মৃত্যুর কবলে


প্রিম্যাচিউর ব্যারিয়াল

নিজ জীবনের ঘটনা দিয়েই শুরু করি-
তখন আমি অনেক ছোট্ট, অনেক ছোট্ট বলতে কোলের শিশু। এর আগেও দুবার অজ্ঞান হয়ে গেছিলাম তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই জ্ঞান ফিরে আসে। কিন্তু এবারে আর জ্ঞান ফিরছে না। একসময় চোখের মণি বড় হয়ে স্থির হয়ে যাওয়া, পালস বন্ধ হয়ে যাওয়া আর শরীর ঠাণ্ডা হয়ে আসলে উপস্থিতেরা মনে করে আমি মারা গেছি। তখন কেউ একজন বলে- “মৃত সন্তান মায়ের কোলে রাখা ঠিক না”। বলে আমার ছোট্ট দেহটাকে মার কাছ থেকে নিয়ে যায়। নানুবাড়ির উঠুনে উত্তরমুখী করে শুইয়ে রাখা হয় গোসলের অপেক্ষায়। একজন ইমামকে খুঁজতে ছুটে যায় জানাজা পড়ানোর জন্য আর প্রতিবেশীরা দেখতে আসা শুরু করে। কিন্তু আচমকাই একটা মৃদু নিঃশ্বাস ফেলে পুরো শরীর ঝাঁকি দিয়ে উঠে আমার। আলহামদুলিল্লাহ্‌! বেঁচে যাই আমি। সবাই ঘটনাটা অনেকদিন লুকিয়ে রেখেছিল আমার থেকে। কলেজে উঠার পর প্রথম আমাকে শুনানো হয়।
আমি আল্লাহ্‌র রহমতে অতি অল্পেই ছাড় পেলেও কাউকে কাউকে কিছুটা বেগও পেতে হয়েছে।

১৯১৫ সালের গ্রীষ্মকালে সাউথ ক্যারোলিনার ডাক্তার ডি. কে. ব্রিগসকে ডাকা হয় যখন ৩০ বছর বয়সী এসি ডানবার মারাত্মক মৃগীরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়।ডাক্তার এসে সবকিছু চেক করে জীবনের কোন চিহ্ন না পেয়ে এসিকে মৃত ঘোষণা করে।তার শেষ ফিউনারেল পরদিন সকাল ১১টায় করা হবে বলে তাকে মর্গে রাখা হয়, কারণ তার বোন অনেক দূরে থাকায় তাকে ফিউনারেলে আসার সময় দিতেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু এসির বোন এরপরো আসতে দেরী করে ফেলে এবং দেখে কবর দেয়া শেষ হয়ে গেছে। তখন সে শেষবারের মত বোনকে দেখার জন্য পুনরায় উত্তোলনের দাবী জানায়। কফিন উত্তোলন করে ঢাকনা খুলতেই দেখা যায় এসি ধড়মড় করে উঠে বসে! মানে সে জীবিত! এসময় সবাই এমনকি এসির বোনও প্রথমে তাকে ভূত ভেবে লাফিয়ে দূরে সরে যায়।তবে রবীন্দ্রনাথের কাদম্বিনীর মত তাকে মরে প্রমাণ করতে হয় নাই যে সে জীবিত। তবে অনেকটা সময় ধরে মানুষ তাকে জম্বি ভাবত! এরপর সে আরো ৪৭ বছর বেঁচে ১৯৬২ সালে মারা যান তিনি।

১৯৩৭ সালে মোটরসাইকেল এক্সিডেন্টে ১৯ বছর বয়সী এঞ্জেলো হেয়েস ছিটকে গিয়ে মাথাসহ পাশের দেয়ালে বাড়ি খায়। কোন পালস না পেয়ে হেয়েসকে মৃত ঘোষণা করে ডাক্তাররা।তার মুখ দুর্ঘটনায় এতটাই বিক্রিথয়ে গেছিল যে স্বয়ং হেয়েসের বাবা-মাও দেখতে পারেন নি।মৃত ঘোষণার ৩ দিন পর তাকে কবর দেয়া হয়। কিন্তু তার নামে ২০০,০০০ ফ্রার জীবনবীমা থাকায় বীমা কোম্পানি তদন্তের আবেদন জানায়। তখন এঞ্জেলোর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে তার দেহ দুইদিন পর তোলার ব্যবস্থা করা হয়। তখন ফরেনসিক নিরীক্ষকরা দেখেন, এঞ্জেলো আসলে জীবিত!সে ভয়াবহ কোমায় চলে গিয়েছিল আর মাথায় আঘাত পাবার দরুণ দেহে অক্সিজেনের চাহিদা মাত্রাতিরিক্ত কমে যাওয়ায় সে এই দুদিন কফিনের ভিতরেও বেঁচে ছিল। পরে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয় এবং চিকিৎসায় সুস্থ করে ফেলা হয়। পরবর্তীতে তার মত অবস্থায় যেন কেউ না পরে সেজন্যে নিজেই আবিষ্কার করে এক ধরণের “নিরাপত্তা কফিন”।

আধুনিক উন্নত প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতির (ECG, EEG, fMRI ইত্যাদি) সাহায্যে জীবন্ত কবরস্থের ঘটনা সম্পূর্ণ রোধ করা যায়।তবে ডাক্তাররা যেহেতু মানুষ তাদেরও ভুল হয়েই যেতে পারে।
এই যেমন ২০১৪ সালে পোল্যান্ডের ৯১ বছর বয়সী মহিলা জেনিনা ককেভিচকে পারিবারিক ডাক্তার ভিয়েসলাভা শিচ মৃত ঘোষণা করে “ডেথ সার্টিফিকেট” লিখে দিলে তাকে বডিব্যাগে ভরে ১১ ঘণ্টা হিমায়িত মর্গে রাখা হয়। এরপর কেউ একজন বডিব্যাগকে নড়তে দেখলে দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে তাকে বাঁচানো হয়।
একই বছর আমেরিকার মিসিসিপিতে ৭৮ বছর বয়সী ওয়াল্টার উইলিয়ামসের শরীরে কোন পালস না পেয়ে পরিবারের লোকজন তাকে মৃত মনে করে করোনার ডেক্সটার হাওয়ারডকে খবর দেয়। হাওয়ারড এসে পরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করার কয়েক ঘণ্টা পরই সে জেগে উঠে বডিব্যাগের ভিতর। পরে দেখা যায় করোনার ডেক্সটার হাওয়রডের কোন মেডিক্যাল ডিগ্রী-ই ছিল না।
কাজেই এটা বিরল নয়। আর আমাদের মত ৩য় বিশ্বের দেশগুলোতে যেখানে উন্নত প্রযুক্তি দূরের কথা ডাক্তারেরই প্রবল সংকট আর ডাক্তার বাদ দিয়ে উপস্থিত আশেপাশের লোকজন কেউ জীবিত না মৃত নির্ণয় করে সেখানে এমন জীবন্ত কবরের ঘটনা ঘটে থাকলেও থাকতে পারে যা আমরা হয়তো জানতেও পারি নাহ। তাই সময় নিয়ে অপেক্ষা করুন আর নিজেরা মৃত ঘোষণা না করে একজন ডাক্তারকে দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে নিশ্চিত হয়ে নিন।

মৃত্যুর সংজ্ঞা যখন ক্লিনিক্যাল ডেথঃ জীবন্ত কবরের রক্ত হিম করা ঘটনা

ক্লিনিক্যাল ডেথের সংজ্ঞাটা মনে আছে তো? না মনে থাকলে একটু বলি- কাউকে মৃত ঘোষণা করা যাবে যদি তার নিঃশ্বাস এবং হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যায়।
আজ দেখব এই সংজ্ঞার সাথে সংশ্লিষ্ট কিছু ভয়াবহ লোমহর্ষক সত্য ঘটনাকেঃ-
১৭৮০ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে অবস্থিত “লা ইনোসেন্তে” কবরখানাকে অতিরিক্ত ব্যবহারের জন্য অযোগ্য ঘোষণা দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়। ১৭৮৬ সালের মধ্যে অনেক কবরস্থ ব্যক্তির দেহাবশেষ সরিয়ে মন্টপারনাসের ক্যাটাকোম্ব সমাধিতে নেয়া হয়। তখন বেশ কিছু দেহাবশেষের অবস্থা থেকে উপস্থিত ডাক্তার এবং নিয়োজিত লোকজন জীবন্ত কবরস্থের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়।
সালটা ১৮৬৯, এপ্রিলের শেষের দিক। কেন্টাকির পাইকভিলে বাস করা অক্টাভিয়া স্মিথ হ্যাচার এক অজানা রোগে অচেতন হয়ে গেলেন। এক পর্যায়ে নিঃশ্বাস ও হৃদস্পন্দন খুজে না পেয়ে অস্তিত্ব ২ মে তাকে মৃত ঘোষণা দিল শল্যবিদরা। তাকে সমাহিত করার পর দেখা গেল গ্রামের আরো অনেকে এমন হল। কিন্তু সবাই একে একে জেগে উঠল। এসময় অক্টাভিয়ার স্বামী বুঝতে পারল বিরাট ভুল হয়ে গেছে।তিনি দ্রুত স্ত্রীর কবর খুঁড়ার ব্যবস্থা করলেন। দেখা গেল কফিনের ঢাকনার ভিতরের দিকে অসংখ্য আঁচড়ের দাগ, অক্টাভিয়ার হাত ও পায়ের নখগুলো কফিন খামচাতে খামচাতে রক্তাক্ত হয়ে গেছে, কতগুলো নখ উঠেও গেছে। নিষ্প্রাণ দেহে তখনো ভয়ের ছাপ সুস্পষ্ট। পরে জানা যায় আফ্রিকান “Tsetse” মাছির কামড়ে এই গভীর কোমা অবস্থা হয়ে থাকে যা “স্লিপিং সিকনেস” নামে পরিচিত।
সত্যি বলতে আঠার ও উনিশ শতকে বিভিন্ন মহামারী কারণে মৃত লোকদের দ্রুত কবরস্থ করে ফেলার জন্য প্রচুর এধরনের জীবন্ত কবরের ঘটনা ঘটে। পরে যখন এই তথ্য উন্মোচিত হয় জনগণের মনে “জীবন্ত কবরস্থ” হবার ভয় মহামারীর চাইতেও বেশী প্রকট আকার ধারণ করে। অনেকেই বলে যায়- তাদেরকে কবর দেয়ার আগে গলা চিড়ে দিতে কিংবা বুকের হৃৎপিণ্ডের মধ্য দিয়ে লাঠি বিঁধিয়ে তারপর কবর দিতে। “ভ্যম্পায়ার”কে হত্যা করতে হলে হার্টে কাঠের লাঠি ধুকিয়ে দাও-এই ধারণার একটা উৎপত্তির একটা কারণও এটা।

১৮১৭ সালে জন স্নারটের লিখাতে পাওয়া যায় জীবন্ত কবরের আরেক ঘটনা। করনিশ ছিলেন বাথের মেয়র। কিন্তু কোন এক অজানা কারণে তিনি মারা গেলেন। শল্যচিকিৎকরাও মেয়রকে মৃতই ঘোষণা করল। সন্ধ্যার পরপরই তাকে কবরস্থ করা হয়। এদিকে লাশচুরেরা রাতে তার লাশ চুরি করতে এলে কবরের ভিতর থেকে গোঙ্গানি আর ঠকঠক শব্দের মত শুনে। তারা দ্রুত কবর খুঁড়ে তার কফিনের ঢাকনা উন্মোচন করে। কিন্তু ততক্ষণে করনিশ আর এই ধরাধামে নেই। এই ট্র্যাজেডি তার বোনকে এতটাই প্রভাব ফেলেছিল যে সে বলত- “মারা গেলে তোমরা আমার গলা কেটে আলাদা করে ফেল যাতে কবরে বেঁচে না উঠি”
১৮৪৪ সালে বিখ্যাত ইংরেজ সাহিত্যিক এডগার এলেন পো’র লেখা “দ্য প্রিম্যাচিউর বারিয়াল” প্রকাশিত হলে অনেক শোরগোল পড়ে যায়। এসময় “সেফটি কফিন” দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠে। সেফটি কফিনের অনেক গুলা রুপভেদ আছে বিভিন্ন জনের নামে প্যাটেন্ট করা । এর মাঝে সবচেয়ে সাধারণটা হল – কফিনের ভিতর থেকে একটা দড়ি বের করে নিয়ে এসে লোকালয়ের সাথের ঘণ্টিতে লাগিয়ে দেয়া। যাতে কবরস্থ ব্যক্তি জীবিত হয়ে গেলে এই দড়ি টেনে ঘণ্টি বাজিয়ে জানান দিতে পারত যে সে জেগে উঠেছে। উন্নত যন্ত্রপাতি আর প্রযুক্তির অভাবে চিকিৎসকরাও দ্বিধাদ্বন্দ্বেভুগতেন কখন কাকে জীবিত অবস্থাতেই না ভুলে মৃত বলে বসেন।
১৮৮৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী ‘দ্য নিউইয়র্ক টাইমস’ এমন একটা ঘটনা প্রকাশ করে। বানকোম্ব কাউন্টিতে জেনকিন্স নামক এক লোকের কফিন খুলার পর দেখা যায় সে উপুড় হয়ে মরে আছে আর ভয়ে-আতঙ্কে মাথার বেশিভাগ চুল টেনে ছিড়ে ফেলেছে।কফিনের সর্বত্র আঁচড়ানোর দাগ। মৃতের পরিবার এতে অতিমাত্রায় মানসিক বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
১৮৮৬ সালের ১৮ জানুয়ারি কানাডার অন্টারিওর উডস্টকেও কলিন্স নামের এক তরুণীর সাথে এমন নির্মম ঘটনা ঘটে।
১৮৯৩ সাল।পেনসিলভানিয়ার হোয়াইটহেভেনে বসবাসকারী চার্লস বগার নামের এক কৃষকের স্ত্রী অজানা এক রোগে মারা গেল। পরে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে তারা পরীক্ষা করে মৃত্যু নিশ্চিত করল। কবর দেয়া হল মিসেস বগারকে। হঠাত একদিন চার্লসের এক বন্ধু তাকে বলল- তার সাথে দেখা হবার আগে থেকেই মিসেস বগারের মৃগীরোগ ছিল। এমন হতে পারে যে সে মারা যায় নি। এই কথা শুনার পর চার্লস অনুশোচনায় প্রায় পাগল হয়ে গেল। পরে বন্ধুর সহায়তায় নিজেই খুঁড়ল তার স্ত্রীর কবর। দেখা গেল মর্মান্তিক দৃশ্য। তার কাফন ছিন্নভিন্ন করা। সারা শরীর রক্তাক্ত। হাতের আঙ্গুলগুলো নেই, আসলে সে প্রচণ্ড ক্ষুধায় নিজের আঙ্গুল চিবিয়ে খেয়ে ফেলেছিল!

