কথাটা তেতো হলেও সত্যি পৃথিবীর প্রায় ৮০ ভাগ লোক আত্মহত্যার একাধিক বার চিন্তা করেছে।
কেও সাহস করে উঠতে পারেনি, কেওবা হাতে চাকু/দড়ি/বিষ নিয়ে মৃত্যু যন্ত্রণার ভয়ে এগোতে পারেনি। কেওবা আধাআধি চেষ্টা করে নিজের কাজে হেরে গেছে, অথবা কেও কেও ৩-৪ বার ইতিমধ্যেই হাসপাতালে ছোটখাটো ভ্রমন করে ফিরে এসেছেন। সাকসেসফুলি ৫% মানুষ আত্মহুতি দিয়ে মাটির নিচে চলে গেছেন।
এখন প্রশ্ন হলো আত্মহত্যা এটেম্ট কেন করে মানুষ? সে মানুষিক রোগী? ডাক্তারি ভাষায় বলা চলে সে মানুষিক রোগী। মেডিটেশন, কাউন্সিলিং ইত্যাদি করে সাময়িক ভাবে আপনি তাকে বাঁচিয়ে রাখলেন। তারপর?
...........
তারপর আসলে কিছুই না। মানুষ ভাতের অভাবে মরে না ভাই, মরে মনের শান্তির অভাবে। আপনার মনে হতে পারে সাময়িক সমস্যা আগামী ৫ বছর পর সে এ ব্যপারটা ভুলে যাবে, time is the best healer!
আপনার বন্ধু/ ভাই/বোন প্রতিনিয়ত কাঁদছে, একই ব্যপারে ভ্যন ভ্যন করছে। আপনি রীতিমতো বিরক্ত আপনি আর পাত্তা দিচ্ছেন না। আপনিই বলছেন - "ধুর! ও সারাবছরই ডিপ্রেশনে থাকে, skip কর।" দেখা গেলো সে ব্যক্তিটি একদিন সুসাইড করে বসলে। আর আপনি তখন বলবেন বা স্ট্যটাস দিবেন "আমায় একটাবার বলতি তোর মনের কষ্টটা, আমি তোকে মরতে দিতাম না!"
আদৌ কি মনের কষ্ট শোনার মতো সময় ছিলো আপনার? ভাইরে কেও কারো দুঃখের ভাগ নিতে চায় না, শুনতেও চায় না। সুখের গল্প সারাদিন শুনার লোক আছে দুঃখের গল্প একমাত্র নিজেকেই শুনতে হয়। কেও সাময়িক সমস্যার জন্য বা সিলি কোনো ম্যটার নিয়ে মরতে চায় না। মানুষ তখনই মরতে যায় যখন কষ্টের মাত্রা অসহনীয় হয়, যখন অবিশ্বাস্য কিছু সত্যি সামনে আসে, যখন মানুষের গড়া তিল তিল করে স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায় তখন মানুষ এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়।
যদি আপনার আশেপাশে এমন কেও থেকে থাকে তাকে দয়া করে সময় দিন। কখনো মানুষের দুর্বলতা নিয়ে বিদ্রুপ করবেন না। খারাপ সময়ের একটা ছোট মুখের সান্ত্বনা অনেক বড় ঢাল হয় একজন ঢালহীন মানুষের কাছে।
মন মরে গেলে শরীরকে বাঁচিয়ে রাখার মতো দায় আর নেই পৃথিবীতে। ভেঙ্গে যাওয়া মানুষগুলোর কথা শুনুন, তা না হলে পৃথিবীতে অনুভূতিহীন মানুষের অভাব হবে না। ভালোবাসবে না কেও কাউকে আর, থাকবে না কোনো সম্পর্কের মূল্য।
যদি ধর্মে নিষিদ্ধ না থাকতো গনহারে আত্মহত্যা করতো মানুষ।
Masuma Tarannum