ইংল্যান্ডের কেএফসি এবং বাংলাদেশের কেএফসির মাঝে পার্থক্য বুঝার জন্য গতকাল উত্তরার একটি কেএফসি শাখায় লাঞ্চ করলাম এবং দুই কেএফসির মাঝে গুরুত্তপূর্ণ কিছু পার্থক্য উপলব্ধি করবার পরেই চিন্তা করলাম আপনাদের সাথে বিষয়টি শেয়ার করি।
⏺️প্রাইস : প্রাইসের দিক থেকে বলবো দুই দেশেই প্রাইস খুবই সিমিলার। আমি একটি জিঙ্গার বক্স মিল নিয়েছিলাম যার প্রাইস ইংল্যান্ডে ৬.৫ পাউন্ড অর্থাৎ ৮০০ টাকার সামান্য বেশি ; একই মিল বাংলাদেশে ৫০০ টাকা + ভ্যাট। অর্থাৎ বাংলাদেশে প্রাইস কিছুটা কম কিন্তু খুবই সিমিলার। উল্লেক্ষ : ইংল্যান্ডে মানুষের বেতন কমপক্ষে ২ লক্ষ যার কারণে কেএফসি কে দামি খাবার হিসেবে কনসিডার করা হয়না। কিন্তু বাংলাদেশের স্ট্যান্ডার্ডে কেএফসি কে মূল্যবান খাবার হিসেবেই দেখা হয়ে থাকে।
⏺️কোয়ান্টিটি : বাংলাদেশী কেএফসির বার্গার সাইজের দিকে ইংল্যান্ডের তুলনায় প্রায় দ্বিগুন। পক্ষান্তরে ইংল্যান্ডের সফ্ট ড্রিঙ্কস অনেক বড় সাইজের হয়। বাংলাদেশে মাত্র ২৫০ এমএল এর একটি পেপসি দেয়া হয়, অন্যদিকে ইংল্যান্ডে বিশাল বড় একটি গ্লাসে করে পেপসি সার্ভ করে যার অর্ধেকও আমি শেষ করতে পারিনা। ফ্রেঞ্চ ফ্রাইসও ইংল্যান্ডে বেশি দেয়া হয়। বাংলাদেশে ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস কোয়ান্টিটি খুবই ছোট। ইংল্যান্ডে দুটি সাইড দেয়া হয় : দুটি চিকেন উইংস এবং একটি কর্ন অথবা কোলেসলো। বাংলাদেশে শুধু একটি সাইড দেয়া হয় : ক্রিস্পি চিকেন ফ্রাইজ। সব মিলিয়ে আমি বলবো কোয়ান্টিটি খুবই সিমিলার।
⏺️সার্ভিস : এই একটি দিকে আমি ব্রিটিশ কেএফসি কে অনেক এগিয়ে রাখবো। মানুষ কেএফসির মত জায়গায় খেতে যায় দ্রুত খাওয়ার জন্য। ইংল্যান্ডে খাবার অর্ডার দেয়ার পর ২/৩ মিনিটের মধ্যেই খাবার রেডি পাওয়া যায় কারণ খাবার কন্টিনিউ বানানো হচ্ছে এবং কন্টিনিউ সেল হচ্ছে। বাংলাদেশে অর্ডার দেয়ার পর প্রায় ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়েছে যদিও রেস্টুরেন্টের ভিতর খুব বেশি ভিড় ছিলোনা। এতো লেট্ দেখে খুবই অবাক হয়েছি। শুধু যে লেট্ হয়েছে তাই না। আমাদের খাবারের আইটেমও তারা পুরোপুরি দিতে ভুলে গিয়েছিলো। খাবার নিয়ে টেবিলে গিয়ে দেখি এক্সট্রা চিকেন ফ্রাইজ দেয়নি, আমাকে আবার কাউন্টারে গিয়ে সবকিছু দেখতে হয়েছে ; তখন তারা সরি বলে আমাদের ফ্রাইজ গুলো আলাদা করে দিয়েছে। ইংল্যান্ডে এই ধরণের ঘটনা কখনোই ঘটেনি।
⏺️স্বাদ : এখন আসি মূল প্রসঙ্গে অর্থাৎ স্বাদ। দুই কেএফসির স্বাদ কি এক ? একদমই না। আকাশ আর পাতাল পার্থক্য। এই বিষয়ে বাংলাদেশী কেএফসি ৫-০ গোলের বিশাল ব্যাবধানে ম্যাচ জিতবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ইংল্যান্ডের কেএফসি খুবই সিম্পল। বার্গারের বানটি একদম ব্যাসিক , মাংস খুবই সাদা-মাটা এবং ক্রিস্পিও না। অন্যদিকে বাংলাদেশী কেএফসির বার্গার বানটাই খুব মজা। ভিতরের চিকেন অনেক ক্রিস্পি হয় এবং চিকেনের ভিতরেও মসলা দেয়া থাকে যার কারণে স্বাদটাই ভিন্ন হয়। একই কথা প্রযোজ্য ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ ও চিকেনের ক্ষেত্রেও। বাংলাদেশে সবকিছুই অনেক বেশি কড়া ভাজি হয়, ক্রিস্পি হয় এবং দ্বিগুন সুস্বাদু হয়।
⏺️সব মিলিয়ে দুই কেএফসির মধ্যে বাংলাদেশী কেএফসিকে বিজয়ী ঘোষণা করলাম। কারণ দুই কেএফসির স্বাদের পার্থক্য খুব বেশি। বাংলাদেশী কেএফসির স্বাদ দ্বিগুন না , ৫ গুন্ বেশি।
লিখাঃ ইয়াসির আরাফাত