বর্তমান যে পরিস্থিতি, সবাই মোটামুটি ভালোই আছো তা বুঝতেই পারি যেভাবে হোক আলসেমিতে দিন কাটছে বা নিজের ইচ্ছে মতোই। সবকিছুই ভালো আছে, কিন্তু ভালো নেই পড়ালেখা..
হ্যাঁ, সময়টাই এরকম। কিন্তু পুরো স্টুডেন্ট লাইফে এইরকম একটা অভিজ্ঞতা যে পেয়েছো, এটা ভাগ্যের ব্যাপারও বলতে পারো একরকম। বেশ সুযোগ ও ছিল..অনেকেই কাজে লাগিয়েছে আবার অনেকে কিছুই করেনি।
তবে এডমিশনের পড়ার জন্য উপযুক্ত একটা সময় ছিল, যারা স্বপ্ন দেখেছে তাদের স্বপ্নের পথটা আরেকটু সহজ হয়েছে। আশা করি বাকী সময়টুকুতে আর আলসেমি নয়, কারণ তুমি যে তোমার অজান্তেই পিছিয়ে পড়ছো...
আজ আমরা আলোচনা করবো হিসাববিজ্ঞান ২য় পত্রের ৭ম অধ্যায় "উৎপাদন ব্যয় হিসাববিজ্ঞান" নিয়ে। চলো শুরু করা যাক,
ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গুলোর মাঝে আমরা জানি,
কিছু আছে ক্রয়-বিক্রয়কারী ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান যারা অল্প মূল্যে উৎপাদনকারী থেকে পন্য ক্রয় করে তুলনামূলক বেশি মূল্যে ক্রেতা/ভোক্তাদের কাছে পন্য বিক্রয় করে।
আবার অনেকে আছেন যারা নিজেরাই পন্য উৎপাদন করে বিক্রয় করেন।
তো, আমাদের এই অধ্যায়ের মূল উদ্দেশ্যই হলো সেই উৎপাদনকারী ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলোর হিসাব প্রস্তুত করা।
"কাঁচামালকে উৎপাদিত পন্যে রুপান্তরকরণ সংক্রান্ত কার্যাবলী ও প্রক্রিয়াকে উৎপাদন বলে"
♻উৎপাদন কাজে যেসব ব্যয় হয় সেগুলোকে ব্রিটিশ হিসাববিজ্ঞানে দুইভাগে ভাগ করা হয়। ১) মুখ্য ব্যয় বিভাগ ২) উপরিব্যয় বিভাগ। মুখ্য ব্যয়ের উপাদানগুলো হলোঃ প্রত্যক্ষ কাঁচামাল, প্রত্যক্ষ শ্রম/মজুরি ও অন্যান্য প্রত্যক্ষ খরচ। উপরিব্যয়ের উপাদানগুলো হলোঃ পরোক্ষ কাঁচামাল, পরোক্ষ শ্রম/মজুরি ও অন্যান্য পরোক্ষ খরচ। উপরিব্যয় কে "কারাখানা উপরিব্যয়" নামেও অভিহিত করা হয়।
♻অন্যান্য প্রত্যক্ষ খরচঃ
প্রত্যক্ষ কাঁচামাল ও প্রত্যক্ষ শ্রম ছাড়া অন্যান্য যে-সব খরচ উৎপাদনের সাথে সরাসরি জড়িত থাকে তাদেরকে ব্রিটিশ হিসাববিজ্ঞানে অন্যান্য প্রত্যক্ষ খরচ নামে দেখানো হয়। যেমনঃ রয়্যালটি, বিদ্যুৎ খরচ।
♻কারখানা উপরিব্যয়ঃ
উৎপাদনের সাথে পরোক্ষভাবে সম্পর্কিত কারখানার ব্যয়সমূহকে কারখানা উপরিব্যয় বলা হয়। কারখানা উপরিব্যয়ের উপাদানগুলো নিচে দেয়া হলো,
◾পরোক্ষ কাঁচামাল— আসবাবপত্র তৈরিতে পেরেক, বার্নিশ; কাপড় তৈরিতে রং; যন্ত্রপাতি সচল রাখতে তেল/লুব্রিক্যান্ট ইত্যাদি।
◾পরোক্ষ শ্রম/মজুরি— কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, সুপারভাইজারের বেতন, গুদামরক্ষকের বেতন, ঝাড়ুদারের বেতন ইত্যাদি।
◾অন্যান্য পরোক্ষ খরচ— স্থায়ী সম্পত্তির অবচয়, দালান ও মেশিনের বিমা খরচ, কর/খাজনা, কারখানার মনিহারি ও বিদ্যুৎ খরচ ইত্যাদি।
♻উৎপাদন ব্যয়ঃ
এক্ষেত্রে উৎপাদন ব্যয় বিবরণী প্রস্তুতের ছকটা ভালোভাবে আয়ত্তে রাখতে হবে। এখান থেকে কিছু ছোট ম্যাথ আসবে। যেমনঃ মূখ্য ব্যয় নির্ণয় করো, বিক্রিত পন্যের ব্যয় নির্ণয় করো, মুনাফা/বিক্রয়ের পরিমান নির্ণয় করো..
♻আয় বিবরণীঃ
উৎপাদনকারী ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্দিষ্ট হিসাবকালে "আর্থিক ফলাফল বা লাভ-ক্ষতি নির্ণয়" করার জন্যই এই বিবরণী প্রস্তুত করা হয়। এটার ধাপগুলোও আয়ত্তে নিতে হবে।যেমনঃ নিট বিক্রয় থেকে বিক্রিত পন্যের ব্যয় বিয়োগ করতে হবে তাহলে বের হবে মোট লাভ। তার থেকে পরিচালন খরচগুলো (প্রশাসনিক খরচ ও বিক্রয় খরচ) বাদ দিলে আসবে নীট মুনাফা/ক্ষতি।
♻কিছু গানিতিক সূত্রঃ
◾ব্যবহৃত কাঁচামালের ব্যয় = প্রারম্ভিক কাঁচামাল + কাঁচামাল ক্রয় – সমাপনী কাঁচামাল।
◾মূখ্য ব্যয়= প্রত্যক্ষ কাঁচামাল + প্রত্যক্ষ শ্রম/মজুরি + অন্যান্য প্রত্যক্ষ খরচ
◾উৎপাদন ব্যয়= মূখ্য ব্যয় + উৎপাদন/ কারখানা উপরিব্যয়।
◾রুপান্তর ব্যয়= প্রত্যক্ষ শ্রম/মজুরি + উৎপাদন/কারখানা উপরিব্যয়।
◾উৎপাদিত পণ্যের ব্যয়= চলতি কার্যের প্রারম্ভিক মজুদ + উৎপাদন ব্যয় – চলতি কার্যের সমাপনী মজুদ।
◾বিক্রিত পন্যের ব্যয় = তৈরি পন্যের প্রারম্ভিক মজুদ + উৎপাদিত পণ্যের ব্যয় – তৈরি পন্যের সমাপনী মজুদ।
◾মোট ব্যয়/বিক্রয় ব্যয়= বিক্রিত পন্যের ব্যয় + পরিচালন খরচসমূহ + অন্যান্য খরচ ও ক্ষতি (যদি থাকে)
◾বিক্রয়মূল্য= মোট ব্যয় + প্রত্যাশিত মুনাফা।
এই ছিল এ অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলোর আলোচনা। এখানে আমি শুধু সূত্র দিলাম কিন্তু এক্সামে ম্যাথ আসবে।
কোন প্রকার প্রশ্ন বা জানার থাকলে কমেন্ট করে জানাও।
"সবার জন্য শুভকামনা রইলো, দেখা হবে বিজয়ে🕊️"
Maruf Hossain Munna
Instructor of Accounting
Executive of SILSWA
Department of Marketing
University of Dhaka