কেন গান মাথায় আটকে যায়


Two years, and just like that
My head still takes me back
Thought it was done
But I guess it's never really over
এই লাইনগুলো Katy Perry এর never really over গানের। সকাল থেকেই এই অংশটা মাথায় ঘুরছে, ব্রেইনে বারবার রিপিট হচ্ছে। আমরা সবাই কমবেশি এই অবস্থার সাথে পরিচিত। ইংরেজিতে এর একটা গালভরা নাম আছে earworm। বাংলায় এই অবস্থাকে কি বলে তা আমার জানা নেই। তবে earworm এর বাংলা দাঁড়াবে কানেরপোকা আসলে এটা কোনো পোকা নয় যেটা কানের ভেতর ঢুকে গান গাইতে থাকে। আসলে কোনো গানের lyrics মাথায় আঁটকে যাওয়াকে বলে earworm।একে branworm , stuck song syndrome ও বলা হয়।এটা খুবই কমন এবং অনেক পুরোনো।প্রায় 99% লোক প্রায়ই এটার সম্মুখীন হন।প্রাচীন অনেক বইতে একে উল্লেখ করা হয়েছে The piper's magget নামে। বিজ্ঞানীরা এটাকে involuntary musical imegary টার্মেও অভিহিত করেন।এটা আমাদের আমাদের involuntary thoughts এর ফলাফল।আমাদের ভাবনাচিন্তার শতকরা ৩০-৪০ ভাগ involuntary যেমন উদাহরণ হিসেবে যদি বলি আপনি রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন এমন সময় দেখলেন অনেকেই ফুচকা খাচ্ছে এটা দেখে আপনারও খেতে মন চাইল। এর উপর আপনার কন্ট্রোল নেই। এটা হলো involuntary thought.

Darmouth University গবেষকরা MRI scaning পদ্ধতির মাধ্যমে দেখেন যে যখন কারো সামনে পরিচিত কোনো গান প্লে করা হয় সেটা অডিটরি কর্টেক্সকে অ্যাক্টিভ করে কিন্তু গান শেষ হওয়ার পরও অনেক সময় সেটা অটোমেটিক্যালি অ্যাক্টিভ থাকে এবং সেসময়ই earworm হয়। বিজ্ঞানীরা এখনো পুরোপুরি এর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত নন তবে এটা zeigarnik effect এর সাথে রিলেটেভ। bluma zeigarnik একজন সোভিয়েত সায়েটিস্ট যিনি পর্যবেক্ষন করে দেখেন রেস্টুরেন্টে সার্ভাররা যেসব কাস্টমারকে খাবার ডেলিভারি করেনি তাদের অর্ডার বেশি মনে থাকে।আর যে ডেলিভারিটা হয়েছে সেটা সাধারণত ভুলে যায় অর্থাৎ যে কাজটা চলমান আছে সেটার কথাই আমরা বেশি মনে রাখতে পারি আর শেষ হয়ে গেলে ব্রেইন মনে করে সেই ইনফরমেশনের কোনো দরকার নেই তাই অপ্রয়োজনীয় মেমোরির ভান্ডারে ফেলে দেয়।কিছু বিজ্ঞানী একদল লোকের সামনে গান প্লে করলেন যার কিছু গান অর্ধেক আর কিছু গান সম্পূর্ণ প্লে করা হলো। এতে দেখা গেল প্রায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে অনেকেরই যেসব গান অর্ধেক প্লে করা হয়েছিল তা মাথায় আটকে গেছে অর্থাৎ ব্রেইন এটাকে অসম্পূর্ণ কাজ বলে মার্ক করেছে এবং ফিরে এসেছে ।এটা প্রমান করে zeigarnik effect সঠিক।
কোন কোন গানের earworm বেশি হয় তা নিদিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়।কোন গানের একটা নিদিষ্ট পার্ট সাধারণত আটকে যায় যাকে বলা হয় চুম্বক অংশ বা catchy part. কোন গান বেশি catchy হয় এটা অনেক কিছুর নির্ভর করে যেমনঃ ব্যক্তির মিউজিক্যাল টেস্ট , রিদম, মিউজিক্যাল ইনসট্রুমেন্ট, বিট, পিচ, সাউন্ড ইফেক্ট, ইমোশন, লিরিক্স, আনএক্সপেক্টেড মেলোডি ইত্যাদি। bbc এর একটি প্রোগ্রামে সবার earworm হওয়া গান সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে দেখা যায় প্রায় সব গানই স্বতন্ত্র। Williamson নামে এক ব্যক্তি ২৫০০ জনের ডেটা কালেক্ট করে দেখেন যে মাত্র ১৭-১৮ জনেরটা শুধু একই।যখন সবাই কুল মুডে থাকে তখনই সাধারণত earworm হয়।তবে নাথান জোনস নামের এক মহিলা দাবি করেন ১৬ বছর বছরে প্রচন্ড স্ট্রেসফুল একটা এক্সাম দেবার সময় প্রথম earworm এর শিকার হন। এরপর থেকে যেকোনো স্ট্রেসফুল সিচুয়েশনে তার exactly ওই গানটাই মাথায় চলে আসে। রিসেন্টলি Psychology of music জার্নালে প্রকাশিত আর্টিকেলে বলা হয়েছে earworm সাধারণত ৩০ মিনিট স্থায়ী হয়। তবে ক্ষেত্রবিশেষে কয়েকদিন পর্যন্ত থাকতে পারে। অনেকসময় সময় সকালবেলা ঘুম থেকে উঠার পরই দেখা যায় গান মাথায় ঢুকে বসে আছে।
Earworm আমার নিজের কাছে পার্সোনালি ভালোই লাগে।প্রতি ৪ জনের ৩ জনই একে এনজয়এবল সিচুয়েইশন বলে মত প্রকাশ করেন। তবে ঘন্টার পর ঘন্টা এটা ঘটলে বিরক্তি লাগে।"বিষে বিষে বিষক্ষয়" প্রবাদ বাক্যটা তো আমরা শুনেছি তেমনি earworm থেকে থেকে মুক্তি উপায় হলো অন্য গান শোনা। এতে কাজ না হলে সুইংগাম চিবোতে পারেন।অথবা ম্যাথমেটিক্যাল কোনো প্রবলেইম, ধাঁধা বা পাজলে ব্রেইনকে বিজি রাখতে পারেন। গবেষকরা কিছু earworm এর শিকার লোকদের soduku সহ বিভিন্ন পাজল সলভ করতে দেন। দেখা যায় খুব ইজি আর খুব হার্ড পাজলএ কোনো কাজ হয়নি। তাই মিডিয়াম লেভেলের পাজল হওয়া চাই বেশি কঠিন হলে ব্রেইন হাল ছেড়ে দিবে আর সেটা কাজে আসবে না। আবার নাম্বার পাজলের চেয়ে ওয়ার্ড পাজল বেশি কাজ করে।এনাগ্রাম সলভ করাও যেতে পারে।এমবকি কিছু মনোযোগ দিয়ে পড়াও এটা দূর করে দিতে পারে।এগুলোর সবই গেল distraction method কারণ সেইম প্রসেসে কাজ করে ইয়াওর্মের সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করে।এছাড়া zeigarnik effect এর সহায়তাও নিতে পারেন। কিভাবে? একটা গানের কিছু লাইন জানেন জন্যেই earworm হচ্ছে তাহলে পুরো গানের লিরিক্স ভালো করে শুনুন। একে বলা হয় engagement menthod.তাছাড়া গানটা অন্যদের সাথে শেয়ার করলে কাজে দিতে পারে

Shuvo Salauddin

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম