স্মার্টফোনগুলো আজকাল বহু সংখ্যক সেন্সর নিয়ে আসে যা বেটার ইউজার এক্সপেরিয়েন্স দিয়ে থাকে। এবং চারপাশের পরিবেশ সম্পর্কে অ্যাপসকে অধিক তথ্য দিয়ে থাকে, ভালো ও অধিক ব্যাটারি লাইভ প্রভাইড করে। এবার জেনে নেওয়া যাক সেন্সর কী?
সেন্সরকে আলাদা ডিভাসের সাথে তুলনা করা যায় যা চারপাশের পরিবেশের পরিবর্তন পরিবর্তন সনাক্ত করে এবং ডেটা ওপারেটিং সিস্টেম বা প্রেসেসরে এ প্রেরণ করে। সেন্সরের কাজের ভিন্নতা আছে। এই ভিন্নতাকে মূল তিন ভাগে ভাগ করা যায়-
১. Motion Sensors,
২. Environment Sensors,
৩. Position Sensors.
Motion Sensor (অক্ষমাপক সেন্সর)
এই সেন্সরগুলো অক্ষ সম্পর্কিত গতি পরিমাপক সেন্সর। যেমন, ত্বরণের বেগ এবং রোটেশনের অক্ষ তৃমাত্রিক। এই শ্রেণীতে রয়েছে Accelerometer, Gravity Sensors, and Gyroscopes Sensors।
Environmental Sensors (পরিবেশগত সেন্সর)
এই সেন্সরগুলো পরিবেশের প্যারামিটার যেমন, বাতাসের চাপ, তাপমাত্রা এবং আদ্রতা সহ ইত্যাদি বিষয় পরিমাপ করে। এই শ্রেণীতে রয়েছে Barometers, Photometers, and Thermometers।
Position Sensors (অবস্থানগত সেন্সর)
এই সেন্সরগুলো ডিভাইসের ভৌত অবস্থান নির্ণয় করে। ডিভাইস সোজা বা বাঁকা যেভাবে রাখা হোক সেদিকে দিকে কাজ করে। এই শ্রেণীতে রয়েছে Orientation sensors and Magnetometers, Gps, Berometer.
স্মার্টফোনে থাকা সাধারণ সেন্সরগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো-
Accelerometer Sensor
অ্যাক্সিলারোমিট ার অক্ষ ভিত্তিক গতি সনাক্ত করে। এটি স্মার্টফোনের অরিয়েন্টেশনের ওপর নির্ভর করে এর x, y ও z অক্ষ নির্ণয় করে।
ফোনের অটো-রোটেট অপশন যখন অন করা হয় ছবি বা অ্যাপস দেখার সময় সোজা করে দেখলে স্বাভাবিক দেখা যাবে এবং বাঁকা করলে landscape ভিও পাওয়া যাবে। কিছু ফোনে ফিচার হিসেবে উলটা করে রাখলে সাইলেন্ট মুডে যায় বা পাওয়ার সেভিং মুড অন হয়।
স্টেপ কাউন্টের ক্ষেত্রেও কাজ করে। মূলত অক্ষের ওপর ভিত্তি করে ফোনে এসব কাজ হয়।
Gyroscope Sensor
জাইরোস্কোপ বা জাইরো সেন্সর হলো অ্যাক্সিলারোমিট ার এর উন্নতর সংস্করণ। অ্যাক্সিলারোমিট ার যেখানে শুধু অক্ষ ভিত্তিক গতি মনিটর করতে পারে, জাইরো সেখানে অ্যাক্সিলারোমিট ারের সাথে কাজ করে এবং ওরিয়েন্টেশনের প্রতিটা ডিগ্রির পরিবর্তন সনাক্ত করে। এটি গতি পরিমাপের ক্ষেত্রে বেশ কার্যকরী।
যেমন, প্যানারোমা বা ফটোস্ফিয়ারের ৩৬০° ছবি তোলার সময় এই সেন্সর পরিমাপ করে ওরিয়েন্টেশনের কেমন পরিবর্তন হচ্ছে এবং প্রতি ডিগ্রির ছবি তুলতে সহায়তা করে। আবার যেসব গেমস এ জাইরো কাজ করে সেগুলোতে আলাদা সুবিধা পাওয়া যায়।
Ambient Light Sensor
এই সেন্সর মূলত পরিবেশের আলোর উজ্জ্বলতা সনাক্ত করে। ফোনের অটো ব্রাইটনেস এই সেন্সরের ওপর নির্ভর করে। এই সেন্সর আশেপাশের আলোর পরিমাপ করে এবং ডেটা অপারেটিং সিস্টেম এ প্রেরণ করে। এই ডেটা অনুযায়ী অপারেটিং সিস্টেম ব্রাইটনেসের সামঞ্জস্য করে।
Magnetometer Sensor
এই সেন্সর ফোনে কম্পাসের মতো কাজ করে। এটি ম্যাগনেটিক ফিল্ড পরিমাপ করে এবং কোথায় দক্ষিণ দিক তা দেখায়।
গুগল ম্যাপসে পথ নির্দিশনার সময় এটি দক্ষিণ কোন দিকে তা দেখায়। আবার মেটাল ডিটেক্টর অ্যাপস কাছাকাছি মেটাল জাতীয় পদার্থ থাকলে তা সনাক্ত করতে পারে।
Proximity Sensor
এই সেন্সর মূলত বস্তর উপস্থিতি সনাক্ত করে। স্মার্টফোনে এটি সেন্সর ও বস্তুর মধ্যে দূরত্ব নির্ণয় করে। যখন ফোনে কথা বলা হয় এবং কাছাকাছি এলে স্ক্রিন একাই অফ হওয়ার কারণ এই প্রক্সিমিটি সেন্সর।
Gps
জিপিএস মূলত অবস্থান নির্ণয় করতে সহায়তা করে। পৃথিবীর অরবিটে থাকা ২৪ টি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে মাইক্রোওয়েভ সিগন্যালের মাধ্যমে সঠিক অবস্থান করে। বেস স্টেশনে সিগন্যাল প্রেরণ করলে স্যাটেলাইটে প্রেরণ করা হয় এবং স্যাটেলাইট লোকেশন সনাক্ত করে।
এই সনাক্তকরণ অ্যাকুরেসী প্রায় ১০-১০০ মিটারের মধ্যে তবে ডুয়েল জিপিএস থাকলে আরও কমে যায়।
এটি অটোমেটিক সময় নির্ধারণ, ম্যাপসে অবস্থান নির্ণয় সহ অনেক কাজে ব্যবহৃত হয়।
Barometer
ব্যারোমিটার ব্যবহার করা হয় বায়ুমন্ডলের চাপ সনাক্ত করার জন্য। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কত উচ্চতায় অবস্থান করছে তাও নির্ণয় করে।
জিপিএসের সাথে এটি সঠিক লোকেশন সনাক্ত করবে এবং দিনের বিভিন্ন ফিটনেস এক্টিভিটি যেমন, স্টেপ ট্রাক করতে সহায়তা করবে।
Biometrics
সিকিউরিটির জন্য ব্যবহৃত হয়। মূলত ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ফেসলক ফোনের অধিক জনপ্রিয়।
কিছু ফোনে আইরিশ স্ক্যানারও দেখা যায়।
NFC Sensor
Nfc হলো শর্ট রেঞ্জ উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সীতে ওয়্যারলেস ডেটা ট্রান্সফার মাধ্যম। মাত্র ১০ সে.মি. এর মধ্যে ডেটা বিনিময় করতে সক্ষম।
Ambient Temperature Sensor
এই সেন্সর মূলত পরিবেশের তাপমাত্রা সনাক্তে সহায়তা করে।
শুধু মাত্র ফ্লাশশিপ ফোনগুলোতে এই ফিচার দেখা যায়।
Heart Rate
এই সেন্সর ফোন টাচ করলে ব্যক্তির হার্ট রেট শো করে।
Relative humidity
এই সেন্সর আপেক্ষিক আদ্রতা পরিমাপ করে এবং পার্সেন্টেজ এ মান প্রকাশ করে।
সোর্সঃ
Writer: Rownok Shahriar
Tags:
Technology