয়ে যাবে। তুমি চিন্তা করো না।
মাহিম এসব কথা বলছিল আর মায়ের হাতটি ধরে কাদছিল। হাঠাৎ করে তার মায়ের হাতটি নরম হয়ে আসলে। মাহিম মায়ের হাতের প্লাস চেক করে একটা চিৎকার দিয়ে বলল...
মাহিম: মা,, মা,, আমায় ছেড়ে তুমি চলে গেলে কেন? আমি কি তোমায় ছাড়া একটা মূহুর্ত সময় থাকতে পারব।
মাহিম তার মাকে জড়িয়ে ধরে কাদছিল। আশে পাশে কোনো বাড়ীও নেই যে তারা এসে মাহিমকে শান্তনা দিবে। কিছুক্ষণ পর মাহিম বুঝতে পারল যত তারাতারি তার মায়ের লাস মাটি দেওয়া যাবে তত তার মায়ের শান্তি হবে। তাই সে একাই একটি কবর গর্ত করে মাটি দিয়ে দিল। কি আর করার ঘরে বসে থেকে মাহিম একা একাই কাদে। অনেক কষ্টে দুই দিন পার হয়ে গেল। মাকে ছাড়া একা একা তার ভালো লাগত না। রাতে সে যখন ঘুমাচ্ছিল তখন তার প্রচন্ড আওয়াজে ঘুম ভেঙ্গে যায়। বাইরের বের হয়ে দেখে তার বাড়ির সামনে একটি তীব্র আলোয় ভরা একটা বড় কিছু রয়েছে। কিছুই বুঝে উঠার আগেই মাহিম অজ্ঞান হয়ে গেল। তারপর আর কিছুই তার মনে নাই।
হঠাৎ করেই তার চোখ খুলে গেল। দেখল কোথায় যেন সে শুয়ে আছে। সে ঘরটির দিকে তাকিয়ে চিন্তা করছিল এতো বড় ঘর মানুষের ত হবার কথা নয়। আবার দেওয়ালে কিছু একটা লেখা আছে। কিন্তু কোন ভাষায় তা সে বুঝতে পারছে না। ঘরের দরজটাও ছিল বিশাল বড়। প্রায় এগারো ফুটের মতো। বাইরের কিছু একটার শব্দ হচ্ছিল। মাহিম দেখল তার মাথার সাথে কিছু একটা লাগানো আছে। সেটা তার মনে হলো একটা সরু তার। তারটি গিয়েছে পাশের ঘরে মনে হলো তার। তার শরীরে একটুও শক্তি নেই যে সে বিছানা থেকে উঠে পালাবে। কিছুক্ষণ পর দরজা দিয়ে কিছু একটা প্রবেশ করল। প্রবেশ করার পর মাহিম তাকে দেখে আবার জ্ঞান হারালো।


(দুই)
আবার যখন তার জ্ঞান ফেরে তখন দেখল ঐ প্রাণীগুলো,,,, প্রাণী বলব কি উদ্ভিদ জানি না,,, তাকে ঘিরে আছে। সে প্রচন্ড ভয় পেল। কি করবে সে বুঝতে পারছিল না। তখন কেউ একজন বলে উঠল....
–: চিন্তা করো না। আমরা তোমার কিছু করব না।
এখন সে তাদের দিকে ভালো করে তাকিয়ে দেখল তাদের মাথার ওপরে গাছের ডাল আর পাতা। সে আরও দেখল তাদের কোনো পা নেই। কিছু একটার ওপর দাড়িয়ে তারা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়া আসা করে। আমাদের মতো তাদেরও দুটি হাত আছে তবে আঙুল আছে মাত্র দুটি। তাদের পাশে অদ্ভুত ধরনের আরেকটি জীব দেখতে পেল সে। এই জীবটিকে দেখতে প্রায় মানুষের মতোই। কিন্তু আকারের দিক থেকে ছোট আর তার কোনো চুল নেই। মাথাটা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই বড়।
তার কিছুক্ষণ পর যার মাথায় তার লাগানো ছিল সে অন্যদেরকে তাদের ভাষায় কিছু একটা বলল। তার কথা শুনে মনে হলো সকলেই একটু হাসল। শুধু মাত্র একজন বাদে। সে হলো ঐ মানুষের মতো দেখতে প্রাণীটা। তারপর সকলেই মাহিমকে একা রেখে চলে গেল। মাহিম কি করবে। সে কিছুই করতে পারছে না। তার পুরো শরীরে একটুও বল নেই।
একটি প্রাণী একটি প্লেটে করে কিছু ভাজা মাছ আনল। বলল...
–: নিন। এটি খেয়ে নিন।
মাহিম: আমি কিছুই খাবো না। আমাকে বাড়ী যেতে দাও। কেন আমায় এখানে নিয়ে আসা হয়েছে?
প্রাণীটি কিছুই না বলে প্লেটটি রেখে চলে গেল।
তার কিছুক্ষণ পরে মানুষের মতো দেখতে ঐ প্রাণী আবার আসল।
–: মাহিম, খেয়ে নেও।
মাহিম: আপনার কারা। আর কেনই বা আমাকে আপনারা এখানে ধরে নিয়ে এসেছেন? আপনি আবার আমার নাম জানলেন কীভাবে?
–: বলছি বলছি। সব বলছি। আগে খেয়ে ত নিন।
মাহিম: আগে বলুন তারপর আমি খাব।
–: আমার নাম চিলু। আমি এই গ্রহের প্রাণী। আপনারা যেভাবে জীবন-যাপন করে ঠিক তেমনি ভাবে আমরাও জীবন-যাপন করি। এক সময় আমরাও এই গ্রহে সুন্দরভাবে জীবন-যাপন করতাম। একদিন আপনার মতোই আমাকেও তারা এভাবেই ধরে নিয়ে গিয়েছিল। তারা যে আপনার মাথার সাথে তারটি লাগিয়েছে সেটি দিয়ে আপনাদের জীবন-যাপনের কলা-কৌশল সকল কিছুই তারা জেনে নিয়েছে। তারপর সেগুলো তারা তাদের মাথায় ট্যানেসফর করে তোমাদের মতোই আচার ব্যবহার এবং ভাষা সকল কিছু শিখে যায়। আমাকেও ধরে নিয়ে যাওয়ার পর আমাদের সকল কিছু তারা জেনে নেয়। আপনি যে প্রাণী বা উদ্ভিদগুলোকে দেখছেন এগুলো হলো তিম্মু গ্রহের প্রাণী। এদেরকে তিম্মুল বলা হয়। এরা শ্বাস-প্রশ্বাস নেয় কার্বন ডাই-অক্সাইড আর ত্যাগ করে অক্সিজেন। এর খাই মাটির রস। যখন তাদের তিম্মু গ্রহের মাটির রস ও CO2 ফুরিয়ে গেল তখন তারা আমাকে ধরে নিয়ে যায়।
মাহিম: কিন্তু কেন? কি করবে তারা?
চিলু: তার আগে কিছু কথা বলে নিয়। আমরা তখন বিজ্ঞানের অপব্যবহার করতাম। এজন্য আমাদের গ্রহ থেকে সকল গাছ প্রায় হারিয়ে গিয়েছিল। তাই CO2 এর পরিমাণও বৃদ্ধি পায়। তার পাশাপাশি আমরা বিভিন্ন ধরনের জ্বালানী ব্যবহার করায় CO2 এর পরিমাণ তার থেকেও বেশি হয়ে যায়। এজন্য আমরা (চিলু নিচু হয়ে একটি মাষ্ক তুলে মাহিমকে দেখাল) এই মাষ্ক ব্যবহার করতাম যা দিয়ে আমরা O2 পরিশোধন করে গ্রহণ করতাম। তিম্মলরা আমাকে তখন বলল,,,, তোমাদের গ্রহের CO2 ও মাটির রস অনেক। এখানে আমাদের অনেক খাবার আছে। তাই আমরা তোমাদের গ্রহটিকে দখল করব। তুমি যদি আমাদের সহায়তা করো তাহলে তুমি বেঁচে যাবে।
আমি প্রথম না বলে দিয়েছিলাম। পরে দেখলাম এদের কাছে অনেক শক্তিশালী অস্ত্র আছে। যেগুলো আমাদরে কারো কাছেই নেই। তাই আমি তাদেরকে সাহায্য করি। তারপর তারা একদিন আমাদের গ্রহটিকে আটক করে। সকলকেই মেরে ফেলে। এখন তাদের মধ্যে থেকে শুধু আমি একাই জীবিত আছি।
মাহিম: তাহলে আমাকে কেন ধরে আনল?
চিলু: তোমাদের অবস্থা এখন প্রায় আমাদের মতোই। তাই তারা এখন তোমাদের গ্রহটিকে আটক করে তাদের বসবাসের অবস্থান বানাতে চায়। তোমার জন্য ভালো হবে এদেরকে সাহায্য করা।
মাহিম তখন একটু ভয় পেল। তাই সে এ সম্পর্কে আর কিছুই বলল না।
মাহিম: কত দিন ধরে তোমাদের গ্রহটিতে এরা রয়েছে।
চিলু: প্রায় একশ হাজার বছর ধরে। এরা খায় একটু বেশি করে। তাই খুব তারাতারিই এখানকার সকল কিছু শেষ হয়ে গেছে।
মাহিম: তাহলে তুমি এতোদিন কিভাবে বেঁচে আছ?


(তিন)
চিলু: এরা হলো উদ্ভিদ-প্রাণী প্রজাতি। এরা গাছ সম্পর্কে যেমন জানে তেমনি প্রাণী সম্পর্কেও ততটাই জানে। কোন গাছের উপকার কি তাও এরা জানে। বিভিন্ন ধরনের গাছ দিয়ে তারা এমন ঔষধ তৈরি করছে যা খেলে অনেক দিন বাঁচা যায়। তাছাড়া এরা তাদের জীবনে শুধু মাত্র একবার একটি সন্তান জম্ম দিতে পারে। তার বেশি জম্ম দিতে পারে না। এদের মধ্যে কোনো পুরুষ মহিলা নাই। সকলেই একই জাতি। জম্মের পর এদের মধ্যে এমন এক ধরনের কোষ থাকে যেগুলো তাদের একবার সন্তান জন্ম দেওয়ার সামর্থ্যতা দান করে। তারপর ঐ কোষগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। এভাবেই এরা জীবন-যাপন করে।
মামিহ: এরা ত অন্য গ্রহেও যেতে পারে। যেখানে CO2 ও মাটিতে রসের পরিমাণ বেশি সেখানে।
চিলু: হুম, অবশ্যই যেতে পারে। কিন্তু তাদের আরেকটি লক্ষ্য আছে। এই বিশ্ব থেকে সকল প্রকার জীব ধ্বংস করে দেওয়া। তাই এরা আস্তে আস্তে একটির পর একটি করে গ্রহে গিয়ে জীবগুলোকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।
মাহিম: তাহলে ত এদেরকে মারা উচিত?
চিলু: কে মারবে এদের? এদের কাছে শক্তিশালী অস্ত্র আছে। আর এরা নিজেদেরকে সব সময় গোপন রাখে।
অনেক কথা হলো এখন খেয়ে নেও ত। পরে আরো অনেক কিছু বলবনে। আর বিকালে তৈরি থেকো আমরা বাইরে ঘুরতে যাবনে।
মাহিম: হুম। ঠিক আছে।
চিলু চলে গেল। মাহিম মাছুগুলো খাচ্ছিল আর ভাবছিল চিলুর সাথে ভালোই বন্ধুত্ব হয়ে গেছে। এই ত প্রথম দিকে আমি ওকে আপনি করে বলছিলাম আবার চিলুও আমাকে আপনি করে বলছিল। কিন্তু শেষের দিক এসে দুজনে দুজনকে তুমি করে ডাকা শুরু করে দিলাম। তখন মাহিমের মনে পড়ল পৃথিবীর কথা। কি কর যায় তিম্মুলদেরকে সাহায্য করব নাকি করব না। তাছাড়াও এই পৃথিবীতে আমার কেউ নাই। পৃথিবী থাকলেই কি আর না থাকলে কি? এখানে আমি অনেক সুখে আর অনেকদিন বেঁচে থাকতে পারব। মাহিম এসকল কথা ভাবছিল। শেষে সে তাদেরকে সাহায্যে করার প্রস্তুতি নিল।
বিকাল হয়ে আসল। চিলু এসে বলল...
চিলু: কি, মাহিম। তৈরি হয়েছ কি না?
মাহিম: হুম। আমি অনেক ভেবে দেখলাম যে তিম্মুলদের সাহায্য করাই আমার জন্য ভালো হবে।
চিলু: তাহলে ত ভালো হবে। আমরা দুজনে একসাথে থাকতে পারব।
চিলুর হাতে আটকানো ঘড়ির মতো দেখতে জিনিসটা দিয়ে হয়ত কাউকে কল করে কিছু একটা বলল।
মাহিম: কাকে কি বলছ?
চিলু: তিম্মুল রাজা পাথি রাজকে বললাম যে তুমি রাজি আছো।
মাহিম: ওও। চলো তাহলে বাইরে যায়।
চিলু: হুম চলো।
মাহিম: দাড়াও দাড়াও আমরা বাইরে গেলে অক্সিজেন পাবো ত?
চিলু: পাবে মানে অসংখ্য পাবে। এখানে এটির একটুকুও অভাব হবে না।
মাহিম: তাহলে চলো।
মাহিম আর চিলু ঘরের বাইরে বের হলো। মাহিম দেখল চারিদিকে শুধু তিম্মুল আর তিম্মুল। হঠাৎ করে একটা চিৎকারের আওয়াজ শুনা গেল। সামনে গিয়ে দেখল একটি তিম্মুল মারা গেছে। তার পাশে তার সন্তানটি বসে কাদছিল।
তখন মাহিমের মায়ের কথা মনে পড়ে যায়।
চিলু: তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেন, মাহিম?
মাহিম: মা হারানোর বেদনা যে কি সেটি আমি জানি। আমার মাও মারা গেছে এই কয়েকদিন আগে। কিন্তু এ কেন মারা গেল?
চিলু: আর দুই তিন দিন পরে যদি এরা CO2 ও রস ভালোভাবে না পায় তাহলে সকলেই মারা যাবে। তখন এদের কোনো ঔষধও কাজে আসবে না।
মাহিম: তাহলে ত এদেরকে যা করার তারাতারি করতে হবে।
ওখানে তাকা তিম্মুলগুলো একে অপরের সাথে তাদের নিজের ভাষায় কথা বলছিল।
মাহিম তাদের কারো কথাই বুঝছিল না।
মামিহ: চিলু। আমি ত এদের কোনো কথাই বুঝছি না।
চিলু: তোমার মাথায় এদের তথ্যগুলো দিতে হবে তহালেই তুমি এদের কথা বুঝতে পারবে।
মাহিম: তাহলে আমাকে দাও। আমিও এদের কাথা সহজেই বুঝতে চাই।
চিলু: না এখন নয়। যখন রাজা পাথি অনুমতি দিবে তখন দেওয়া হবে।
তারপর তারা দুজনে সামনের দিকে যেতে লাগল। এমন সময় চিলু দাড়িয়ে বলল...
চিলু: চলো মাটির নিচে যায়।
মাহিম: কেন? আর কীভাবে মাটির নিচে যাব?
চিলু: টেলিপোর্টেশনের মাধ্যমে। যখন সকলেই এই গ্রহ থেকে চলে যাবে তখন এই গ্রহটিকে ধ্বংস করার জন্য মাটির নিচে একটা বড় বোমা তৈরি করা হয়েছে যা দিয়ে এক নিমিষেই এই গ্রহটিকে ধ্বংস করা যাবে। সেটি তোমাকে দেখানোর জন্য মাটির নিচে নিয়ে যাব।
তমি যাবেনা বুঝি?
মাহিম: না না। যাব। চলো যায়।
চিলু আরো একটু সামনে গিয়ে তার হাতে থাকা ঘড়িতে কিছু একটাতে চাপ দেওয়া সাথে একটা দরজা বেরিয়ে আসল।
চিলু: এই দরজার ভিতর দিয়ে আমরা মাটির নিচে যাবো।
মাহিম: এটার মধ্য দিয়ে?
চিলু: হুম। তারাতারি এসো।
তারপর মাহিম ও চিলু দরজার ভিতরে ডুকল। ডুকার আরোও একটি দরজা দিয়ে ওরা দুজে বেরিয়ে আসল। মাহিম দেখল সেখানে শুধু অসংখ্য হাতিয়ার রাখা আছে।
মাহিম: এগুলো কি অস্ত্র?
চিলু: এগুলো দিয়ে এরা যুদ্ধের কার্যক্রম চালায়। একটি এগিয়ে চলো বোমটি দেখতে পাবে।
সামনে গিয়ে দেখল একটি বিশালাকৃতির বোমা রাখা আছে।
মাহিম ত অবাক এত বড় বোমা এর আগে কখনোও দেখেনি সে।
চিলু: চলো চলো এবার। তারাতারি ওপরে যায়। একবার যদি পাথি রাজা জানতে পারে আমরা নিচে এসেছিলাম তাহলে আমরা অবস্থা শেষ করে দিবে।
মাহিম আর চিলু আবার ঐ দরজার মাধ্যমে উপরে চলে আসল।

(চার)
চিলু: মাহিম চলো তোমাকে আরও একটা গোপন জায়গায় নিয়ে যায়। তবে একথা কাউকে বলা যাবে না।
মাহিমের মাথায় আসছে না কিসের জায়গায় নিয়ে যাবে।
মামিহ: হুম। চলো। কাউকে কিছুই বলব না।
চিলু: চলো তাহলে।
মাহিম: কিন্তু কোথায়?
চিলু: তুমি আমার পিছন পিছন আসো দেখতে পারবে আমরা কোথায় যাচ্ছি।
চিলু সামনে সামনে যেতে লাগল আর মাহিম তাকে অনুসরণ করে চলছিল। এমন সময় চিলু একটা বিশাল বাড়ীতে ডুকল। তারপর হঠাৎ মাহিমকে নিম্মস্বরে বলে ওঠল..
চিলু: তারাতরি এই ঘরটিতে আসো।
মাহিম তার কথা শুনে একটু ভয় পেল আর তারাতারি চিলু আর মাহিম একটা ঘরে ডুকে পড়ল। তারপর চিলু একটা জানালা দিয়ে মাহিমকে বলল, দেখো। মাহিম জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখল পাশের ঘরে একটা তিম্মল রয়েছে।
মাহিম: এ আর কি দেখব। এট ত একটা তিম্মু।
চিলু: হুম, তিম্মুই ত। কিন্তু একে সবাই মাদার তিম্মু বলে। কারণ এরা ত জীবনে একবার শিশু জম্ম দেয়। তারপর আর দিতে পারে না। কোনোভাবে যদি শেষের তিম্মুটা মারা যায় তাহলে আর শিশুর জম্ম হবে না। তাই শেষের তিম্মুটিকে ভালো আর সুরক্ষিত স্থানে রাখা হয়। তারপর যখন এই মাদার তিম্মুটি শিশুর জম্ম দিবে তখন তাকে মুক্তভাবে জীবন-যাবনের জন্য ছেড়ে দেওয়া হবে।
মাহিম: এরা কত দিন পর বাচ্চা দেয়।
চিলু: জম্মের ঠিক দুই দিন পর বাচ্চা দেয়।
তারপর চিলু ঘড়িতে একটা কল আসল। মাহিম দেখল সত্যিই একটা কল আসছে। চিলু কথা বলল।
মাহিম: কে কল দিয়েছে?
চিলু: রাজা পাথি রাজ তোমাকে ডেকেছেন। চলো।
মাহিম: কি জন্য?
চিলু: আর বেশি সময় নেই। যা করার আজ থেকেই শুরু করতে হবে।
মাহিমও বুঝে গেল কি বলতে চাইছে চিলু আর পাথি। তার দুজনে পাথির কাছে গেল।
পাথি: চিলু? এখনও তৈরি হও নি। তারাতারি তৈরি হয়ে নেও। তোমাদের দুজনকে যেতে হবে ত।
চিলু: জি। তাহলে যাচ্ছি।
মাহিম আর চিলু তৈরি হতে বাইরে চলে আসল। মাহিম কিছুই বুঝছিল না।
মাহিম: চিলু? কীসের জন্য তৈরি হতে হবে?
চিলু: তোমাকে না প্রথমেই বলিছিলাম যে তোমাকে এদের সাহায্য করতে হবে।
মাহিম: হুম, বলেছিলে ত। তা কি সাহায্য করতে হবে?
চিলু: আমরা দুজন একসাথে পৃথিবীতে যাবো। তারপর দুজনে মিলে একটা বড় টেলিপোর্টেশন দরজা বানাতে হবে। যেটা দিয়ে তিম্মুরা আসতে পারে। আর তারপর সব কিছুই তিম্মুরা দেখে নেবে।
মাহিম: ওও,,, এই কথা। তা ওরা কেন যাচ্ছে না?
চিলু: তুমি হয়ত লক্ষ্য করেছ যে তিম্মুদের হাতে মাত্র দুটি আঙুল আছে। আর দুই হাতে মোট চারটি আঙুল আছে। দুটি করে আঙুল হওয়ায় এরা ঐ কাজটি করতে অনেক সময় নিবে৷ যার ফলে এদের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। এজন্য তারা আমাদের দুজনকে পাঠাচ্ছে যাতে আমরা সঠিক সময়ের মধ্যে কাজটা করতে পারি।
মাহিম: ওও,,।
চিলু আর মাহিম তৈরি হয়ে রওনা হলো পৃথিবীর দিকে। একটা স্পেস সিপে তারা এক মূহুর্তের মধ্যে পৃথিবীতে এসে পৌছাল। তারা দুজনে ঠিক করল পৃথিবীর যেখানে এখন গভীর রাত সেখানেই তার নামবে। তবে একটু জঙ্গ দেখে নামতে হবে। নয়ত অন্যরা দেখে ফেলতে পারে তাদেরকে। একটা বাড়ীর পাশে দেখল গভীর জঙ্গল। সেখানে তারা দুজনে নামল।
মাহিম: আমাকে কি করতে হবে। আমি ত ঐ দরজাটার বিষয়ে কিছুই জানি না।
চিলু: তোমাকে কিছুই করতে হবে না। তুমি শুধু আমার কথা মতো কাজ করবে। আমি যা আনতে বলব সেটা শুধু এনে দিতো হবে।
মাহিম: ঠিক আছে।
চিলু তার প্রয়োজনীয় কিছু যন্ত্র নিয়ে বসে পড়ল দরজা বানানোর উদ্দেশ্য। মাহিম তার দিকে তাকিয়ে অপেক্ষা করছিল কখন কি চাইবে। দেখতে দেখত ভোর হয়ে আসল। কিছুক্ষণ পর মাহিম দেখল তারা যে বাড়ীর পাশে নামছে সেই বাড়ীর একজন বৃদ্ধা বাইরে বের হয়ে আসল৷ একটা চিয়ারের ওপর বসে বই পড়তে শুরু করল। তার কিছুক্ষণ পর ছোট্ট ছোট্ট কয়েকটা শিশু বাইরে বের হয়ে এসে খেলতে লাগল। কি সুন্দর একটা দৃশ্য। মাহিমের মাথায় তখন আসল কিছুক্ষণ পর ত এদের কেউ ই থাকবে না। সকলে মারা যাবে। এতোও সুন্দর দৃশ্যও আর থাকবে না। মাহিমের সকল সঙ্গীও মারা যাবে। তাকে শুধু একা একা তিম্মুদের সাথে থাকতে হবে। তখন তার মাথায় আসল, এসব করে ত তার কোনো লাভ নেই। বরং সে আরও ক্ষতি করছে। পৃথিবীর সকল মানুষের কাছে সে খারাপ এবং পাপিষ্ঠ ব্যক্তি হয়ে থাকবে। এতও সুন্দর সুন্দর মানুষদেরকে যদি মেরে ফেলে তাহলে ত সে আর কোনো সৌন্দর্য দেখতে পাবে না।
তাই সে ঠিক করল সে আর তিম্মুদের হয়ে কাজ করবে না। সে তিম্মুদের থেকে এই পৃথিবীকে রক্ষা করবে। কিন্তু কি ভাবে সে রক্ষা করবে। এখন যদি সে মানুষের কাছে যেতে চায় তাহলে ত চিলু তাকে দেখে ফেলবে আর সাথে সাথে মাহিমের খেল ক্ষতম করে দিবে। কি করা যায় কি করা যায় মাহিম ভাবছিল।
চিলু: মাহিম এতোও কি ভাবছ?
মাহিম: কই কিছু না ত।
মাহিম তাকিয়ে দেখল দরজারা বানানো প্রায় শেষ।

(পাঁচ)
কিছুক্ষণ পর চিলু বলে উঠল...
চিলু: শেষ শেষ কাজ শেষ। এখন সকল মানুষকে এই পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিতে হবে।
মাহিম কথাটা শুনে ভয় পেল। আর তাকিয়ে দেখল দরজা বানানো হয়ে গেছে। তার মাথায় কিছুই আসছে না কি করে তাদেরকে আটকানো যায়। এমন সময় মাহিমের মাথায় আসল যে চিলু ত তার খুব ভালো বন্ধু হয়ে গেছে। ওকে একবার বলে দেখলে মনে হয় কিছু একটা কাজে দিতে। তবুও বিশ্বাস হয় না মাহিমের। যদি চিলু না মানে তাহলে ত তাকে সাথে সাথে মেরে ফেলবে। কি করবে সে এখন। কিছুই করার নেই৷ এমন সময়...
মাহিম: চিলু? তুমি আমার বন্ধু? তাই নয় কি?
চিলু: হুম, অবশ্যই আমি তোমার বন্ধু। কি হয়েছে?
মাহিম: তাহলে আমার একটা কথা রাখবে?
চিলু: কি কথা?
মাহিম: বন্ধু দেখ আমরা ত তিম্মুদেরকে তাদের এই বিশ্ব রাজত্ব করার জন্য সাহায্য করছি। একদিন ত এরা এমন এক অবস্থায় চলে আসবে যখন এদের শক্তি আরও অনেক হয়ে যাবে। তখন তারা এই বিশ্বে শুধু একাই বাস করবে। আমাদের মতো আর কোনো প্রজাতি আর তখন বেঁচে থাকতে পারবে না।
চিলু: হুম ঠিক বলেছ।
মাহিম: তাহলে দেখো। আমরা দুজনে মিলে কিন্তু তাদেরকে তাদের কাজে সাহায্য করছি। এই বিশ্বের সকলকে যদি তারা মেরে ফেলে তাহলে কিন্তু এর জন্য দায়ি হবে আমরা৷ আমরা তাদের সকল জাতীর কাছে সব সময় নিকৃষ্ট পাপিষ্ঠ হয়ে থাকব। আমরা কি এখন সময় থাকতেই তিম্মুদের বিরুদ্ধে লড়াই করে তাদেরকে মারতে পারি না।
চিলু: হুম বন্ধু তোমার কথাটা আমি বুঝতে পারছি। কিন্তু এখন আর সে সময় নেই। দরজাটা ত বানানো হয়ে গেছে। এখন আর এই দরজাটিকে পৃথিবী থেকে কোনোভাবে তুমি ভাঙ্গতে পারবে না। আর আমিও কিছুক্ষণ আগে তিম্মুদেরকে খবর করে দিয়েছি যে দরজা বানানো হয়ে গেছে। তারা এখন হয়ত তৈরি হচ্ছে এখানে আসার জন্য৷ কিছুক্ষণের মধ্যে তারা এখানে চলে আসবে।
মাহিম: তুমি এটা কি করেছ। এখন কি করা যেতে পারে। এখনই যদি তাদেরকে মারার কাজ না করি তাহলে আমাদের বিশ্ব ত একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে।
মনে হলো চিলুও রাজি হয়ে গেছে তিম্মুদেরকে মারা জন্য। রাজি হবেই না কেন? এদেরকে যদি এখন তারা না মারে তাহলে ত সামনে অনেক অনেক দুঃখ আছে।
চিলু: একটা উপায় আছে। তবে তা এখন কঠিন হয়ে যাবে।
মাহিম: কি উপায় তারাতারি বলো।
চিলু: তিম্মুরা যখন দরজটা দিয়ে বের হতে যাবে তখন আমরা দুজনে মিলে তাদেরকে সম্মুখ থেকে আক্রমণ করব। তাহলে আমরা তাদেরকে একে একে মারতে পারব।
কিছুক্ষণ পর তিম্মুরা একে একে ভিতরে আসতে লাগল। সাথে সাথে চিলু তাদের ওপর গুলি চালাতে লাগল। মাহিম স্পেস সিপে গিয়ে হাতে দুইটা বন্দুক নিয়ে তিম্মুদের ওপর আক্রমণ করল। তিম্মুরা ত অবাক তাদের লোক তাদেরকেই মারছে। কি আর করার। দরজার ভিতরে ডুকার সাথে সাথেই তাদেরকে মারা হচ্ছে। কিছুই করতে পারছে না তিম্মুরা।
এমন সময় দেখা গেল আসে পাশে থেকে অনেক মানুষ হাতে বন্দুক নিয়ে চলে আসল। আক্রমণ করতে লাগল তিম্মুদের ওপর। কিন্তু যতই মারা হয় ততই ত তিম্মু আসছে। ফুরায় না ত। মাহিম ভাবছে৷ কি করা যায় কি করা যায়?
মাহিম: চিলু? এরা ত অনেক এদেরকে আমরা মারার আগেই আমাদের বন্দুকের গুলি শেষ হয়ে যাবে৷ আর ততটা সময়ও নাই যে পৃথিবীর সৈনিকরা এখানে সে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। কিছুক্ষণের মধ্যে আমরা খালি হয়ে যাবো। কি করা যায় এখন?
চিলু: আমার মাতায় কিছুই আসছে না।
মাহিম: ওয়েট এ মিনিট। আমরা যদি তিম্মুদের ঐ গ্রহের মাটির নিচে থাকা বোমাটা কোনোভাবে এখন বিস্ফোরণ করাতে পারি তাহলে ত সকল তিম্মুই মারা যাবে।
চিলু: হুম ঠিক বলছ। সকলেই মারা যাবে।
তখন চিলু তারাতারি গিয়ে তার স্পেস সিপটি নিয়ে আসল। এদিকে আশপাশের অনেক মানুষই চলে এসেছে। তারা বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র নিয়ে লড়াই করছে। মাহিম সিপে ওঠে পড়ল। সিপটি ওপরের দিকে উঠে এক মূহুর্তের মধ্যে ঐ গ্রহে চলে আসল। মাহিম দেখল দরজা বাইরে অসংখ্য তিম্মু দারিয়ে আছে। তারা একে একে দরজা দিয়ে ভিতরে ডুকছে। এমন সময় হঠাৎ সিপের ওপর কেউ একজন গুলি চালাতে লাগল। পিছুনে তাকিয়ে দেখে একজন নয়। তাদের পিছনে অসংখ্য তিম্মু সিপ নিয়ে আক্রমণ করছে।
মাহিম: চিলু,, চিলু!! ঐ দিকে তাকাও। দেখো তারা সিপ নিয়ে ওপরের দিকে যাচ্ছে। এখন কি করব?
চিলু: দারাও এখন আমার পালা। দেখ আমি কি করি।
চিলু সিপের কম্পিউটার দিয়ে কি যেন একটা করল আর সাথে সাথেই মাহিম দেখল গ্রহের ১০ কি মি ওপরের সকল সিপ বিস্ফোরিত হয়ে যাচ্ছে।
মাহিম অনেক আনন্দের সাথে বলল..
মাহিম: কি করলে তুমি? তাদের সিপগুলো ত বিস্ফোরিত হচ্ছে।
চিলু: এই গ্রহের এমন একটা সিকিউরিটি আছে যেটা চালু করে দিলে কোনো সিপ বা কোনো কিছুই গ্রহের ১০ কি মি ওপরে অর্থাৎ বাইরে যেতে পারবে না। যদি যাবার চেষ্টা করে তাহলে তার ফলাফল ত তুমি দেখতেই পারছে।
মাহিম: ওয়াও।
তাদের সিপের পিছনে ত গুলি চলছে ত চুলছে। চিলু অনেক অভিজ্ঞ চালক তাই তারা দুজনে বেঁচে যাচ্ছে বারে বারে। এমন সময় মনে হলো তিম্মুরা বুঝতে পেরে গেছে যে তারা বোমাটা বিস্ফোরণ করানোর জন্য বোমার দিকে যাচ্ছে। তাই তারা বোমার কাছে অনেক অনেক টাইট সিকিউরিটি দিয়ে দিয়েছে। এমন সিকিউরিটি যে সেখানে যাওয়াই অসম্ভব।
মাহিম: বন্ধু এখন উপায় কি?
চিলু: কি হয়েছে বোমার কাছে সিকিউরিটি আছে বোমার কন্ট্রোল ঘরে তেমন সিকিউরিটি থাকে না। আমরা সেখানে যাব এখন।
হায়,, বোমার কন্ট্রোল ঘরের কাছে গিয়ে দেখল সেখানেও ঐ একই রকমের সিকিউরিটি দেওয়া আছে।
চিলু: এবার আর কোনো উপায় নেই বন্ধু। এবার আক্রমণ করতে হবে।
তখন তারা দুজনে মিলে আক্রমণ করল। অনেক গুলাগুলি হলো। অবশেষে দেখল পৃথিবী থেকে ঐ দরজা দিয়ে কিছু বিমান আসল। তাদের সাতে সঙ্গ দিয়ে সেখানে আক্রমণ চালালো। এমন সময় কন্ট্রোল ঘরের সামনে থাকা সকল তিম্মুদেরকে তারা মেরে ফেলল। কন্টোল ঘরে ডুকে চিলু বোমার বিস্ফোরণের সময় ঠিক করে দিল। মনে হলো সে ১ মিনিট সময় দিয়ছে। সাথে সাথে মাহিম অন্যদেরকে বলল, তারাতারি এই গ্রহ থেকে ঐ দরজা দিয়ে বাইরে বের হও সকলে। কথা মতো সকলে গুলি করতে করতে দরজা দিয়ে পৃথিবীতে চলে গেল। মাহিম দরজা দিয়ে দেখল পৃথিবীতে অসংখ্য সৈনিক রয়েছে এখন। তাই আর কোনো তিম্মু দরজা দিয়ে পৃথিবীতে যেতে পারছে না।
চিলু: বন্ধু একটা বড় সমস্যা আছে।
মাহিম: কি?
চিলু: যখন বোমাটা বিস্ফোরিত হবে তখন তার অনেকটাই ঐ দরজা দিয়ে পৃথিবীতে চলে যাবে৷ যেটুকু যাবে তাতে পৃথিবীর প্রায় অনেকটাই ধ্বংস হয়ে যাবে।
এই বোমাটার শক্তি অনেক।
মাহিম: আমরা পৃথিবী থেকে দরজাটিকে বন্ধ করে দিব।
চিলু: তোমকে ত প্রথম ই বলেছিলাম যে পৃথিবী থেকে দরজাকে আর বন্ধ করা যাবে না।
মাহিম: তাহলে উপায় কি এখন?
চিলু: একটা উপায় আছে।
মাহিম: কি কি?
চিলু: পরে বলছি আগে দরজার নিকট চলো বন্ধু।
মাহিম আর চিলু দরজার নিকট গেল। চিলু তার ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল আর মাত্র ১৩ সেকেন্ড সময় আছে। সে তার হাত থেকে ঐ ঘড়িটা খুলে মাহিমকে দিল। আর সিপ থেকে একটা লাফ দিয়ে মাটিতে নামল। মাহিম সিপ চালাতে পারে না। কিন্তু সিপটিকে চলালো সহজ। মুখ দিয়ে সিপকে যা বলা যায় সিপ তাই করে। চিলু তাই তার মুখ দিয়ে সিপকে কন্ট্রোল করছিল।
মাহিম: কি করছ এসব। নিচে নামলে কেন?
চিলু: বিদায় বন্ধু বিদায়।
মাহিম: কেন? তারাতারি ওপরে আসো।
চিলু: বন্ধু দরজাটাকে যদি এই গ্রহ থেকে বন্ধ করে দিয় তাহলে বন্ধ হবে।
মাহিম: তাহলে আমি থাকছি এখানে আমি বন্ধ করে দিবনে।
চিলু মুসকি হাসল।
চিলু: হা,,হ,,হা,,। তুমি এই দরজার বিষয়ে কিছুই জানো না। আর এই কাজটি যদি আমি করি তাহলে আমার কিছু পাপ কমবে হয়ত। কারণ আমি আমার জাতীকে নিজের হাতে ধ্বংস করেছি। পৃথিবীর মানুষ অনেক ভাগ্যবান যে তোমার মতে একজন মানুষ পেয়েছে। চিন্তা করো না বন্ধ এটা আমার পাপের শাস্তি।
মাহিম কিছু বলে ওঠার আগেই সিপ দরজা দিয়ে পৃথিবীতে চলে আসল। আর সাথে সাথে মাহিম চিৎকার করে পিছনে তাকিয়ে দেখল বোমাটা বিস্ফোরিত হতে শুরু করছে। চিলু দরজাটা বন্ধ করে দিল। সাথে সাথে পৃথিবীতে থাকা দরজাটা অদৃশ্য হয়ে গেল। মাহিম ত চিৎকার করে কাদছে৷ এমন বন্ধ কোথায় পাবে সে?
কি আর করার তার আত্মত্যাগের বিনিময়েই ত এখন পৃথিবীর মানুষ বেঁচে আছে।
তারপর বেশ কিছুদিন দিন চলে গেল। এখন মাহিমকে পৃথিবীর হিরো হিসেবে সকলেই চেনে। মাহিম সকলকেই বলেছে যে হিরো সে নয়। চিলুই হলো আসল হিরো। তখন পৃথিবীর মানুষ চিলুকে মনে রাখার জন্য চিলুর মতো দেখতে একটা সুন্দর মূর্তি তৈরি করে। মূর্তিটার উদ্ভবন করে মাহিম। মাহিমকে সরকার অসংখ্য টাকা পয়সা দিতে চেয়েছিল সুন্দর সুন্দর বড় বাড়ীও দিতে চেয়েছিল। কিন্তু মাহিম কোনোটিই নেয় নি। সে আগের মতো তার নিজ বাড়ীতে এসে মায়ে কবরের পাশে বসবাস করতে লাগল।
আর মাঝে মধ্যে মায়ের কবরের পাশে গিয়ে মাকে এবং চিলুকে হারনোর বেদয়া কাদত৷
এভাবেই মাহিমের জীবন চলতে লাগল।
(.....শেষ.....)

Asraful Islam
সদস্য, ব্যাঙের ছাতার বিজ্ঞান   

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form