মিসক্যারেজ এন্ড স্টিলবার্থ

মিসক্যারেজ


মিসক্যারেজ ও স্টিলবার্থের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে, মিসক্যারেজ হয় প্রেগন্যান্সির ২০ সপ্তাহের আগে এবং স্টিলবার্থ হয় ২০ সপ্তাহের পরে। 

মিসক্যারেজ জিনিসটা অনেক বেশি কমন। পরিসংখ্যান বলে যে, নারীজাতির প্রতি ৫ প্রেগন্যাসন্সির মধ্যে ১ টা প্রেগন্যান্সি মিসক্যারেজের শিকার হয়। 

এখানেও কথা আছে। প্রতি ১০ টা মিসক্যারেজের মধ্যে ৮ টাই হয় প্রেগন্যান্সির প্রথম তিন মাসে। অনেক নারী এটা বুঝতেও পারে না যে, তারা মিসক্যারেজের শিকার হয়েছে! 

সাধারণত মিসক্যারেজের ৭-১৪ দিনের মধ্যেই ভ্যাজাইনাল ব্রিডিং এর সাথে অপরিপক্ব ভ্রুণের সকল টিস্যু বের হয়ে যায়। কখনো কখনো এবডোমেনে ব্যথা দেখা দিতে পারে। 

তবে মিসক্যারেজের পরে, ৭-১৪ দিনের মধ্যে যদি দেহ আগের মত হয়ে যায় বা আগের মত সুস্থবোধ করে, তাহলে বুঝতে হবে কোনো ঝুঁকি নেই। 

কিছু কিছু সময় দেখা যায় ভ্রুণের সকল অংশ রক্তের সাথে নিঃসরণ হয় না। এতে করে রক্তক্ষরণ ৭-১৪ দিনের সীমা অতিক্রম করে অনেক দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং তার সাথে ইনফেকশন দেখা দিতে পারে। এরকম হলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া আবশ্যক। 

মিসক্যারেজের আসল কারণ জানতে পারটা বেশ কঠিন তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন এটা প্রধানত হয় ক্রমজমের এবনোর্মালিটি, ইউট্যেরাইন এবনর্মালিটি, প্লেস্যান্টার জটিলতা ও হরমোনার এবনোর্মালিটির কারণে। 

মিসক্যারেজের সাথে একজন নারীর বাহ্যিক আচরণের প্রভাব সুদৃঢ় ও সুস্পষ্ট না। 

ভ্রুণ ২০ সপ্তাহ অতিক্রম করার পর মারা গেলে তাকে স্টিলবার্থ বলা হয়। নারীরা এটা সহজেই বুঝতে পারে ( আবার অনেকে বুঝতে পারে না) কারণ তার পেটের শিশু আর নাড়াচাড়া করে না এবং নিজেকে শূন্য শূন্য লাগে। 

স্টিল বার্থ খুবই রেয়ার কেস। ১৬০ টা প্রেগন্যান্সির মধ্যে ১ জন মৃত সন্তান জন্ম দেয় ( থার্ড ওয়ার্ল্ড কান্ট্রিতে রেট বেশি)। অনেক সময়ই স্টিলবার্থের সঠিক কারণ জানা যায় না। 

স্টিলবার্থের কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা এমবিলিকার কর্ড, প্লেস্যান্টা, কনজেনিটাল সমস্যার সম্পর্ক আছে বলে চিহ্নিত করেছেন। 

নিশ্চিতভাবে ভ্রুণ মারা গেছে নাকি না, তা জানা গেলে দেরি করা অহেতুক হবে। তবে ডাক্তার যদি বলে ন্যাচারাল ল্যাবারের জন্য অপেক্ষা করতে, তবে তাই করণীয়।

আধুনিক মেডিকেল সাইন্সের যুগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া কিছু করা বোকামি হবে, কারণ ন্যাচারাল ল্যাবার আসতে দেরি হলে ভতরের ভ্রুণ ক্ষয় হতে শুরু করবে এবং তা নারীর ঝুঁকি বাড়িয়ে দিবে। 

[ ৫ দিন ধরে মৃত ভ্রুণ নিয়ে নারী চিকিৎসা বিহীন মারা গেছে। হাসপাতালকে টাকা দিতে না পারায় তার চিকিৎসা করতে রাজি হয় নি ডাক্তারা 
https://m.timesofindia.com/city/raipur/Woman-carrying-dead-fetus-for-5-days-rejected-by-hospitals-dies/amp_articleshow/54435516.cms]

তাই ডাক্তারের পরামর্শের দ্বারা সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়াই শ্রেয় এবং একমাত্র অবলম্বন! 

যদিও মিসক্যারিজ ও স্টিলবার্থ সম্পূর্ণভাবে নারীর দোষ নয় তবে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, ওবেসিটি, মদ্যপান, নেশা, ধূমপান, রোগের ও মিসক্যারেজের পূর্ব ইতিহাস এই ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। 

ভাবার বিষয় হচ্ছে, মিসক্যারেজ নারীর জন্য কম বেদনাদায়ক। তবে স্টিলবার্থের ক্ষেত্রে নারীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। এই সময় তাদের পাশে থাকা অতি জরুরী। 

চাইলে অনেক বড় লিস্ট করা যাবে যে কি কি করলে এই ঝুঁকি কম হবে। তবে সেটা আমার থেকে জানলে ভালো জানা হবে না বা ভুল জানা হবে। 

সেজন্য সকল দম্পতির উচিত শিশু নেয়ার আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ নেয়া। বিষ্ময়কর হলেও, ২৩০০ বছর আগে অ্যারিস্টোটল তার পলিটিক্স বইয়ে শিশু নেয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেছেন! 

সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করি। 
ধন্যবাদ...।

Writer: Md Ariful Islam

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম