কনট্রেইলস


জেট বিমানের পিছনে সৃষ্ট শুভ্র রেখাগুলো আসলে কী,কেন সৃষ্টি হয়,এগুলো কীভাবে আবাহাওয়ার পূর্ভাবাস দেয়,এগুলো কী ক্ষতিকর?

নীল আকাশে সাদা ধোঁয়ার এই লাইনগুলো দেখে কত মানুষ কত কিছুই না ভাবে।গ্রামের দিকে তো রীতিমতো এগুলোকে রকেট ভেবেই বসে থাকে! ভাই বাংলাদেশ থেকে রকেট দেখার সৌভাগ্য হয়তো ৫০ বছর পর হতে পারে অথবা আরো পরে কখনো ভাবা যেতে পারে।আরেকটা কথা রকেট এভাবে বিমানের মতো উড়েনা,এটা ভূমি থেকে উল্লম্বভাবে উঠে আর ধীরে ধীরে মুক্তিবেগ ছাড়িয়ে শূণ্যে পৌঁছে যায়।
আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই লাইনগুলো দেখে মানুষ তো আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে যেতো ভাবতো সরকার এই বুঝি আকাশে বিষাক্ত রাসায়নিক ছড়িয়ে দিলো।আসলে জিনিসটা কী,কেনই বা এর সৃষ্টি হয় এবং কিছু সময়পর কেন উধাও হয়ে যায়,এটা কী ক্ষতিকর,এর থেকে কী কোন সুবিধা পাওয়া যায়?
এসব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি,পড়তে থাকুন।

জেট বিমানের ইঞ্জিন থেকে নির্গত উচ্চ তাপমাত্রার এক্সস্টে উপজাত হিসেবে বাষ্পীয় পানি,কার্বন কণা সহ অন্যান্য কিছু রাসায়নিক থাকে যা খুবই উষ্ণ ও আদ্র অবস্থায় যখন ৩৫/৪০ হাজার ফুট উপরের তীব্র ঠান্ডা বায়ুমন্ডলে(-৪০°c) নির্গত হয়,সাথে সাথেই বরফ কেলাসে পরিণত হয়ে যায় এবং ঘনীভবনের ফলে কার্বন কণাগুলোর আশেপাশে জমতে থাকে যার ফলে এভাবে সারা পথ জুড়ে জেট বিমান তার গতিপথের চিহ্ন রেখে যায় যা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মেঘের মতো এই শুভ্র রেখা সৃষ্টি করে।তাই এই রেখা গুলোকে Contrail বলা হয়;Condensation(ঘনীভবন) এবং Trail(লেজ) এই দুটি শব্দ থেকে Contrail শব্দের উৎপত্তি।

কনট্রেইল দিয়ে আবাহাওয়ার পূর্বাভাস!
লক্ষ্য করে থাকবেন,এই রেখাগুলো সর্বোচ্চ কয়েকঘণ্টা স্থায়ী থাকে আকাশে,বেশিরভাগ সময়েই এগুলো আকাশে ছড়িয়ে যায় বা বিলীন হয়ে যায়।এটার কারণ হলো বায়ুমন্ডল,যখন ৩০/৪০ হাজার ফুট উচ্চতায় বাতাসের আদ্রতা বেশি থাকে তখন কনট্রেইল বেশিক্ষণ স্থায়ী থাকে আর আদ্রতা কম বাতাস শুষ্ক হলে কনট্রেইল দ্রুতই হারিয়ে যায়।তাই এই রেখাগুলো পর্যবেক্ষণ করেই,এদের স্থায়িত্বকাল হিসাব করে আপনি মোটামুটি বলতে পারবেন আবাহাওয়া সুন্দর থাকবে নাকি ঝড়বৃষ্টি হতে পারে।
বেশিক্ষণ স্থায়ীঃ আবাহাওয়া খারাপ হবে,ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে কারণ বাতাস খুবই আদ্র।
কম সময় স্থায়ীঃ আবাহাওয়া পরিষ্কার,সুন্দর ও শুষ্ক থাকবে কারণ বাতাসে আদ্রতা কম।
কনট্রেইল আসলেই ক্ষতিকর কারণ এখানে সালফারের অক্সাইড,নাইট্রোজেন,এবং ধাতব কণাও থাকে,আর কার্বনডাইঅক্সাইড তো থাকেই।এজন্যই বৈশ্বিক উষ্ণায়নে এই কনট্রেইল বড় প্রভাব ফেলছে।তাই অনেক বিজ্ঞানী Contrail কে Chemtrail বলে থাকেন।Chemtrail মানে Chemical(রাসায়নিক) এবং Trail(লেজ)।
এখন আশাকরি আপনি অনেককিছুই জেনে গেলেন কনট্রেইল তথা ক্যামট্রেইল নিয়ে।
ধন্যবাদ।

Writer: Myin Uddin

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম