করবী এর ঔষধি গুন





পরিচিতি:   করবী গাছের উপকারিতা ও গুণাগুণ অনেক। সাদা করবী অনেকটাই অখ্যাত। করবী অনেক প্রাচীন ফুল। পাতা চার থেকে ছয় ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা। আদিবাস এশিয়া ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল। গাছ চির সবুজ, দুই থেকে আড়াই মিটার উঁচু হতে পারে। গোড়া থেকে অনেকগুলো ডাল গজিয়ে ঝোপাল হয়ে থাকে। গাছের শাখা-প্রশাখার অগ্রভাগে অসংখ্য ফুল ফোটে। পাতা বেশ সুন্দর, ডালের আগার দিকে বেশি থাকে বিপ্রতীপ বিন্যাসে, ১২ থেকে ২০ সেন্টিমিটার লম্বা ডালের আগায় গুচ্ছবদ্ধ ফুল সাধারণত তিন রকম—রক্ত করবী, সাদা (শ্বেত করবী) ও ডাবল গোলাপি বা পদ্ম করবী হালকা সুগন্ধি যুক্ত ফুল । 

 করবী গাছের গুনাগুণঃ

➢ আঘাত লেগে ফুলে গেলে: করবী কচি পাতা ৫০ গ্রাম ছোট ছোট টুকরা করে কেটে মাটি বা স্টিলের পাত্রে ১০০ মি.লি. পানি দিয়ে সিদ্ধ করে ফোলা জায়গায় লাগালে ফুলা সেরে যাবে। 

 ➢ চোখ ওঠা: করবী গাছের কচি পাতার টাটকা রস চোখে দিলে চোখ ওঠা রোগে আরাম হয়। সারা দিনের মধ্যে মাত্র দু’বার প্রয়োগ করা দরকার। একবার সকালের দিকে চোখ পরিষ্কার করে এবং দ্বিতীয় বার দিতে হবে সন্ধ্যার পর। প্রতিবার পাতার রস লাগাবার আগে পরিষ্কার ন্যাকড়া বা তুলা সামান্য গরম পানিতে ভিজিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। পর পর তিন দিন রস প্রয়োগ করলে চোখ সেরে যাবে। 

 ➢ চামরা বা ছাল ওঠা রোগে: অনেক সময় দেখা গেছে হাত ও পায়ের চামরা, এমন কি সারা শরীরের ওপরের চামড়া মাছের আঁশের মতো উঠে যাচ্ছে। এটা একটা বিশেষ ধরনের চর্মরোগ। করবী গাছের মূলের ছালের তেল স্নান করার পর লাগালে এ রোগে অব্যর্থ উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত স্থানে একই ওষধ দিনে দুবার লাগালে উপকার হয়। 

 ➢ বিছা ও ভীমরুলে কামড়ালে: করবী গাছের কচি পাতাকে সিদ্ধ করে তার পানি দিয়ে আক্রান্ত স্থান ধুয়ে দিলে বিষ নষ্ট হয় এবং ফোলা-যন্ত্রণাও কমে যায়। 

 ➢ গর্ভপাতে: করবী গাছের শুকনা মূলের গুড়া দেড় গ্রাম ঠাণ্ডা পানির সাথে খেলে গর্ভপাত হয়। তবে মনে রাখতে হবে মূল খুবই বিষাক্ত। কখনও বেশি মাত্রায় খাবেন না বেশি মাত্রা খেলে মৃত্যুও পর্যন্ত ঘটতে পারে। এটা খুব ঝুঁকির কাজ । মূল খেলে তার পনের মিনিট বাদে দু’চামচ গাওয়া ঘি আধা কাপ দুধের সাথে মিশিয়ে অবশ্যই খেতে হবে। কারণ গাওয়া ঘি করবীর বিষক্রিয়া নষ্ট করে শরীরকে সুস্থ রাখে । 

➢ খোস ও পাচড়া: করবীর শিকড়ের ছাল বেটে তার রস দিনে একবার প্রয়োগ করলে খুব তাড়াতাড়ি ফল পাওয়া যায়। 

 ➢ পুরুষাঙ্গে ক্ষত সারাতে: করবী গাছের মূল পরিষ্কার পানির সাথে ঘষে থেঁতো করে পুরুষাঙ্গে লেপন করলে ক্ষত আরাম হয়। যদি মূল পানিতে ঘষার অসুবিধা থাকে তাহলে শিকড় পানি দিয়ে বেটে মলমের মতো লাগান । 

 ➢ চুল পাকা ও পড়া রোধে: করবী গাছের মূলের ছাল দুধ দিয়ে বেটে স্নান করার তিন ঘণ্টা আগে মাথায় মাখলে চুল পাকা বন্ধ হয়। এটা বোঝার জন্যে পাকা চুল আগে। সব তুলে ফেলে তারপর ওষুধ প্রয়োগ করলে এর গুণাগুণ সহজেই বোঝা যাবে। 

 ➢ চুলকানি সারাতে: গায়ে চুলকানি হলে করবী গাছের পাতা সিদ্ধ করে স্নান করলে চুলকানি ভালো হয়ে যায়। 

 ➢ ক্ষত সারাতে: করবী গাছের পাতা বেটে নিয়ে অল্প গরম করে ক্ষতের উপর প্রলেপ দিলে ক্ষত সম্পূর্ণ শুকিয়ে যায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম