কি শব্দটা চেনা চেনা লাগলো???হুম অনেকেই হয়তো শুনে থাকবেন। আর যারা শুনেন নি তাদের বলছি,"বাইনোরাল বিট হলো এমন একধরনের আওয়াজ যা আপনার দুই কানের ফ্রেকুয়েন্সির পার্থক্য যা ব্রেইন গ্রহণ করে থাকে"তাকে বুঝিয়ে থাকে।
সহজ করে বলি....ধরুন আপনার হেডসেটের কানের এক অংশে বাজছে ৩০০হার্জের শব্দ আর অন্য কানের অংশে বাজছে ৩১০ হার্জের শব্দ।তাহলে বাইনোরাল বিট হবে ১০ । বাইনোরাল বিট =(বেশি ফ্রেকুয়েন্সি–কম ফ্রেকুয়েন্সি)।।। দ্যাটস অল।
আসলে আমাদের ব্রেইন গ্রহণ করবে ঐযে পার্থক্যের তরঙ্গটিকে। এখন আমাদের জানতে হবে ব্রেইনের ওয়েভ কতটি?? প্রধানত সখ্যাটি হলো ৫।
১.ডেল্টা তরঙ্গ: ১-৪ হার্জের শব্দকে বলা হয় ডেল্টা তরঙ্গ। যা আপনি ঘুমন্ত তবে স্বপ্ন বিহীন অবস্থায় থাকেন।
২.থিটা তরঙ্গ : ৪-৮ হার্জের শব্দকে বলা হয় থিটা তরঙ্গ। (REM-Rapid Eye Movement) এই অবস্তায় আপনি বিভোর ঘুমে থাকেন। অর্থাৎ আপনি সপ্ন দেখেন এবং আপনার চোখের পাতা খুব দ্রুত নড়াচড়া করে।
৩.আলফা তরঙ্গ: ৮-১৩ হার্জের শব্দকে বলা হয় আলফা তরঙ্গ। আপনি যখন রোলেক্সেশানে থাকেন।
৪.বিটা তরঙ্গ: ১৪-৩৮ হার্জের শব্দকে বলা হয় বিটা তরঙ্গ। মনোযোগী অবস্থা হচ্ছে এটি।
৫.গামা তরঙ্গ: ৩৮-১০০ হার্জের শব্দকে বলে গামা তরঙ্গ।
সত্যিই কি কাজ করে?
হ্যাঁ ভাই সত্যিই কাজ করে থাকে। এটা সায়েন্টিফিকেলি প্রমাণিত। সো এইদিকে আলোচনা দীর্ঘায়িত করবো না। কেননা ব্রেইনের নিউরন বৈদ্যুতিক তরঙ্গর মাধ্যমে আমাদের চিন্তাভাবনা, অনুভূতি, আচার আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তারেরা দিব্যি থেরাপি হিসেবে ব্যবহার করছে এই বাইনোরাল বিট।
কিভাবে কাজ করে??
ধরুন আপনার ঘুম আসছে না তখন আপনি চাইলেই বাইনোরাল বিটের সাহায্য নিতে পারেন। মানে কিভাবে??*ধরুন আপনার ঘুম আসছে না...তখন চাইলে শুনে নিতে পারেন ডেল্টা তরঙ্গ। যা আপনাকে ভালো হালকা একটা ঘুম উপহার দিতে পারে।
*ভালো একটা ঘুম চাই?? কানে লাগিয়ে দিন হেডফোনটা আর শুনতে থাকুন থিটা তরঙ্গ যা আপনাকে গভীর ঘুম দিতে সাহায্য করবে। (REM)
*সারাদিন অনেক ধকল গিয়েছে শরীরের উপর দিয়ে।খুব খুবই ক্লান্ত.. ….শুনে ফেলুন না আলফা তরঙ্গ।
*সামনে এক্সাম কিন্তু পড়াশোনায় কোনোভাবেই মন বসাতে পারছেন না???তাহলে আপনার জন্য বিটা তরঙ্গ এনাফ। যা আপনাকে মনোযোগী হতে সাহায্য করবে।
কতটা উপকারি এটি???
১.আপনার দুঃশ্চিন্তা কমাতে সাহায্য করবে।২.আপনার মনোযোগ বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারবে।
৩.আপনার স্মৃতি শক্তি বাড়াতে পারে।
৪.আপনার মানসিক অবস্থা ও ইমোশনের উপরে প্রভাব রাখে।যা অবশ্যই ইতিবাচক।
৫.আপনার সৃজনশীলতা বাড়াতে পারে এই বাইনোরাল বীট।
৬.আপনার ব্যাথা কমাতেও সাহায্য করে!!!!!!
৭.মেডিটেশনের ক্ষেত্রে বলতে গেলে প্রায় অপরিহার্য।
৮.আপনার শরীরের নমনীয়তা বৃদ্ধি করতে পারে।
৯.আপনার ঘুমের অবস্থার উন্নয়ন সাধন করবে।
আপনারা ভাবতেই পারেন ডেট ছাড়া গাঁজা খেয়েছি বিধায় এই ধরনের কথাবার্তা তাই না??? শব্দ ব্রেইনের লগে... কেমনে কী?? হরমোনর উপর কি কোনও প্রভাব আছে আদও??
পরিক্ষার মাধ্যমে জানা যায় বাইনোরাল বিট কিছু হরমোন এর উপর প্রভাব রাখে। যেমন:করটিসল(মানসিক চাপ,দুঃশ্চিন্তা, হতাশা) নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
বাইনোরাল বিটের মাধ্যমে প্রায় ৭০-৮০% লোক এর উন্নয়ন করতে পেরেছে।
DHEA(dehydroepiandrosterone) (বয়স,রোগজীবাণু আটকানোতে সাহায্য করে) ৬৮%
মানুষ প্রায় এর ক্ষেত্রে উন্নয়ন করেছে।
মেলাটনিন যা আপনার শান্তিপূর্ণ ঘুমের জন্য দায়ী। আর এটা রোগীর দেহে প্রায় ৯৭.৭৭% বৃদ্ধি পেয়েছে বাইনোরাল বিটের মাধ্যমে।
কিভাবে কাজে লাগাবো??
>>এর ফল হাতেনাতে পাবেন না। এর জন্য সবচেয়ে বেশি যেটা দরকার সেটা হলো ধৈর্য। আপনি কমপক্ষে দিনে ৩০-৪৫ মিনিট শুনতে থাকুন ৬০ দিন ধরে।তারপর ফলাফল আপনি নিজেই পরখ করে নিন। তবে চারিদিকের পরিবেশ টা নির্জন হলে ভালো হয় আর আপনি যেনো এই সময়টা খুব শান্ত থাকেন।কোথায় পাবো???
------ইউটিউবে অনেক অনেক ভিডিও আছে। সার্চ করে আপনার পছন্দসই তরঙ্গ বেছে নিন।তবে সাউন্ড কিন্তু খুব কম অথবা খুব বেশি হবে না। (হেডসেট হলে সবচেয়ে ভালো হয়)পরিশেষে এটাই বলবো যে আপনার জীবন কিন্তু সত্যিই পাল্টে দিতে পারে এই বাইনোরাল বিট।