কমার্স থেকে একইসাথে সি ও ডি ইউনিট প্রিপারেশন নেওয়া ঠিক হবে কি না?

কমার্স থেকে ঢাবিতে 'সি ও ডি' দুটি ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়া যায়। সি ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা হয় পাঁচটি সাবজেক্ট এর উপর৷ বাংলা, ইংলিশ, একাউন্টিং, ম্যানেজমেন্ট, ফিনান্স/
মার্কেটিং এই পাঁচটি সাবজেক্ট পড়তে হয় সি ইউনিটের জন্য। এখানে সীট সংখ্যা ১২৫০। এই ইউনিটে চান্স পেলে কমার্স ব্যাকগ্রাউন্ড এর সাবজেক্ট পাওয়া যায়।
অপরদিকে ডি ইউনিটে কমার্সের জন্য সীট আছে ৪১০টির মতো। এই ইউনিটে চান্স পেলে আর্টস ব্যাকগ্রাউন্ড এর সাবজেক্ট পাওয়া যাবে। এই ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা হয় তিনটি সাবজেক্ট এর উপর। বাংলা, ইংলিশ, সাধারণ জ্ঞান।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে কমার্সের জন্য দুটি ইউনিটেই সীট সংখ্যা অনেক কম। বাস্তবতা এটা যে কমার্সের জন্য সব ভার্সিটিতেই সীট সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এজন্য কমার্স গ্রুপটাকেই দুর্ভাগা গ্রুপ বলা হয়। কারণ সীট সংখ্যা কম হওয়ায় ওয়েটিং থেকে তেমন সাবজেক্ট পাওয়া যায়না। কেউ ই ছাড়তে চায়না। সব জায়গায় ই প্রতিযোগিতা করে চান্স নিতে হয়।
যেহেতু পাবলিক ভার্সিটি একমাত্র লক্ষ্য থাকে সেই হিসেবে ঢাবিই প্রধান চয়েস। কিন্ত সীমিত সীট সংখ্যা হওয়ায় নিশ্চয়তা নেই। তাই সি ইউনিটের বিকল্প হিসেবে ডি ইউনিটের প্রিপারেশন নেওয়া আমি বোকামি মনে করিনা। বরং এটা বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ জাস্ট একটু বাড়তি পরিশ্রমেই বিকল্প একটা সুযোগ থাকে। এখন দেখি কিভাবে বুদ্ধিমানের কাজ।
ঢাবির সি ইউনিটের প্রিপারেশন নিতে হলে বাংলা, ইংলিশ পড়তেই হয়। ডি ইউনিটের জন্য এই বাংলা, ইংলিশই যথেষ্ট। জাস্ট শুধুমাত্র এক্সট্রা হিসেবে জিকে পড়তে হবে। কিন্ত অনেকেই জিকে পড়ার ভয়ে প্রথমদিকে ডি ইউনিট নিয়ে চিন্তা করেনা। ভাবনায় আসে এম্নিতেই পাঁচটা সাবজেক্ট পড়ে আবার জিকে এতোকিছু মনে রাখা সম্ভব না। শেষ পর্যন্ত দেখা যায় সব জায়গায় ব্যর্থ হয়ে শেষ ভরসা হিসেবে ডি ইউনিটে পাড়ি জমায়। কিন্ত যেহেতু আগে থেকে কোন ধারণা থাকেনা তাই ডি ইউনিটে বাংলা, ইংলিশে ভালো করলেও জিকের জন্য ডি ইউনিটে চান্স হয় না। তাই শেষদিকে কেয়ারফুল হলেও সময়ের অভাবে ডি ইউনিটেও ব্যর্থ হতে হয়। তারাই কমার্স থেকে ডি ইউনিটে চান্স পায় যারা আগে থেকে জিকে নিয়ে একটু ধারণা রাখে আর সি ইউনিটের এক্সামের পর জিকেটা ভালো করে পড়ে।
এখন দেখি আগেই কেয়ারফুল হয়ে কিভাবে সি এর পাশাপাশি ডি ইউনিটের প্রস্তুতি নেওয়া যায়। কমার্সের পাঁচটি সাবজেক্ট পড়তে সময় লাগে অনেক। জিকে পড়ার জন্য এর বাইরে একটু বাড়তি সময় বের করতে হবে। প্রথমে সি ইউনিটের জন্যই ভালো করে পড়বে। যদি কোচিং এ সি+ডি ভর্তি হও তাইলে নিয়মিত জিকে ক্লাস করে প্রতিদিন এভারেজ আধা ঘন্টা থেকে একঘন্টা সময় দেও জিকের জন্য তাইলেই অনেক। কোচিং না করলেও সমস্যা নেই। একটা জিকে বই নিয়মিত ঘন্টাখানেক পড়লেই হয়ে যায়। জাস্ট জিকে নিয়ে একটু ধারণা রাখবে। সি ইউনিটের এক্সামের এক মাস পর ডি ইউনিটের এক্সাম হয়। আর এই এক মাস সময়ে জিকেটা ভালো করে পড়লেই ফুল প্রিপারেশন হয়ে যাবে। আর ডি ইউনিটের জিকেটা তেমন কঠিনও না। শেষদিকে প্রশংব্যাংক আর সাম্প্রতিক নিয়ে ঘাটাঘাটি করলেই হয়ে যাবে। কিন্ত আগে থেকে না পড়লে শেষ দিকে মনে রাখা যাবেনা। তাই আগে একটু ধারণা নিয়ে শেষ দিকে পড়লেই হয়ে যাবে। তখন খুব সহজেই বিকল্প হিসেবে ডি ইউনিটে একটা সাবজেক্ট পাওয়ার সুযোগ হবে।
আবার অনেকেই প্রশ্ন করে কমার্সের সাবজেক্ট দুর্বল অনেক। শুধু ডি ইউনিটের প্রিপারেশন নেওয়া ঠিক হবে কি না। তাদের জন্য আসলে সঠিক পথটা খুব কঠিন। কারণ ডি ইউনিটে অল্প সংখ্যক সীট মাত্র। তাই শুধু মাত্র ডি এর জন্য রিস্ক হয়ে যায় খুব। তারপরেও কমার্সের সাবজেক্ট এ বেশি দুর্বল হলে রিস্ক নিয়ে ডি ইউনিটের প্রিপারেশন নিতে পারো।
সর্বশেষ কথা এটাই, কমার্সের জন্য পাবলিক ইউনিভার্সিটি আসলেই অনেক কঠিন। তাই আগে থেকে ডিটারমাইন্ড হয়ে একটু টেকনিক্যালি পড়তে হবে। আর একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে কমার্স থেকে ইংলিশ ছাড়া উপায় নাই। সি ইউনিটে ইংলিশে পাশ করতে পারলেই চান্সের সম্ভাবনা ৯০% আর ডি ইউনিটে ভালো সাবজেক্ট এর জন্যও লাগবে ইংলিশে ভালো স্কোর। তাই এক কথায় ইংলিশ বেশি বেশি কেয়ারফুল থাকতে হবে। ইংলিশ না পড়ে অন্য সাবজেক্ট সারাদিন রাত পড়ে লাভ হবেনা কোনভাবেই৷
শুভ কামনায়,

Md Mahiuddin
Department of Law
University of Dhaka.

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form