চিকিৎসকগণ নানা সময়ে রোগীদের ব্লাড টেস্ট করতে দেন। এসব ব্লাড টেস্টের মধ্যে থাকে সিবিসি বা কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট- CBC Test (Complete blood count ) । আর এই সিবিসি টেস্ট করে দেখা হয়, ব্লাড সেল টাইপ এবং ব্লাড সেলের কাউন্ট বা পরিসংখ্যান। এসব দেখে চিকিৎসকগণ বুঝতে পারেন ব্লাড সেল স্বাভাবিক কিনা। এই ধরনের টেস্ট করে বুঝা যায়, শরীরে কোনো ইনফেকশন আছে কিনা, রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কত ইত্যাদি ইত্যাদি।
কমপ্লিট ব্লাড টেস্ট রক্তের বিভিন্ন উপাদান ও বৈশিষ্ট্য গণনা করে যার মধ্যে রয়েছেঃ
• লোহিত রক্ত কণিকা যেটা রক্ত বহন করে,
• শ্বেত রক্ত কণিকা যেটা জীবাণুর সাথে যুদ্ধ করে,
• হিমোগ্লোবিন, রক্তে অক্সিজেন বহনকারী প্রোটিন,
• প্লাটিলেটস, রক্ত জমাট বাঁধতে সহায়তা করে।
আরবিসি (RBC) বা রেড ব্লাড সেলঃ
রেড ব্লাড সেল বা লোহিত রক্ত কণিকার কাজ হচ্ছে ফুসফুস থেকে অক্সিজেন সরবরাহ করে কোষে পৌঁছে দেয়া এবং কোষ থেকে দূষিত কার্বনডাই অক্সাইড বহন করে ফুসফুসে নিয়ে যাওয়া।
আমাদের জানতে হবে কি কি কারনে বা কোন কোন অসুখে এই সকল পরিমাপকের কি কি পরিবর্তন হতে পারে, যেমন-
• রেড ব্লাড সেলের নরমাল ভ্যালু হচ্ছে প্রতি মাইক্রোলিটারে ৩.৫ থেকে ৫.৫ মিলিয়ন সেলস । রেড ব্লাড সেল কম থাকলে অ্যানিমিয়া হতে পারে। আর রেড ব্লাড সেল বেশি থাকলে ধরা হয় পলিসাইথেনমিয়া।
হিমোগ্লোবিনঃ লোহিত-কণিকার একটি প্রয়োজনীয় অংশ হল হিমোগ্লোবিন। হিমোগ্লোবিনই অক্সিজেনকে বহন করে এবং লোহিত-কণিকার রক্তবর্ণের জন্য দায়ী। পরীক্ষায় হিমোগ্লোবিনের পরিমান সাধারণভাবে নির্দেশ করে দেহ কতটা অক্সিজেন পাচ্ছে। হিমোগ্লোবিনের নরমাল ভ্যালু একজন মানুষের বয়স ও লিঙ্গের উপর নির্ভর করে। তবে ল্যাব ভিত্তিক ফলাফল এদিক সেদিক হয়ে থাকে। তবে ধরে নেয়া হয় পুরুষের নরমাল ভ্যালু হচ্ছে ১৩.৫ থেকে ১৭.৫ গ্রাম পার ডেসিলিটার আর মহিলাদের ক্ষেত্রে ১২.৫ থেকে ১৫.৫ গ্রাম পার ডেসিলিটার। এই ভ্যালুর চেয়ে কম হলে অ্যানিমিয়া হয়ে থাকে।
হেমাটোক্রিটঃ লোহিত কণিকা রক্তের কতটা অংশ (ঘনায়তন বা volume-এর মাপে) জুড়ে আছে সেটি বোঝাতে এটি ব্যবহার করা হয়। এটি মাপা হয় শতাংশ বা পার্সেন্টেজ হিসেবে। যদি হেমাটোক্রিট ৪০ বলা হয়, তার মানে রক্তের ঘনায়তনের ১০০ ভাগের ৪০ ভাগ লোহিত কণিকাপূর্ণ।
এম সি ভি (MCV) প্রতিটি লোহিত রক্ত কণিকার স্বাভাবিক আয়তন বোঝা যায়।
এম সি এইচ সি (MCHC) প্রতিটি লোহিত রক্ত কনিকার মধ্যে হিমোগ্লোবিনের ঘনত্ব নির্দেশ করে।
এম সি এইচ (MCH) প্রতিটি লোহিত রক্ত কনিকার পরিমান নির্দেশ করে।
• রেড ব্লাড সেলের নরমাল ভ্যালু হচ্ছে প্রতি মাইক্রোলিটারে ৩.৫ থেকে ৫.৫ মিলিয়ন সেলস । রেড ব্লাড সেল কম থাকলে অ্যানিমিয়া হতে পারে। আর রেড ব্লাড সেল বেশি থাকলে ধরা হয় পলিসাইথেনমিয়া।
হিমোগ্লোবিনঃ লোহিত-কণিকার একটি প্রয়োজনীয় অংশ হল হিমোগ্লোবিন। হিমোগ্লোবিনই অক্সিজেনকে বহন করে এবং লোহিত-কণিকার রক্তবর্ণের জন্য দায়ী। পরীক্ষায় হিমোগ্লোবিনের পরিমান সাধারণভাবে নির্দেশ করে দেহ কতটা অক্সিজেন পাচ্ছে। হিমোগ্লোবিনের নরমাল ভ্যালু একজন মানুষের বয়স ও লিঙ্গের উপর নির্ভর করে। তবে ল্যাব ভিত্তিক ফলাফল এদিক সেদিক হয়ে থাকে। তবে ধরে নেয়া হয় পুরুষের নরমাল ভ্যালু হচ্ছে ১৩.৫ থেকে ১৭.৫ গ্রাম পার ডেসিলিটার আর মহিলাদের ক্ষেত্রে ১২.৫ থেকে ১৫.৫ গ্রাম পার ডেসিলিটার। এই ভ্যালুর চেয়ে কম হলে অ্যানিমিয়া হয়ে থাকে।
হেমাটোক্রিটঃ লোহিত কণিকা রক্তের কতটা অংশ (ঘনায়তন বা volume-এর মাপে) জুড়ে আছে সেটি বোঝাতে এটি ব্যবহার করা হয়। এটি মাপা হয় শতাংশ বা পার্সেন্টেজ হিসেবে। যদি হেমাটোক্রিট ৪০ বলা হয়, তার মানে রক্তের ঘনায়তনের ১০০ ভাগের ৪০ ভাগ লোহিত কণিকাপূর্ণ।
এম সি ভি (MCV) প্রতিটি লোহিত রক্ত কণিকার স্বাভাবিক আয়তন বোঝা যায়।
এম সি এইচ সি (MCHC) প্রতিটি লোহিত রক্ত কনিকার মধ্যে হিমোগ্লোবিনের ঘনত্ব নির্দেশ করে।
এম সি এইচ (MCH) প্রতিটি লোহিত রক্ত কনিকার পরিমান নির্দেশ করে।
চলুন এবার জানা যাক অ্যানিমিয়ার কারনসমূহঃ
আমাদের দেশে প্রধান অ্যানিমিয়ার কারন হল
- আয়রনের ঘাটতি। (iron deficiency)
- থ্যালাসেমিয়া
- কৃমি
- পরিমানমত রক্ত তৈরি না হওয়া
- দীর্ঘ মেয়াদী কোন অসুখ থাকলে
- ব্লাড ক্যানসার হলে
- অপুষ্টি
- অর্শ, গেজ, অন্ত্রে ক্যানসার থাকলে
- দীর্ঘ দিন রক্ত ক্ষরণ হলে যেমন- দীর্ঘ মাসিক, পাইলস
আমাদের দেশে প্রধান অ্যানিমিয়ার কারন হল
- আয়রনের ঘাটতি। (iron deficiency)
- থ্যালাসেমিয়া
- কৃমি
- পরিমানমত রক্ত তৈরি না হওয়া
- দীর্ঘ মেয়াদী কোন অসুখ থাকলে
- ব্লাড ক্যানসার হলে
- অপুষ্টি
- অর্শ, গেজ, অন্ত্রে ক্যানসার থাকলে
- দীর্ঘ দিন রক্ত ক্ষরণ হলে যেমন- দীর্ঘ মাসিক, পাইলস
আমাদের দেশে বহুল প্রচলিত অ্যানিমিয়ার কারন হলো আয়রনের ঘাটতি, যেটা মহিলাদের সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে।
★আসুন এখন আলোচনা করা যাক আয়রনের ঘাটতি কেন হয় সেটা নিয়ে। আমাদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি তিন ধরনের হতে পারেঃ
- কম আয়রন জাতীয় খাদ্য গ্রহন,
- অন্ত্র হতে শরীরে আয়রন কম শোষিত হওয়া,
- ব্লাড ক্ষয় হওয়া।
★আসুন এখন আলোচনা করা যাক আয়রনের ঘাটতি কেন হয় সেটা নিয়ে। আমাদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি তিন ধরনের হতে পারেঃ
- কম আয়রন জাতীয় খাদ্য গ্রহন,
- অন্ত্র হতে শরীরে আয়রন কম শোষিত হওয়া,
- ব্লাড ক্ষয় হওয়া।
কম আয়রন জাতীয় খাদ্য গ্রহনঃ
আমাদের দেশের বেশিরভাগ মেয়েরাই আয়রনের ঘাটতিতে ভোগে। আর এই আয়রনের ঘাটতি পূরণ করার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো আয়রন জাতীয় খাবার বেশি বেশি খাওয়া। কোন কোন খাবারে আয়রন বেশি আছে সেটি পরীক্ষা করার একটি সহজ উপায় আছে। উপায়টি হলো, যে সকল খাবার কেটে রাখলে কিছুক্ষণ পর কালো হয়ে যায় বুঝতে হবে সেসকল খাবারে আয়রন আছে যেমন, বেগুন, কচুশাক, কাঁচকলা, আপেল ইত্যাদি। এছাড়াও গরুর কলিজা, মাংস, দুধ, ডিম, পাকা কলা ইত্যাদি এগুলোতে আয়রন আছে।
আমাদের দেশের বেশিরভাগ মেয়েরাই আয়রনের ঘাটতিতে ভোগে। আর এই আয়রনের ঘাটতি পূরণ করার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো আয়রন জাতীয় খাবার বেশি বেশি খাওয়া। কোন কোন খাবারে আয়রন বেশি আছে সেটি পরীক্ষা করার একটি সহজ উপায় আছে। উপায়টি হলো, যে সকল খাবার কেটে রাখলে কিছুক্ষণ পর কালো হয়ে যায় বুঝতে হবে সেসকল খাবারে আয়রন আছে যেমন, বেগুন, কচুশাক, কাঁচকলা, আপেল ইত্যাদি। এছাড়াও গরুর কলিজা, মাংস, দুধ, ডিম, পাকা কলা ইত্যাদি এগুলোতে আয়রন আছে।
অন্ত্র হতে শরীরে আয়রন কম শোষিত হওয়া:
যদি অন্ত্রে কৃমি থাকে বা কোন অসুখ থাকে তাহলে সেগুলো লৌহ শোষণে বাধা দেয়।
যদি অন্ত্রে কৃমি থাকে বা কোন অসুখ থাকে তাহলে সেগুলো লৌহ শোষণে বাধা দেয়।
ব্লাড ক্ষয় হওয়াঃ
মেয়েদের যেহেতু প্রতি মাসে রক্ত ক্ষয় হয় তাই রক্ত স্বল্পতার ঝুঁকি থাকে। তবে স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে রক্ত ক্ষরণ বেশি হলে অথবা আয়রন জাতীয় খাবারের ঘাটতি থাকলে অ্যানিমিয়ার ঝুঁকি থাকে। আর এইজন্য মেয়েদের বেশি বেশি আয়রন খাওয়া উচিত। এছাড়াও খাদ্যনালী, শ্বাসনালী, মূত্রনালি হতে রক্ত ক্ষরণ হলে রক্ত স্বল্পতা হতে পারে।
মেয়েদের যেহেতু প্রতি মাসে রক্ত ক্ষয় হয় তাই রক্ত স্বল্পতার ঝুঁকি থাকে। তবে স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে রক্ত ক্ষরণ বেশি হলে অথবা আয়রন জাতীয় খাবারের ঘাটতি থাকলে অ্যানিমিয়ার ঝুঁকি থাকে। আর এইজন্য মেয়েদের বেশি বেশি আয়রন খাওয়া উচিত। এছাড়াও খাদ্যনালী, শ্বাসনালী, মূত্রনালি হতে রক্ত ক্ষরণ হলে রক্ত স্বল্পতা হতে পারে।
ডব্লিউবিসি (WBC) বা হোয়াইট ব্লাড সেলঃ
শ্বেত রক্ত কণিকা বা ডব্লিউবিসিকে ডিজিজ ফাইটিং সেল (leukocytes) বলা হয় যেটা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। যখন কোনো বাইরের অথবা অপরিচিত ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া শরীরে প্রবেশ করে WBC সেটাকে সনাক্ত করে এবং রোগ বিস্তার করার আগেই ধ্বংস করে। যেহেতু আমাদের শরীরকে অনেক ধরনের জীবাণুর সাথে লড়াই করতে হয় সেহেতু শ্বেত রক্ত কনিকা অনেক ধরনের হয়ে থাকে। এই বিভিন্ন ধরনের WBC কাজ একটি আরেকটি থেকে আলাদা। এরা তাদের নিজস্ব গতিতে কাজ করে এবং শ্বেত রক্ত কনিকার ধরন ৫ টি:
- নিউট্রোফিল
- লিম্ফোসাইট
- মনোসাইট
- ইউসিনোফিল
- বেসোফিল।
গড়ে স্বাভাবিক মাত্রায় প্রতি মাইক্রোলিটারে ৪০০০ থেকে ১১০০০ থাকতে পারে। নবাগত শিশুদের এর চেয়ে অনেক বেশি থাকে কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে সেটা স্বাভাবিক মাত্রায় চলে আসে।
৫ ধরনের শ্বেত রক্ত কনিকার নরমাল ভ্যালুর স্বাভাবিক মাত্রা শতকরা হলো:
নিউট্রোফিল: ৪৫ - ৭৫ %
লিম্ফোসাইট: ২০ - ৪০%
ইউসিনোফিল: কমপক্ষে ৭ %
মনোসাইট: ১ - ১০ %
বেসোফিল: কমপক্ষে ১ %
এই ৫ ধরনের মধ্যে লিম্ফোসাইটের প্রধান কাজ হলো এন্টিবডি তৈরি করা যেটা ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং আগত ভাইরাসের ঝুঁকি এড়াতে সহায়তা করে, নিউট্রোফিল হলো শক্তিশালী শ্বেত রক্ত কনিকা যেটা ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাককে ধ্বংস করে,
বেসোফিল শরীরকে বিভিন্ন এলার্জির সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
ইউসিনোফিলের দায়িত্ব হলো বিভিন্ন ক্যানসারের এবং পরজীবী কোষগুলোকে ধ্বংস করা। আবার যখন দেহে কোনো নির্দিষ্ট জীবাণু আক্রমণ করে তখন মনোসাইট দ্রুত সেটাকে প্রতিরোধ করে যেমন- ক্যানসারের জীবাণু, মৃত কোষ ইত্যাদি।
এই শ্বেত রক্ত কনিকার কোনটি বেড়ে বা কমে গেলে এই সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। যেমন ধরুন, বেসোফিলের নরমাল ভ্যালু থেকে কম থাকলে শরীর এলার্জির সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারবে না এবং শরীরে এলার্জি বেড়ে যাবে।
বেড়ে বা কমে যাওয়ার কারণঃ
যেহেতু শ্বেত রক্ত কনিকা হচ্ছে ফাইটিং সেল, তাই আপনি হয়ত ভাবতে পারেন এটা বাড়লেই তো ভাল। কিন্তু সবকিছুর একটা সীমাবদ্ধতা আছে তেমনি WBC স্বাভাবিক পরিমানে থাকা দরকার। যদিও এটি বেড়ে যাওয়া কোনো নিদিষ্ট রোগকে বোঝায় না তবুও এটি কিছু কিছু সমস্যাকে নির্দেশ করে যেমন- ইনফেকশন, মানসিক চাপ, প্রদাহ (inflammation), এলার্জি, শরীরে ব্যথা, মাথাব্যথা, লিউকেমিয়া, ধূমপান, ঘন ঘন জ্বর অথবা এই জাতীয় সমস্যা। যাদের WBC বেশি থাকে তাদের অবস্থাকে বলা হয় লিউকো্সাইটোসিস এবং এটির উপসর্গ হতে পারে- জ্বর, হতাশা, রক্ত-ক্ষরণ, ওজন কমে যাওয়া এবং শরীরে ব্যথা।
নরমাল ভ্যালু থেকে যদি WBC কম থাকে তাহলে ধরে নেয়া হয় আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। এই অবস্থাকে মেডিকেলের ভাষায় লিউকোপেনিয়া (leukopenia) বলা হয়। এক্ষেত্রে আপনার ডাক্তার আপনার শারীরিক পরীক্ষাগুলো করে আপনার উপসর্গগুলো চিহ্নিত করার সাথে সাথে আপনার পূর্ববর্তী মেডিকেল হিষ্ট্রি নিরীক্ষা করে বের করার চেষ্টা করবে যে, আপনার WBC কমার কারণগুলো কি কি। কিছু উপসর্গ WBC কমে যাওয়ার কারণগুলোকে নির্দেশ করে। যেমন- বোন মেরুর সমস্যা, রিমিটয়েড আর্থ্রাইটিস (যেটার ফলে জয়েন্টে ব্যথা হয়), অটোইমিউন ব্যাধি (autoimmune disease শরীরকে নিজের ফাইটিং সেল ধ্বংস করার নির্দেশ দেয়), কিছু ধরনের ইনফেকশন যেমন- এইচ আই ভি, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া বেশি এন্টিবাইওটীক সেবন এবং সুষম খাদ্য, ভিটামিন, ফলিক এসিড ঠিকমত না খাওয়া।
স্বাভাবিক পরিমাণ কেন দরকারঃ
শ্বেত রক্তকণিকার কাজ বিশাল। এই ৫ ধরনের হোয়াইট ব্লাড সেল শরীরে ভিন্ন ভিন্ন কাজ করে থাকে। বোঝার সুবিধার জন্য বলা যায় স্বাভাবিক শ্বেত রক্ত কনিকা রক্ত জীবাণুমুক্ত রাখার জন্য অতীব জরুরি। শ্বেত রক্ত কনিকাকে তুলনা করা যাক টহল পুলিশের সাথে। টহলরত অবস্থায় পুলিশ যেমন দায়িত্ব পালন করে তেমনি হোয়াইট ব্লাড সেল জীবাণু ধ্বংস করে শরীরকে নিরাপদ রেখে দায়িত্ব পলান করে। শরীর রক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের শ্বেত-কণিকার বিভিন্ন ভূমিকা আছে। তাই এদের সংখ্যাগুলো শরীরের প্রতিরোধ-ব্যবস্ থা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য দেয়। বিভিন্ন শ্বেত-কণিকার কম বা বেশির ওপর নির্ভর করে কি জাতীয় সংক্রমণ, বোঝা যায় এটি অ্যালার্জি বা টক্সিনজনিত প্রতিক্রিয়া না লিউকোমিয়া ইত্যাদি। তাই রক্ত কনিকার পরিমাণটা স্বাভাবিক রাখা জরুরি।
ন্ট জাতীয় খাবার যেমন- ভিটামিন সি ও ই, ফাইবার( লাল আটা, ঢেঁড়স, কলা), ক্যালসিয়াম ( দুধ, ডিম, মাংসের মজ্জা, কলা), মাছের তেল (omega-3) খাওয়া উচিত। যাদের WBC লেভেল কম তাদের জন্য রসুন, আঙ্গুর, সয়া প্রোটিন, গ্রিন টি, ভিটামিন এ, টকদই, বাদাম এবং বিভিন্ন ফল ও সবজি লেভেল বাড়াতে সহায়তা করবে। তবে এসব ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ বা খাদ্য গ্রহন করা সবচেয়ে শ্রেয়।
প্লাটেলেট বা থ্রম্বোসাই - (Platelet or Thrombocyte):
এটি হল রক্তের ক্ষুদ্রতম কণিকা। রক্ত জমাট বাঁধার ব্যাপারে এগুলির মস্ত ভূমিকা আছে। যখন কেটে রক্ত ঝরতে থাকে, তখন এই প্ল্যাটেলেট আকারে বৃদ্ধি পেয়ে একসঙ্গে জমাট বেঁধে একটা আঠার মত পদার্থে পরিণত হয়। সেটাই কাটা জায়গায় আটকে রক্তক্ষরণ বন্ধ করে। প্ল্যাটেলেট খুব কম থাকলে, রক্ত পড়তে শুরু করলে, সেটা বন্ধ হতে চাইবে না। আবার যদি খুব বেশি প্ল্যাটেলেট থাকে, তাহলে দেহের রক্ত-বাহী নালীগুলিতে জমে রক্ত চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করবে।
- নিউট্রোফিল
- লিম্ফোসাইট
- মনোসাইট
- ইউসিনোফিল
- বেসোফিল।
গড়ে স্বাভাবিক মাত্রায় প্রতি মাইক্রোলিটারে ৪০০০ থেকে ১১০০০ থাকতে পারে। নবাগত শিশুদের এর চেয়ে অনেক বেশি থাকে কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে সেটা স্বাভাবিক মাত্রায় চলে আসে।
৫ ধরনের শ্বেত রক্ত কনিকার নরমাল ভ্যালুর স্বাভাবিক মাত্রা শতকরা হলো:
নিউট্রোফিল: ৪৫ - ৭৫ %
লিম্ফোসাইট: ২০ - ৪০%
ইউসিনোফিল: কমপক্ষে ৭ %
মনোসাইট: ১ - ১০ %
বেসোফিল: কমপক্ষে ১ %
৫ ধরনের শ্বেত রক্ত কণিকার কাজঃ
বিভিন্ন ধরনের WBC এর কাজ বা দায়িত্ব একটি আরেকটি থেকে আলাদা। এই কাজ গুলোকে আপনি আমাদের দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সাথে তুলনা করতে পারেন। ধরুন আমাদের দেশে নৌবাহিনী, সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী সবাই প্রতিরক্ষা বাহিনী হলেও এদের কাজ বা দায়িত্ব আলাদা, ঠিক তেমনি বিভিন্ন ধরনের WBC কাজ বা দায়িত্ব একটি আরেকটি থেকে আলাদা।এই ৫ ধরনের মধ্যে লিম্ফোসাইটের প্রধান কাজ হলো এন্টিবডি তৈরি করা যেটা ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং আগত ভাইরাসের ঝুঁকি এড়াতে সহায়তা করে, নিউট্রোফিল হলো শক্তিশালী শ্বেত রক্ত কনিকা যেটা ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাককে ধ্বংস করে,
বেসোফিল শরীরকে বিভিন্ন এলার্জির সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
ইউসিনোফিলের দায়িত্ব হলো বিভিন্ন ক্যানসারের এবং পরজীবী কোষগুলোকে ধ্বংস করা। আবার যখন দেহে কোনো নির্দিষ্ট জীবাণু আক্রমণ করে তখন মনোসাইট দ্রুত সেটাকে প্রতিরোধ করে যেমন- ক্যানসারের জীবাণু, মৃত কোষ ইত্যাদি।
এই শ্বেত রক্ত কনিকার কোনটি বেড়ে বা কমে গেলে এই সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। যেমন ধরুন, বেসোফিলের নরমাল ভ্যালু থেকে কম থাকলে শরীর এলার্জির সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারবে না এবং শরীরে এলার্জি বেড়ে যাবে।
বেড়ে বা কমে যাওয়ার কারণঃ
যেহেতু শ্বেত রক্ত কনিকা হচ্ছে ফাইটিং সেল, তাই আপনি হয়ত ভাবতে পারেন এটা বাড়লেই তো ভাল। কিন্তু সবকিছুর একটা সীমাবদ্ধতা আছে তেমনি WBC স্বাভাবিক পরিমানে থাকা দরকার। যদিও এটি বেড়ে যাওয়া কোনো নিদিষ্ট রোগকে বোঝায় না তবুও এটি কিছু কিছু সমস্যাকে নির্দেশ করে যেমন- ইনফেকশন, মানসিক চাপ, প্রদাহ (inflammation),
নরমাল ভ্যালু থেকে যদি WBC কম থাকে তাহলে ধরে নেয়া হয় আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। এই অবস্থাকে মেডিকেলের ভাষায় লিউকোপেনিয়া (leukopenia) বলা হয়। এক্ষেত্রে আপনার ডাক্তার আপনার শারীরিক পরীক্ষাগুলো করে আপনার উপসর্গগুলো চিহ্নিত করার সাথে সাথে আপনার পূর্ববর্তী মেডিকেল হিষ্ট্রি নিরীক্ষা করে বের করার চেষ্টা করবে যে, আপনার WBC কমার কারণগুলো কি কি। কিছু উপসর্গ WBC কমে যাওয়ার কারণগুলোকে নির্দেশ করে। যেমন- বোন মেরুর সমস্যা, রিমিটয়েড আর্থ্রাইটিস (যেটার ফলে জয়েন্টে ব্যথা হয়), অটোইমিউন ব্যাধি (autoimmune disease শরীরকে নিজের ফাইটিং সেল ধ্বংস করার নির্দেশ দেয়), কিছু ধরনের ইনফেকশন যেমন- এইচ আই ভি, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া বেশি এন্টিবাইওটীক সেবন এবং সুষম খাদ্য, ভিটামিন, ফলিক এসিড ঠিকমত না খাওয়া।
স্বাভাবিক পরিমাণ কেন দরকারঃ
শ্বেত রক্তকণিকার কাজ বিশাল। এই ৫ ধরনের হোয়াইট ব্লাড সেল শরীরে ভিন্ন ভিন্ন কাজ করে থাকে। বোঝার সুবিধার জন্য বলা যায় স্বাভাবিক শ্বেত রক্ত কনিকা রক্ত জীবাণুমুক্ত রাখার জন্য অতীব জরুরি। শ্বেত রক্ত কনিকাকে তুলনা করা যাক টহল পুলিশের সাথে। টহলরত অবস্থায় পুলিশ যেমন দায়িত্ব পালন করে তেমনি হোয়াইট ব্লাড সেল জীবাণু ধ্বংস করে শরীরকে নিরাপদ রেখে দায়িত্ব পলান করে। শরীর রক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের শ্বেত-কণিকার বিভিন্ন ভূমিকা আছে। তাই এদের সংখ্যাগুলো শরীরের প্রতিরোধ-ব্যবস্
কিভাবে WBC নরমাল ভ্যালুতে রাখা যায়ঃ
আমরা কি খাচ্ছি সেটা আমাদের হোয়াইট ব্লাড সেলে অনেক প্রভাব পড়ে। এটাকে নরমাল ভ্যালুতে রাখার জন্য ওষুধ ছাড়াও আমারা খাবারের মাধ্যমে নরমাল রাখার চেষ্টা করতে পারি। আমরা কিছু খাবার পরিহার করতে পারি যেমন- চর্বি জাতীয় খাবার, বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার, অতিরিক্ত চিনি বা লবন, ফাস্ট ফুড ইত্যাদি। বেশি বেশি অ্যান্টিঅক্সিডেপ্লাটেলেট বা থ্রম্বোসাই - (Platelet or Thrombocyte):
এটি হল রক্তের ক্ষুদ্রতম কণিকা। রক্ত জমাট বাঁধার ব্যাপারে এগুলির মস্ত ভূমিকা আছে। যখন কেটে রক্ত ঝরতে থাকে, তখন এই প্ল্যাটেলেট আকারে বৃদ্ধি পেয়ে একসঙ্গে জমাট বেঁধে একটা আঠার মত পদার্থে পরিণত হয়। সেটাই কাটা জায়গায় আটকে রক্তক্ষরণ বন্ধ করে। প্ল্যাটেলেট খুব কম থাকলে, রক্ত পড়তে শুরু করলে, সেটা বন্ধ হতে চাইবে না। আবার যদি খুব বেশি প্ল্যাটেলেট থাকে, তাহলে দেহের রক্ত-বাহী নালীগুলিতে জমে রক্ত চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করবে।
প্ল্যাটেলেট বাড়লে বা কমলে কি হতে পারেঃ
কিছু লক্ষণের মাধ্যমে প্ল্যাটেলেট কম না বেশি সেটা বোঝা যায়। অনেক সময় বর্ধিত প্লীহা বা বদমেজাজ প্ল্যাটেলেট কমে যাওয়া নির্দেশ করে। প্লীহা হলো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যেটা জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করে। কিন্তু যদি এই অঙ্গটি বেড়ে যায় তখন এটি অনেক প্ল্যাটেলেটকে ক্ষতি করতে পারে যার কাড়নস্বরূপ রক্ত সঞ্চালন কমে যেতে পারে এবং রক্ত ক্ষরণ ব্যাধি হতে পারে। যেহেতু প্ল্যাটেলেটস মাত্র ১০ দিন বাঁচে তাই দেহ যথেষ্ট পরিমানে প্ল্যাটেলেট তৈরি করতে পারে না এর পরিমান বেশি রাখার জন্য। ইনফেকশনের কারনে প্ল্যাটেলেটস কমে যেতে পারে। ডেঙ্গু জ্বরে প্ল্যাটেলেটের পরিমান কমে যায়। যেহেতু প্ল্যাটেলেটস বোন মেরুতে গঠিত হয় তাই বোন মেরুতে ইনফেকশন হলে কোষগুলো দমন হতে থাকে যেটা প্ল্যাটেলেটের ভ্যালু কমিয়ে দেয়। আবার কেমোথেরাপি দিলে বোন মেরু প্রভাবিত হয় যেটা প্ল্যাটেলেটের ও হোয়াইট ব্লাড সেলের ব্যাঘাত ঘটায়। ব্লাডে প্লাটেলেট বেশি আছে সেটি বোঝা যায় কিছু উপসর্গ থেকে যেমন- মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরা, বুকে ব্যাথা, দুর্বল অনুভব করা, ক্ষনিকের জন্য দৃষ্টি শক্তি পরিবর্তন হওয়া, হাতে ও পায়ে অসাড়তা অনুভব করা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। যেহেতু এই উপসর্গগুলো খুব মারাত্মক আকারে দেখা দেয় না তাই অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না যে রক্তে প্ল্যাটেলেটের পরিমান বেশি আছে।
Tags:
চিকিৎসা