সংমিশ্রণ বাংলা বলা নিয়ে তারা চিন্তিত!

আপনি কি এক মিনিট শুধু বাংলায় কথা বলতে পারবেন? এক ছিটেফোঁটাও ইংরেজি শব্দ থাকবে না। আমি পারবো না! কেন পারবো না তা বুঝতে আমার প্রশ্নটা আবার পড়ুন। দেখুন আমি ইতোমধ্যে একটা ইংরেজি শব্দ— 'মিনিট' ব্যবহার করে ফেলেছি।
এই যে কথায় কথায় বাংলা ভাষায় ইংরেজি শব্দ বলি তা কি বাংলা ভাষাকে বা ভাষা শহিদ কে অসম্মান করার সামিল?
আমি তরল কণ্ঠে বলি, না। তা অসম্মান করার সামিল নয়!
বাংলা ভাষা হচ্ছে একটা জগাখিচুড়ি ভাষা। এ ভাষায় আছে হরেকরকম ভাষার শব্দ। যখন যে শাসক এ অঞ্চল শাসন করেছিল, তখন সেই শাসকের ভাষা তা-তে চুপচাপ ঢুকে গেল।
যেমন- আরব আমলে বাংলা ভাষায় চোরের মত ঢুকে গেছে আদালত, উকিল, কলম, খারিজ, নগদ ও বাকি।
মুগল আমলে কারখানা, তারিখ, দোকান, চশমা মত শব্দ গুলো নির্লজ্জভাবে ফারসি থেকে বাংলায় ঢুকে গেছে।
তারপর ইংরেজ শাসকগোষ্ঠীর বদৌলতে ঢুকেছে ইংরাজি শব্দ।
এখন প্রত্যক্ষ ইংরেজ শাসন নেই। কিন্তু পরোক্ষভাবে আছে। তাই অবচেতনভাবে আমরা বাংলা ভাষায় ইংরেজি শব্দ ঢুকাচ্ছি ।
তা দেখে অনেক পণ্ডিত ফেব্রুয়ারি মাস আসলে মাথার চুল ছিঁড়েন হায় হায় করেন। গেল গেল করেন। বিভিন্নভাবে জন সচেতনতা সৃষ্টি করতে চেষ্টা করেন।
ফলে কী হয়— যে লাউ সে কদু!
আরে আজকে যে ইংরেজি ভাষা দেখি, সেও তো জগাখিচুড়ি ভাষা। তা-তেও বিভিন্ন ভাষার শব্দ আছে। এক জরিপে দেখা যায়, ইংরেজিভাষায় ল্যাটিন শব্দ ২৯%, ফ্রান্স ২৯%, জার্মানি ২৬%, গ্রীক ৬%, অন্যান্য ১০%।
তাই বলা যায়— এক ভাষায় অন্য ভাষার শব্দ অবচেতনভাবে ঢুকানো অপরাধের কিছু নয়। অপরাধ হচ্ছে জোর করে ঢুকানো।
বিষয়টা পরিষ্কার হতে নিচের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীর মধ্যে কথোপকথনটা পড়ুন।
শিক্ষক- শিলা,ইংরেজী কর-সে ডুব দিল কিন্তু উঠিল না।
শিলা- He is died.
শিক্ষক- What?
শিলা- ওতো আর উঠেনি,নিশ্চয় মারা গেছে।
শিক্ষক-Idiot,নোভা তুমি বল।
নোভা-He ডুব দিল But আর উঠিল Not.
যাইহোক, যদি পণ্ডিতমহল এই অবচেতন প্রক্রিয়া ঢুকানোকেও দোষের মনে করে , তাহলে তারা যেন আমাদের জ্ঞানবিজ্ঞানে অদ্বিতীয় করে তোলে যাতে আমরা ইংরেজির কাছে আর জ্ঞানবিজ্ঞান ভিক্ষা করা না লাগে।

[আল আমিন]

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form