১৯০১ সালে প্রেগন্যান্ট ম্যাডাম ববিনকে ‘ভুলবশতঃ’ হলদে জ্বরে আক্রান্ত চিহ্নিত করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।একসময় তার অবস্থা আরো খারাপ হয়ে পরে । আর কর্তব্যরত এক চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। তাকে কবর দেয়া হয়। কিন্তু কিছুদিন পর তার বাবা মেয়ের মৃতদেহ কবর থেকে তুলে আনার ব্যবস্থা করলে যে লোমহর্ষক দৃশ্য দেখা যায় তাতে উপস্থিত সবাই জমে যায়। কারণ কবরে মৃতদেহ একটা নয়, বরং দুটো। আরেকটা ম্যাডাম ববিনের গর্ভের বাচ্চাটির যার জন্ম কবরের ভিতর ই হয়েছিল এবং অক্সিজেনের অভাবে মরে নীল হয়ে আছে।
২০১৫ সালে গ্রীসের মেসিডোনিয়ার পেরাইয়াতে ৪৯ বছর বয়সী এক মহিলাকে ক্যান্সারের কারণে ডাক্তারিভাবে মৃত বলে ঘোষণা করে। কবরস্থ করার পরপরই সমাধিক্ষেত্র থেকে পরিবারের লোকজন আর্তচিৎকার শুনতে পেলে দ্রুত কফিন উত্তোলন করে আবার হাসপাতালে নিয়ে যায়।কিন্তু ততক্ষণে সে আসলেই মারা গেছে। তদন্তে দেখা যায়, ক্যান্সার নিরাময়ের জন্য যে ঔষধ দেয়া হয়েছিল তাতেই তার হার্ট কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে গেলে ভুলবশতঃ ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা দিয়ে ফেলে।
জীবন্ত অবস্থায় কবরস্থ হওয়ার যে ভয় সাইকোলজির ভাষায় তার একটা নাম আছে- Taphophobia। বিখ্যাত গল্পকার হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন উভয়েই ট্যাফোফোবিক ছিলেন। জর্জ ওয়াশিংটন তো বলেই গিয়েছিলেন যে মরার দুদিনের মাঝে যেন তাকে কবরে নামানো না হয়।
এখনকার দিনে অবশ্য একটা মোবাইল সমেত কবর দিলেই হয়ে যেত, তাই না?
ওহ ওয়েট, এই চর্চাটা কিন্তু অলরেডি প্রচলিত (২০০৮ সালের একটা প্রতিবেদনের লিঙ্ক কমেন্টে)
সবশেষে লর্ড চেস্টারফিল্ডের একটি বিখ্যাত উক্তি দিয়ে শেষ করি-
“All I desire for my own burial is not to be buried alive”.


Writer: Md. Tariqul Islam Rasel  

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম