গুহার ভেতরে (Science Fiction)

(এক)
আন্ধার রাত। মেঘাচ্ছন্ন আকাশে উকি দিচ্ছে পূর্ণিমার চাঁদ। বড় পুকুরের পাশে একটা বড় বাড়ি।বাড়ির ছাদে একাই বসে আছে সাফি।
প্রফেসর হুকা মিয়ার অ্যাসিস্ট্যান্ট সে। প্রফেসরকে গবেষণায় সবসময় সাহায্য করাই তার কাজ। কিছুদিন ধরে সে প্রফেসরের সাথে একটা সমীকরণ সমাধান করছে। উদ্দেশ্য, পাওয়ার সাপ্লাই এর জন্য ছোট আকৃতির নিউক্লিয়ার চুল্লি তৈরি করা।
প্রফেসর সবসময় বলে,"দেখো বিজ্ঞানীদের বউ মানে বিভিন্ন প্যারাডক্স/সমীকরণ আর বাচ্চা মানে সেই প্যারাডক্সের/সমীকণের সমাধান"। সাফির বাচ্চা পয়দা করতে,মানে প্যারাডক্স/সমীকরণ সমাধান করতে ভালই লাগে। কিন্তু যখন থেকে প্রফেসর "সময়" নিয়ন্ত্রণ করার জন্য গবেষণা শুরু করেছে, টাইম মেশিন বনানোর জন্য, তবে থেকে সাফির কাছে একের পর এক বিদঘুটে সমীকরণ আসা শুরু করেছে। অনেকেই আড়ালে প্রফেসরকে "ঝামেলার বাবা" বলে ডাকত। অনেকেই প্রফেসরকে ব্যাঙ্গ করে বলে,"যেখানে স্টিফেন হকিং এর মত বিজ্ঞানীরা বলে অতীতে সম্ভব না। সেখানে প্রফেসর শুধু শুধু সময় নষ্ট করে,শুধু শুধু ঝামেলা পয়দা করে।"
ছাদে বসে থাকতে থাকতে সাফির এখন ঘুম ঘুম ভাব। হঠাৎ তার ফোন বেজে উঠল। সাফি লক্ষ করল কলার এর নাম লেখা আছে ঝামেলার বাব। সে বুঝতে পারল প্রফেসরের কল। ফোন রিসিভ করতেই ওপার থেকে ভেসে আসল,"সাফি,তাড়াতাড়ি ডক্টর টুকা মিয়ার ল্যাবে চলে আসো"। সাফি কিছু বলতে যাচ্ছিল কিন্তু তার আগেই প্রফেসর ফোন কেটে দিল।
ডক্টর টুকা মিয়া হলেন প্রফেসর হুকা মিয়ার ছোটবেলার বন্ধু বন্ধু। ডক্টর টুকা মিয়া একজন ফরেনসিক এক্সপার্ট। তবে তিনি স্টোম সেলের ওপর অনেকদিন ধরে গবেষণা করছেন। প্রফেসর প্রায় ডক্টরের সাথে দেখা করতে যান। সাফিও যায়। কিন্তু এবার প্রফেসরের কণ্ঠ বেশ অদ্ভুত। মনে হয় বেশ চিন্তার ভাজ প্রফেসরের কপালে।
সাফির মনে নানা প্রশ্ন জাগতে শুরু করল, হঠাৎ রাতে প্রফেসর তাকে ডাকল কেন? বস হিসাবে ডাকতেই পারেন, কিন্তু নিজের ল্যাব ছেড়ে ডক্টর টুকা মিয়ার ল্যাবে ডাকল কেন? কী প্রয়োজন সেখানে?



(দুই)
চারদিক নিস্তব্ধ। ঘরের ছাদে বৈদ্যুতিক বাল্ব, আলোটাও বেশ অদ্ভুত। ঘরের মাঝখানে চারজন লোক দাঁড়িয়েআছেন। একজন প্রফেসর হুকা মিয়া, তার ডান দিকে ডক্টর টুকা মিয়া আর তার পাশে ডক্টরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ফুকা খান।
প্রফেসরের সামনে একটা টেবিল আর টেবিলে কাচের ভেতর একটা লাশ। লাশটা শহরের উত্তর দিকের জঙ্গলের পাশ থেকে উদ্ধার করা। টেবিলের ওপারে ক্যাপ্টেন রাফি।
নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে প্রথমে ক্যাপ্টেন রাফিই বলা শুরু করলেন-
রাফি : প্রফেসর, আমরা যার ভয় পাচ্ছি সেটাই কি সত্যি?
প্রফেসর : হুম।
রাফি : লোকটা কতক্ষণ আগে মারা যেতে পারে?
ডক্টর : প্রয় আট ঘন্টা আগে।
রাফি : বলেন কি! লাশটা আমরা সাত ঘন্টা আগেই পেয়েছি। তার মানে শহরের ভেতরেই রেডিও এক্টিভ এলিমেন্ট ঢুকেছে! কিন্তু প্রফেসর লোকটার দেহ পুরোটাই নীলচে কালো হয়ে গেছে, এটা রেডিয়েশনের প্রভাবে। তবে কিছু কিছু জায়গা বেশ বাজে ভাবে পুরে গেছে। এই পুরে যাওয়ার কারণ কি?
প্রফেসর : এটাও রেডিয়েশনের ফল। মৌলটা বেশ ভারি ছিল আর সেটা প্রচুর পরিমাণে ছিল।
রাফি : ইউরেনিয়াম নয় তো?
প্রফেসর : হতে পারে।
রাফি : তাহলে তো আরো ভয়ের ব্যাপার। শহরে ইউরেনিয়াম কিভাবে এল আর তার থেকেও বড় প্রশ্ন এটা আনলো কে?
ফুকা খান : হয়ত কেউ এক্সপেরিমেন্ট করতেছে।
রাফি : কি নিয়ে! নিউক্লিয়ার বম্ব!
ডক্টর : হতে পারে।.......
এমন সময় সেখানে পৌঁছালো সাফি। সাফি প্রফেসরের কাছে তাকে ডাকার কারণ জানতে চাইলে প্রফেসর লাশের ব্যাপারে সব খুলে বলেন। তার সাথে সাফিকে এটাও বলেদিলেন যে, তাকে(সাফিকে) কাল সকালে ক্যাপ্টেন রাফির সাথে বিষয়টা নিয়ে তদন্তে যেতে হবে। কারণ সেনাবাহিনীর সাথে একজন বিশেষজ্ঞ থাকা দরকার। এতে রেডিয়েশন সনাক্ত করতেও সুবিধা হবে। সেনাদের সাথে হয়ত প্রফেসর হুকা মিয়া নিজেই যেতেন, কিন্তু তিনি এখন টাইম মেশিন নিয়েই ব্যস্ত। সাফি ছিল শার্লক হোমস এর ফ্যান। এসব করতে তার বেশ ভালই লাগে। মনে মনে বেশ খুশিই হলো সে। ক্যাপ্টেন এতক্ষণ চুপ থাকার পর আবার বলা শুরু করলেন-
রাফি : লোকটার কাছে যে ঘড়ীটা পাওয়া গিয়েছিল তা থেকে কিছু জানতে পেরেছেন?
ডক্টর : হুম। ঘড়ীটা রোলেক্সের। বেশ কয়েক বছর আগে তৈরি করা। ঘড়ীটা রেডিয়েশনের প্রভাবে পুরো নষ্ট হয়ে গেছে। ঘড়ীটার পেছনে কিছু সংখ্যা লেখা আছে। মনে হয় না এটা আপনাদের কোনো কাজে লাগবে।
রাফি : আচ্ছা তাহলে আমি এখন আসি। কালকে আবার অনুসন্ধনে যেতে হবে।
কথা শেষ করে ক্যাপ্টেন রাফি চলে গেলেন। তার মনে একটাই ভয়। সরকারি হিসেবে শহরে কোনো রেডিও এক্টিভ এলিমেন্ট আসেনি,তবে কি জঙ্গিরাই শহরে এসব নিয়ে আসল!ভয়ে তা মুখ শুকিয়ে গেল। হয়ত শহরে কেউ বড় ধরণের কিছু পরিকল্পনা করছে! ক্যাপ্টেনের পিছু পিছু সেখান থেকে বেরিয়ে গেলেন প্রফেসরের অ্যাসিস্ট্যান্ট সাফি।
ঘড়ীটার কথা শুনেই প্রফেসরের মনে পরে গেল সাফির জন্মদিনের কথা । এরকম একটা ঘড়ী সাফিকে উপহার দিলে মন্দ হয় না। সাথে সাথে প্রফেসর তার বন্ধুর অনলাইন মার্কেটপ্লেস 'পাগলা শপ বিডি' থেকে একটা ঘড়ীর অর্ডার দিল।
উপহার দিতে হবে সময় মত,কিন্তু পাগলা শপ বিডি নাকি কখনো কখনো এক দুই বছর পর ডেলিভারি দেয়!
একবার নাকি ৫ বছর পর একজনের একটা পেন্সলের অর্ডারে তারা ডেলিভারি করেছিল। বেচারা ক্রেতা কিছুতেই এত আগের সেই অর্ডারের কথা মনে করতে পারতেছিলনা।
এসব ভেবে প্রফেসর একবার নিজেই ফোন করে তার সেই বদ্ধুকে সরাসরি জানিয়ে দিল উপহারের কথাটা আর জানিয়ে দিল জন্মদিনের তারিখটা ।

(তিন)
চারদিক কুচ কুচে অন্ধকার আর নিস্তব্ধতা। চিৎকার করলে হয়ত কয়েক মাইল পর্যন্ত শোনা যাবে। মাঝেমধ্যে পোকামাকড়েদের ঝি ঝি ডাক ।
অন্ধকারে আবছা আবছা একটা রাস্তা ভেসে উঠেছে। রাস্তার দুইপাশেই ঘন কালো জঙ্গল। রাস্তায় দাঁড়িয়ে একটা ছায়া মূর্তি।
হঠাৎ ছায়া মূর্তিটা চলতে শুরু করল। পড়নে তার হুডি, আর মাথায় টুপি। দূর থেকে দেখলে অনেকেই ভূত ভেবে ভয় পাবে। এখন ছায়া মূর্তিটার চলার শব্দ ছাড়া চারদিকে আর কোনো শব্দ নাই।
চলতে চলতে সামনে একটা পেট্রল পাম্প। পাম্পটা এক্কেবারে ভাঙ্গা চুরা। মনে হয় পরিত্যক্ত। পাম্পের পাশেই দুইটা বৈদ্যুতিক ঘুটি। ঘুটির সামান্য উপড়ে, মাঝখনে একটা ট্রান্সফরমার। সেখানে লেখা "Danger ! High Voltage"।
ছায়া মূর্তিটার মুখে একটুকরো হাসি ভেসে উঠল। সে ট্রান্সফরমারের পাশে দাড়ল। হঠাৎ ট্রান্সফরমারের দুইটা তার ছিঁড়ে নিজের সাথে যুক্ত করল। তার প্রচণ্ড ক্ষুধা পেয়েছে। দুই-তিনশো ভোল্টেজে তার ক্ষুধা যাবে না। তার এখন প্রয়োজন হাইজ ভোল্টেজ।
আশেপাশের বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই। কোনো এক বাড়িতে এক লোকের ঘুম ভেঙ্গে গেল। বিদ্যুৎ না থাকায় গরমের ঠেলায় সে সরকারের গুষ্টি উদ্ধার করতেছে।
গরমের ঠেলায় দিকে দিকে লোকেদের ঘুম ভাঙ্গা শুরু হয়ে গেল। ঘুম ভেঙ্গে যেতেই আরও একজন বলা শুরু করল,"হারামজাদারা এই গরমের সমায়ও লোডশেডিং শুরু করল। ব্যাটাদের একবার হাতে পেলে ওভেনে ঢুকাই হিউম্যান তন্দুরি বানাই দিতাম.........."

(চার)
ভোর হয়েছে কিছুক্ষণ আগে। চারদিক লালচে হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে। চারদিকে পাখিদের ডাক। দূর থেকে ভেসে আসছে ইঞ্জিনের শব্দ।
ফাকা রাস্তায় তীর বেগে ছুটে চলেছে একটা ব্লু এস.ইউ.ভি। এখন যেন সেটাই রাস্তার রাজা। চলতে চলতে হঠাৎ একটা বড় গেটের সামনে গিয়ে গড়িটা থামলো।
পাশ থেকে স্টানগান হাতে ছুটে এল দুইজন। গাড়িতে বসে থাকা লোকটা একটা আই.ডি কার্ড দেখল,সাথে সাথে স্টানগান হাতে থাকা লোকেরা পিছিয়ে গেল। খুলে গেল সেই বিরাট গেইট।
গাড়িটা সেখানেই রেখে লোকটা ভিতরে ঢুকে গেল,লোকটার পাশে পাশে যাচ্ছে স্টানগানওয়ালা একজন। বেশ জোড়ালো গুলির শব্দ ভেসে আসতেছিল একটা ঘরের ভেতর থেকে। তারা সেই ঘরে ঢুকে গেল।
ভেতরে থাকা কর্নেল রাফি তাদের দেখতেই বলে উঠলেন,"কি খবর সাফি সাহেব?"।
জবাব এল,"এই ভালোই, আজকেই তো রেডিয়েশনের উৎস খোজার দিন"
"হুম,তাইতো সকাল সকাল নিশানা প্রাকটিস করে নিচ্ছিলাম।"
"চলুন তাহলে, আর সময় নষ্ট করা ঠিক হবে না।"
"হুম, চলুন।"
বড় গেটটার ভেতর থেকে বেরিয়ে এল একটা মিলিটারি জিপ। এত সকালে তেমন কারও ঘুম ভাঙ্গেনি। ঝড় বেগে চলছে জিপ। জিপে রাফি,সাফির সাথে আছে আরও চার জন। চার জনেই সৈনিক। সকলের পড়নে রেডিয়েশন প্রতিরোধী স্যুট আর সাথে প্রচুর আয়োডিন।
জিপটা এসে থামল জঙ্গলের ধারে। এখানেই নাকি সেই লাশটা পাওয়া গিয়েছিল। গাড়ি থেকে নেমেই ক্যাপ্টেন আর সাফি লক্ষ করল আশেপাশের ঘাসগুলোও কেমন পিতাভ বর্ণ ধারণ করেছে। হয়ত এসব সেই রেডিয়েশনের ফল। তবে কি জঙ্গলেই আছে রহস্য! কারা আছে ভেতরে? কি চায় তারা? এসব ভাবতে ভাবতে সকলকে নিয়ে ভেতরে ঢুকে পরল ক্যাপ্টেন।


(পাঁচ)
গুহার ভেতরে আবছা আবছা আলো। সেই আলোয় দূশ্যমান কিছু ভাঙা যন্ত্রপাতি। যন্ত্রপাতির সামনে দাঁড়িয়ে একটা ছায়া মূর্তি। কি যেন ভাবছে সে। হঠাৎ কিছু শব্দ শুনে তার ভাবনা যেন মিলিয়ে গেল। দ্রুত বাইরে বেরিয়ে এল সে।
হঠাৎ গুহার ভেতর থেকে কেউ বেরিয়ে আসায় সতর্ক হয়ে গেল ক্যাপ্টেন রাফি। ছায়া মূর্তি আর সাফিদের দল এখন মুখোমুখি। কি যেন ভেবে ছায়া মূর্তিটা দৌরে তাদের দিকে আসতে শুরু করল। ক্যাপ্টেন বিপদ মনে করে "ফায়ার" বলার সাথে সাথে প্রচণ্ড শব্দে ভরে গেল চারদিক।
এক নিমিশেই শেষ ছায়া মূর্তি। সকলে দৌড়ে গেল সেইদিক। ক্যাপ্টেন রাফি ছায়া মূর্তিটাকে দেখে অবাক হয়ে গেল। "এটাটো একটা রোবট!!"
রেডিয়েশন আর গুলিতে রোবটের সার্কিটের বারোটা বেজে গেছে।
রাইফেল হাতে সাবধানে গুহার ভেতরে ধোকা শুরু করল ক্যাপ্টেন রাফি। ভেতরে শুধু ভাঙা যন্ত্রপাতি ছাড়া আর কিছুই নেই। রোবট সহ সব যন্ত্রপাতি তারা গাড়িতে তুলে নিল। রেডিয়েশন বের হতে থাকা ভাঙা যন্ত্র গুলো নিয়ে এখন সাফিকেই অনুসন্ধান করতে হবে। যন্ত্র গুলোতে রেডিয়েশন এলো কোথার থেকে? রোবটের মেমরিতে কি আছে? কার রোবট এটা?
পুরো জঙ্গল তন্ন তন্ন করে খুজেও আর কিছুই ক্যাপ্টেনের ভাগ্যে জুটলনা। অবশেষে তারা ফিরে এল।

(ছয়)
(দশ বছর পর)
বেশ কয়েক বছর আগে প্রফেসর হুকা মিয়া মারা গেছে। এখন ন্যানো রোবটিক্স এর যুগ। ইলেকট্রনিক সার্কিট আকারে আরও ছোট, আর যন্ত্রে পাওয়ার দেওয়ার জন্য ছোট মাপের নিউক্লিয়ার ইঞ্জিন তৈরি হওয়ায় এত কিছু।নিউক্লিয়ার ইঞ্জিন প্রফেসর হুকা মিয়ার আবিষ্কার।
সাফিও টাইম মেশিন বানিয়ে ফেলেছে মাত্র একদিন আগে। কিন্তু পরীক্ষা করে দেখা হয়নি। প্রফেসর হুকা মিয়ার এন্টি পার্টিকেল এর রহস্য আবিষ্কার,ন্যানো ইলেক্ট্রনিক্স,নিউক্লিয়ার ইঞ্জিন আর দশ বছর আগের গুহা থেকে পাওয়া কিছু যন্ত্রপাতির জন্যই সাফি টাইম মেশিন বানাতে পেরেছে।
নিজের অ্যাসিস্ট্যান্ট ওয়াটসনের দিকে তাকাতেই তার মনে পরে গেল যে,প্রায় দশ বছর আগে জঙ্গলে তারা ওয়াটসনকে পেয়েছিল। ভাঙ্গাচুরা ওয়াটসন কে আবার নতুন করে সাজাতে অনেক সময় লেগেছিল তাদের। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে সেই দশ বছর আগের ওয়াটসনের ছিল উন্নত যন্ত্রাংশ।
"তবে কি সেই অনেক আগেই ন্যানো রোবটিক্স যুগ শুরু হয়েছিল! কিন্তু ওয়াটসনের মত এত উন্নত রোবট জঙ্গলে কি করতেছিল! গুহার সেই ভাঙ্গা যন্ত্রগুলো কিসের ছিল? আর সেই লাশটাই বা কার?"
ভাবতে ভাবতেই কলিং বেল বেজে উঠল।
দরজা খুলতেই একটা লোক। হাতে একটা বক্স,বুকে পাবনা মেন্টাল হসপিটালের লোগো। লোকটা বলে উঠলো,"স্যার,আপনার জন্মদিনের উপহার"
সাফি : মানে? আজকে তো আমার জন্মদিন না!
লোক : দশ বছর আগে হুকা মিয়া আপনার জন্মদিনের উপহার হিসেবে একটা Rolex ঘড়ী অর্ডার করেছিল cash on delivery তে। এখন তো উনি জীবিত নেই,তাই আপনাকেই এর দাম দিতে হবে।
দাম দিতে দিতে সাফি মনে মনে ভাবল,"কি দিনকাল আসলো রে বাবা,নিজের জন্মদিনের উপহার নিজেকেই টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে!"
সাফি বক্স খুলতেই দেখল সেখানে 'ঘড়ী ডিটারজেন্ট পাউডার'। প্যাকেটের উপরে সাইন পেন দিয়ে লিখা আছে "Rolex"। সাফির বেশ রাগ হল,নিশ্চয় কেউ তার সাথে মশকরা করেছে!
হঠাৎ সাফির মনে হল একবার ওয়াটসনকে নিয়ে অতীতে গিয়ে রেডিয়েশনের অনুসন্ধান করা উচিৎ। ওয়াটসনকে নিয়ে যাওয়ার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল,অতীতের সেই অজানা লোকেরা ভবিষ্যৎ এর ওয়াটসনকে নিজেদের ওয়াটসন ভেবে দলে নিতে পারে। এতে সাফি গোপন খবর সহজেই পাবে।
কিছুক্ষণ পর সাফি আর ওয়াটসন টাইম মেশিনে উঠল।

(সাত)
ওয়াটসন সাফিকে বাইরে বের করে নিয়ে আসল। এখন তারা জঙ্গলের শেষ প্রান্তে। ওয়াটসনের চার্জ কমে গেছে, সাফিকে রেখে এখন তাকে ব্যাটারি চার্জ করতে যেতে হবে। দ্রুত চার্জ এর জন্য ওয়াটসনের ব্যাটারি বিশেষ ভাবে তৈরি করা। দুই-তিনশো ভোল্টেজে তার কিছুই হবে না। ওয়াটসনের এখন প্রয়োজন হাইজ ভোল্টেজ কারেন্ট।
(The End)


Writer: Zaved Noor

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form