IELTS বা GRE ছাড়াই স্কলারশিপ হয় নাকি?


খুব সহজেই কোন জিনিস পেয়ে গেলে কতই না মজা- এই ধরনের মেন্টালিটি থেকেই উপরের প্রশ্নটি সাধারণত আমাদের মনে উঁকি দেয়। কেন যেন আমরা কষ্ট করতে চাইনা। আমরা চাই আমরা বসে থাকব আর সবকিছু আকাশ থেকে আমাদের মাথার উপর টপাটপ নাজিল হবে। তাই আসুন কিছু পয়েন্ট ধরে ধরে সামনের দিকে আলোচনা টা নিয়ে যাওয়া যাক। প্রথমেই বলে রাখা ভালো যে স্কলারশিপের নানারকম ধরন আছে যেমনঃ
A. পার্শিয়াল টিউশান ফি ফ্রী (মানে বিশ্ববিদ্যালয় কে অল্প কিছু টাকা দেওয়া লাগে পড়াশোনা বাবদ আর বাকি সব খরচ আপনার দেশ বা অন্য কোন উৎস থেকে নিতে হবে)
B. পুরো টিউশান ফি ফ্রী ( মানে বিশ্ববিদ্যালয়কে কোন টাকা দেওয়া লাগে নাকিন্তু ও থাকা খাওয়া বাবদ টাকা বাবার পকেট থেকে নিতে হবে অথবা বাইরে পার্ট টাইম কাজ করতে হবে)
C. টিউশন+থাকা ফ্রী (মানে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকতে পারবেন অথবা বাইরে থাকলে আপনার ভাড়া বিশ্ববিদ্যালয়/ স্কলারশিপ দিয়ে দিবে)
D. টিউশন+থাকা+খাওয়া ফ্রি (মানে কোন খরচই আপনাকে দিতে হবে না উল্টো আপনার হাতে মাঝে মাঝে মাসিক খাওয়া বাবদ কিছু টাকা দিবে)
সাধারণতর্ A,B ও C তিনটায় কোন ধরনের ভাষা সনদ ছাড়াই পাওয়া যায় কিন্তু শেষের D নং স্কলারশিপটি আপনি যদি পেতে চান তাহলেঃ
1. আপনার     IELTS বা GRE না থাকে তাহলে     TOFEL থাকতে হবে অথবা GMAT কিংবা     SAT
2. এগুলো না থাকলে যে দেশে যাচ্ছেন সে দেশের ভাষা পরীক্ষা যেমনঃ
a. জার্মানিতে যেতে হলে জার্মান ভাষা
b.  জাপানে যেতে হলে জাপানিজ ভাষা
c. দক্ষিণ কোরিয়াতে যেতে হলে কোরিয়ান ভাষা অথবা
d. চায়নাতে যেতে হলে চাইনিজ ভাষায় HSK পরীক্ষা দিয়ে সার্টিফিকেট নিতে হবে
1. তাও যদি না থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার অত্যন্ত ভালো CGPA  সমৃদ্ধ রেজাল্ট এবং ভালো মানের গবেষণা থাকতে হবে
2. আর যদি তাও না থাকে তবুও স্কলারশিপ পেতে চান তাহলে আপনি অবশ্যই কোনো ভালো Ranking-এর বিশ্ববিদ্যালয় যেতে পারবেন না,      যেতে হবে বিদেশের কোন অনুন্নত শহরের Low Ranking-এর বিশ্ববিদ্যালয়ে।
অর্থাৎ বাইরের কোন দেশের কোন অঙ্গরাজ্যের সবচেয়ে কম সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন একটি বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণত স্কলারশিপের সার্কুলার কম যোগ্যতার ভিত্তিতে দিয়ে থাকে কারণ ছাত্রছাত্রীরা ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা জানেনা কিংবা ভালো ছাত্র ছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয় যেতে চায়না তাই আপনাকে ঐ সকল বিশ্ববিদ্যালয় টার্গেট করতে হবে এবং সেগুলো খুঁজতে হবে ধৈর্য ধরে বসে গুগলে।
5. আবার কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় স্কলারশিপ এর টাকার পরিমান কে কম-বেশি করে দেয় যোগ্যতার উপর ভিত্তি করে। যেমনঃ যাদের রেজাল্ট ভালো, IELTS স্কোর ভালো তাদেরকে ৫০ হাজার টাকা মাসিক দিলে আপনাকে দেবে ২৫ হাজার টাকা মাসে।
কিন্তু ধরুন আপনি উপরের ১ হতে ৫ কোনটাই করতে চাচ্ছেন না তাহলে অবশ্যই আপনার থাকতে হবেঃ
1. বিশ্ব বিখ্যাত কোন প্রফেসরের রিকমেন্ডেশন
2. কোন ভাল দেশি কিংবা বিদেশি প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ ট্রেনিং অথবা
3. বাইরের প্রফেসরের সাথে খুবই ভালো যোগাযোগ
মানে কিছু কিছু বিখ্যাত প্রফেসর আছেন যাদেরকে আপনি আপনার যোগাযোগ এবং নিজের লেখা ইমেইল ও ছোটখাটো কাজ দিয়ে প্রভাবিত করতে পারলে তারা নিজেদের পাওয়া প্রজেক্ট থেকেও মাসিক হারে অনেক টাকা গবেষণারত ছাত্র-ছাত্রীদের কে দিয়ে থাকেন যা দিয়ে বিদেশে আমি ভালোভাবে চলা সহ দেশে টাকা পাঠানোর সহজ হয়ে যায়। কিন্তু এই ধরনের প্রফেসর কে খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন এবং তাদের থেকে রিপ্লাই পাওয়া ততটা সহজ নয়G বছরের পর বছর পেছনে লেগে থাকতে হয় তাদের। খোঁজ খবর রাখতে হয় তাদের সমস্ত গবেষণার। অর্থাৎ পড়াশোনা করতে হয় ভালোভাবে।
আর যদি এরকম কোন কাজই করতেন না চান তাহলে অবশ্যই আপনার থাকতে হবে মহান আল্লাহ তা'আলার দেয়া একটি অত্যন্ত শক্তিশালী রহমতময় ভাগ্য। যেগুলো আমাদের অনেকেরই আছে কিনা সেটা নির্ভর করবে আমাদের আচার-ব্যবহার এবং পাপ-পুণ্যের হিসাব এর উপর। তাই আপনি জানেনঃ
1. শিক্ষকদের সাথে আপনার সম্পর্ক কেমন
2. আপনি জানেন আপনার রেজাল্ট কেমন পারে সব মিলিয়ে এবং
3. এই আপনি জানেন আপনি গবেষণা কেমন ভালো করতে পারবেন, কি পারবেন না
তাই উপরের প্রশ্নটি করে সময় নষ্ট না করে আমার মনে হয়, কোন একটা
দেশ নির্বাচন করে ওই দেশে কোন ভাষা পরীক্ষাটি দিলে খুব সহজেই স্কলারশিপ পাওয়া যায় সেটা লক্ষ্য করে প্রিপারেশন নেওয়া শুরু করা প্রয়োজন। তাহলে দেখা যাবেঃ
1. যেকোন ভাষা সনদ
2. অল্প কিছু CGPA সমৃদ্ধ রেজাল্ট
3. সাথে রিসার্চ হোক বা না হলেও
4. যেকোনো দেশি প্রফেসর রিকমেন্ডেশন হলেই
বিদেশে মোটামুটি ভালো মানের স্কলারশিপ আপনাদের মিলে যেতে পারে। তাই আজ থেকেই একটু একটু করে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে দিন পরীক্ষা গুলো খুব কঠিন নয় সহজেই ভালো স্কোর তোলা যায়। চেষ্টা করুন হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

Writer: Shahanul Islam

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম