সাফিও-১ মাইকেল এল্ট্রো (পর্ব ২)


হঠাৎ ইন্সপেক্টর পেছন ফিরে বলল, এটা কবে ফেরত নিবেন?
"আপাতত আপনাদের কাছে থাক, সময় মতো আমি নিয়ে আসব। বলা যায়না চুরি করতে হয়তো তার ভালো লাগে!" মি. ওসবর্ন বললেন
ইন্সপেক্টর অর্জুন মুচকি হেসে বলল, হুম ঠিক আছে। এই বলে হাসতে হাসতে চলে গেল ইন্সপেক্টর অর্জুন।
পুলিশের কাছে দিয়ে আপাতত সবাই চিন্তামুক্ত, অন্তত থানা থেকে চুরি করতে পারবে না। তবে পরে জানা যায়, গিটারটি থানা থেকেও উধাও! লোক মুখে শোনা যায় ইন্সপেক্টর অর্জুন গিটারটি নিয়ে থানায়ই পৌঁছেনি। বিষয়টি জানতে পেরে ফারাবী ইন্সপেক্টর অর্জুনে সঙ্গে কথা বলতে যায়, তাকে দেখে বসতে বললেন ইন্সপেক্টর অর্জুন। আসার কারণ জানতে চাইলে ফারাবী বলল,
"সকালে আপনার কাছে একটি গোল্ডেন গিটার দেওয়া হয়েছি যা চুরি হওয়ার কথা ছিল, সবাই বলাবলি করছে ওটা নাকি আপনি থানায় নিয়ে পৌঁছাননি?"
কথাটি শুনে ইন্সপেক্টর অর্জুন আকাশ থেকে পড়লেন, অবাক হয়ে বললেন,
"হোয়াট! কিন্তু সকাল থেকেই আমি এখানে ডিউটি করছি, কোথাও যাইনি। এবং আপনার সঙ্গেও আমার এই প্রথম দেখা!"
"কি বলছেন! তাহলে সে কে ছিল!"
এদিকে একটি খালি ঘরে গিটারের বক্সটি টেবিলের উপর রাখে ইন্সপেক্টর অর্জুনের রূপী ছব্দবেশী, তারপর এগিয়ে যায় দেওয়ালে ঝুঁলন্ত আয়নাটির সামনে। হাসতে হাসতে মাথা নিচু করে ক্যাপ ও মাস্ক খুলে আয়নার দিকে মুখ তুলতেই দেখা যায় অজানা কারো চেহারা! চিকন গোফ, মুখ অনেকটা শুকনো। লোকটি একটি কালো এক গ্লাসের গোল চশমা চোখে দিয়ে এবং হ্যাট পড়ে আয়নার দিকে চেয়ে বলল, অবশ্যই চুরি করতে ভালো লাগে, আমি শেয়ালের মতো চালাক! ইদুরের মতো চতুর! বলেই হো হো করে হেসে উঠে লোকটি!
সেদিন রাতে।
- আমি সত্যিই বুঝতে পারছি না, এই চোর কিভাবে এমন করে!
এক প্রকার বিরক্ত হয়েই সাবিহা কথাটি বলল, ফারাবী মাথা তুলে বলল,
- অপেক্ষা করো, এর রহস্য অবশ্যই সামনে আসবে।
- কিন্তু যদি কোনো ক্লু না পাই তাহলে কেস সোল্ভ হবে কিভাবে? সানজু বলল
- ভেবে দেখি।
সবাই একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলল, যেন এই কেস তাদের দ্বারা সমাধান করা সম্ভব নয়। ঠান্ডা বাতাস বইছে বাহিরে, হয়তো বৃষ্টি পড়বে। ঝড়ো বাতাস এসে পড়লো সানজুর মুখে, তার কিছু মনে পড়লো হঠাৎ। উত্তেজিত হয়ে বলল, এই! এমন এক চোর ১৯৪৯ এর দিকে ছিল!
- ১৯৪৯? পাগল হয়েছো নাকি? সজীব বলল
- এত আগের কথা বলে কি লাভ? কথাটি সত্য বলেও আমার মনে হয় না। আবিদ বলল
- দাঁড়াও দাঁড়াও, সব খুলে বলো তো? ফারাবী বলল
- তার নামটা ঠিক মনে নেই, তবে ঠিক এভাবেই চুরির ঘটনা ঘটতো। কোথায় যেন পড়েছি! সানজু বলল
- এটা নয়তো যে সেই এসব করছে? আবিদ বলল
- সে আদও কি বেঁচে আছে যে আবার চুরি করবে? সজীব বলল
- হতে পারে তার কৌশলগুলো ব্যবহার করছে কেউ, অথবা তার অতৃপ্ত আত্মা.. .
- সাবিহা এখন আত্মা আসলো কোথা থেকে! ফারাবী বলল
- চুরি করতে না পারায় অতৃপ্ত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে বেচারা!
আবিদের কথা শুনেই হো হো করে হেসে উঠে সবাই, সাবিহা রেগে গিয়ে দু তিনটা কিল বসিয়ে দেয় আবিদের পিঠে। তবে ফারাবী হাসছে না, তার কাছে সানজুর বলা কথাটি বেশ কাজের বলে মনে হচ্ছে। চশমাটি খুলে রুমাল দিয়ে মুছে চোখে দিল, খোলা জানালার পর্দা ইচ্ছে মতো ঢুলছে ঝড়ো বাতাসে।
পরদিন সকালে। বৃষ্টি ভেজা দিন না হলেও, আকাশে হালকা মেঘ জমে আছে। গতদিনের মতো ফারাবী, সাবিহা, সানজু, সজীব ও আবিদ একসঙ্গে হলেও ফারাবী আজ কাজে মগ্ন। ল্যাপটপে কি যেন সার্চ করছে।
- একি সূর্য আজ কোন দিকে উদয় হলো!
ফারাবীকে খোটা দিয়ে কথাটা বলল সজীব, ফারাবী সঙ্গেসঙ্গে প্রতিবাদ করলো,
- একটা ইমপোর্টেন্ট কাজ করছি, বিরক্ত করিস না।
- হঠাৎ ল্যাপটপে এত কি করছো? সানজু বলল
- তোমার কথা অনুযায়ী এমন কেউ আগে কখনো ছিল কিনা, সেটা দেখছি। ফারাবী বলল
সাবিহা ফারাবীর চেয়ারে হাত রেখে দাঁড়াল। অপলক দৃষ্টিতে কম্পিউটারের লেখাগুলোর দিকে চেয়ে আছে। হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে সাবিহা বলল, এমন একজন ছিল যআর জন্ম লনডনে! সাবিহার কথায় ফারাবীর কিছু একটা মনে পড়লো। বলল, হ্যাঁ তার কথা আমিও শুনেছি! তবে এটাকে কাল্পনিক ভেবে এড়িয়ে গিয়েছিল। দ্রুত উঠে গিয়ে ব্যাগ থেকে একটা বই বের করে কিছু একটা খুঁজতে শুরু করলো ফারাবী। কিছুক্ষণ পর একটা পৃষ্ঠা বের করে বইটি টেবিলের উপর রেখে বলল, এই সেই চোর যার কথা সানজু বলেছিল, তবে এটা তাকে নিয়ে লেখা কাল্পনিক গল্পের বই। বইয়ের শেষে লিখেছে গল্পের মাইকেল এল্ট্রো কোনো কাল্পনিক ব্যক্তি নয়।
সবাই চুপ হয়ে মনোযোগ দিয়ে মাইকেলের ছবিটা দেখছে। কিছুক্ষণ পর সানজু বলল, ছবিতে দেখেই ভয় করছে, বাস্তবে কেমন হবে!
- আরে সে আর নেই! সজীব বলল
- আমি ভাবছি সে যদি না থাকে তাহলে কে করছে এসব! ফারাবী বলল
- আচ্ছা লাইব্রেরিতে দেখলে কেমন হয়? যদি এর ব্যাপারে কিছু জানতে পারি? আবিদ বলল
- হুম সময় নষ্ট করা চলবে না, এখনই চল।
ফারাবীর কথা মতো লাইব্রেরির উদ্দেশে বেরিয়ে পড়লো সবাই। লাইব্রেরি পৌঁছেই বিভিন্ন বই দেখতে শুরু করে তারা। একের পর এক বই দেখছে। কোথাও কিছু নেই। দেখতে দেখতে হঠাৎ একটি বইয়ে চোখ আটকে যায় সাবিহার, সবাইকে ডেকে বইটি দেখায়। খয়রি রঙের একটি বই, তার উপর লেখা 'মাইকেল এল্ট্রো দ্যা থিফ'। বইটি নিয়ে মি. উইলের বাড়ি যায় তারা।
রাত ৮টা বাজে, ফারাবীর রুমে এসে জড়ো হয় ফারাবী, সাবিহা, সানজু, সজীব ও আবিদ। বইটি পড়তে শুরু করে ফারাবী। সবাই মন দিয়ে শুনতে শুরু করে,
মাইকেল এল্টোরো ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত চোর, যার কৌশল ও মেধা ছিল অন্যসব মানুষের চেয়ে একদমই আলাদা। মাইকেল চুরির পূর্বেই চিঠির মাধ্যমে সবাইকে জানিয়ে দিত। এবং বলতো, নজরদারি যেন প্রখর হয়। তবে চুরি হওয়া থেকে কেউ তাকে ব্যর্থ করতে পারেনি। তার অন্যতম প্রিয় রঙ কালো, এবং সে সবসময় কালো রঙের অভার কোট ও কালো হ্যাট ব্যবহার করতো। তার চুরি করা প্রথম জিনিসটি ছিল পঞ্চাশ কোটি পাউন্ডের একটি গোল্ড কয়েন, কয়েনটি ছোট হলেই তার দাম ছিল পঞ্চাশ কোটি পাউন্ড। কয়েনটি চুরি হয় এক মিউজিয়াম থেকে, এবং লোক মুখের বিভিন্ন কথার কারণে একসময় মিউজিয়ামটি বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৪৫ সালে প্রায় ৫১বছর বয়সে নিজের ঘরে আত্মহত্যা করে, আত্মহত্যার কারণ কেউ কখনো জানতে পারেনি। আত্মহত্যার পূর্বে মাইকেল তার শেষ চিঠি লিখে যায়। তাতে লেখা ছিল, 'আমার জীবনের সমাপ্তি এখানেই। আমার আত্মহত্যার কারণ কেউ খুঁজতে এসো না, আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।'
বইটি বন্ধ করে দীর্ঘশ্বাস ফেলল ফারাবী। বইটির প্রতিটি শব্দে, প্রতিটি লাইনে ছিল অজানা রহস্য। কারো মাথায় আসছে না, মাইকেল মারা গিয়ে থাকলে বর্তমানে মাইকেল এল্ট্রোই বা কে! সজীব কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল,
- তার মানে মাইকেলের কৌশল অন্যকেউ ব্যবহার করছে।
- হতে পারে। সাবিহা বলল
- যদি তাই হয় তবে কে করছে এগুলো? ফারাবী বলল
- এটাই তো রহস্য। আবিদ বলল
- আমার মনে হয় মাইকেল মারা যায়নি, তার বয়স ও মৃত্যুর কথাটা ভুলও লেখা হতে পারে। সানজু বলল
বিভিন্ন কথা চলতে থাকে তাদের মাঝে। কেউ বলছে মাইকেল মারা যায়নি, আবার কেউ বলছে প্রতিটি চুরিতে রয়েছে অন্যকারো হাত।
রাত ১টা ২৪মিনিট। প্রচন্ড বৃষ্টি পড়ছে রাত বারোটা থেকেই, সঙ্গে যোগ হয়েছে ঝড়ো বাতাস। বাড়ির সবাই গভীর ঘুমে, শুধু ফারাবী ছাড়া। সে টেবিলে বসে ল্যাম্প জ্বালিয়ে বইটি পুনরায় ঘেটে দেখছে। মুখে ল্যাম্পের আলো পড়ছে, যত বইটা পড়ছে তত ভ্রু কুচকে আসছে তার। হঠাৎ খোলা জানালার পর্দা সরে গেল, তীব্র বাতাস এসে উড়িয়ে দিল বইয়ের পাশে রাখা সব কাগজ গুলো। ফারাবী উঠে দ্রুত সেগুলো এক করতে শুরু করে, বাতাসের কারণে তার এক করতেও সময় লাগে। সবগুলো কাগজ নিয়ে উঠে দাঁড়াতেই জানালার দিকে চোখ পড়ে ফারাবীর, কারো স্পষ্ট ছায়া ভেসে উঠেছে পর্দায়! ফারাবী স্থির দাঁড়িয়ে দেখতে থাকে, ছায়াটি টেবিলের উপর উপর কিছু একটা রাখলো। বুঝতে বাকি রইল না ফারাবীর, এ মাইকেল এল্ট্রো! কে ওখানে! বলেই টর্চ নিয়ে সে ঘরে যায় ফারাবী, দ্রুত দরজা খুলে আলো ফেলে সমস্ত ঘরে। কোথাও কেউ নেই, টেবিলে একটি ভাজ করা কাগজ পড়ে আছে। ফারাবী বৃষ্টির মাঝে বাহিরে বেরিয়ে পড়লো, দৌড়ে গেটের কাছে এসে আশেপাশে দেখতে লাগলো। ইতিমধ্যেই টর্চ মিটমিট করতে শুরু করে, একসময় বন্ধ হয়ে যায়। হয়তো বৃষ্টির পানি ঢুকেছে। বিরক্ত হয়ে টর্চে থাপ্পড় দিতে থাকে ফারাবী, তবে কাজ হলো না। নির্জন শহরম বৃষ্টির শব্দ ছাড়া কিছু শোনা যাচ্ছে না। ঘরে ফিরে গেল সে, ভেজা শরীর নিয়েই ঢুকলো ঘরটিতে। ধীর পায়ে টেবিলের কাছে এসে চিঠিটা তুলে দেখলো, লেখাটি পড়ে ভ্রু কুচকে জানালার দিকে তাকালো। তার ধারণা ঠিক, এ ছিল অসময়ের অথিতি মাইকেল এল্ট্রো!
পরদিন সকালে। এবারও একটি হুমকি এসেছে। তাতে লেখা, 'আজ রাত বারোটায় আবার আসছি মিউজিয়ামে, ইতি মাইকেল এল্ট্রো!'
- মানে কি! মিউজিয়ামে আসবে বলে এখানে কেন চিঠি দিচ্ছে!
চিঠিটা ফারাবীর হাতে দিয়ে বলল সজীব, ফারাবী সেটা হাতে নিয়ে বলল,
- আমিও বুঝলাম না। হয়তো মাইকেল আমাদের চিনে, নাহলে এমন বোকামি সে করবে না।
- সে তো আজ চুরির কথাই বলল না, শুধু বলল আসবে। তার মানে কি! সাবিহা বলল
- আজ বিকেলে মিউজিয়াম যেতে হবে। চুরির কথা বলেনি এবং চিঠি পাঠানো হয়েছে মি. উইলের বাড়িতে, এটা খুবই অদ্ভুত। ফারাবী বলল
- আমিও ভাবছি মিউজিয়াম যাওয়া দরকার। সানজু বলল
বিকেল হলো, মিউজিয়ামে এসে দাঁড়ালো ফারাবী, সাবিহা, সানজু, সজীব ও আবিদ। তাদের সাথে উইলিয়াম। তবে সামনে একটি ফিতা টানানো, তাতে লেখা 'Don't Entry!'
- এটাতো জুয়েলরির ঘর, ডন্ট এন্ট্রি কেন? ফারাবী বলল
- আসলে গতকাল চোরটা পুরনো দামি জুয়েলরিও চুরি করেছে। উইলিয়াম বলল
- কখন আসে কখন যায় টেরও পাওয়া যায় না। আবিদ বলল
তাদের কথা বলার মাঝেই জুয়েলরি ঘর থেকে এক পুলিশ ইন্সপেক্টর বেরিয়ে আসেন, তার চোখে মুখে চিন্তার স্পষ্ট ছাপ। বাহিরে এত লোক দেখে বললেন, একি আপনারা এখানে কেন! পেছনে যান।
- ইন্সপেক্টর আমরাও এই চোরের ব্যাপারে খোঁজ করছি। সজীব বলল
- ওহ, অর্থাৎ আপনারা গোয়েন্দা?
- হ্যাঁ, অফিসার এখানে কি হয়েছে? ফারাবী বলল
- এ ব্যাপারে আর কি বলবো, আমি তো এটাও জানিনা যে এসব কাজ মাইকেলের নাকি না!
- তার মানে? সাবিহা বলল
- আসলে এখানের স্টাফদের জিজ্ঞেস করে যা জানলাম, তা হলো এই মিউজিয়ামে নাকি একটা প্রেতাত্মা আছে। যে সব চুরিগুলো করছে।
- এটা কেমন কথা? প্রতাত্মা চুরি করছে! সানজু বলল
- কথাটা আমারও বিশ্বাস হয়নি। অনেকজনকে জিজ্ঞেস করলাম। বিভিন্ন তথ্য দিল, সবই ছিল অস্বাভাবিক। আমরা এটা জানার চেষ্টা করছি যে এগুলো মাইকেলের কিনা। আমার মনে হয়, এই মিউজিয়ামে কিছু একটা আছে। কোনো অজানা রহস্য! ইন্সপেক্টর বলল
পরদিন সকালে, জানালার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন মি. ওসবর্ন। এক নজরে বাহিরের প্রকৃতির দিকে চেয়ে আছেন। হঠাৎ দরজা খোলার শব্দ শুনে মি. ওসবর্ন পেছন ফিরে তাকালেন। ফারাবী এগিয়ে আসতে আসতে বলল, কি হয়েছে মি. ওসবর্ন? ডেকেছিলেন কেন? মি. ওসবর্ন পুনরায় জানালার দিকে ঘুরে বললেন, আবারো হুমকি এসেছে!
- কি? আবারো? সানজু বলল
- হ্যাঁ, এটা গতকাল রাতেই এসেছে।
এই বলে মি. ওসবর্ন একটি কাগজ রাখলেন, ফারাবী সেটা নিয়ে পড়ার চেষ্টা করলো।
- আজ ঠিক রাত বারোটায় দেখা হচ্ছে, জুয়েলারি ঘরে চুরির উদ্দেশে আসছি। ইতি মাইকেল এল্ট্রো!
- দেখেছো সে কি বলেছে? মি. ওসবর্ন বললেন
- তার মানে চুরি আজ রাত বারোটায় হবে। আবিদ বলল
- হ্যাঁ আপনি ঠিক বলেছেন!
অজানা কারো কন্ঠ শুনে পেছন ফিরে তাকায় সবাই, গতকালের সেই ইন্সপেক্টরকে দেখে সজীব বলল, আরে অফিসার আপনি? ইন্সপেক্টর এগিয়ে আসতে আসতে বললেন, ঠিক এমন চিঠি জুয়েলারি চুরির সময়ও এসেছিল, এবং চুরিও হয়েছে!
- মি. ওসবর্ন, কি চুরি করবে বলেছে? ইন্সপেক্টর বললেন
- বলেনি, শুধু বলল জুয়েলারি ঘরে চুরি করবে। মি. ওসবর্ন বললেন
- আচ্ছা গতকাল শুধু শুধুই কেন মি. উইলের বাড়ি চিঠিটা দিয়েছিল? সানজু বলল
- হতে পারে আমাদের এখানে ডেকেছিল, তবে এতে কোনো সন্দেহ নেই যে সে আমাদের চিনে! ফারাবী বলল
- আজ রাত বারোটায় আমরা সবাই এখানে থাকবো, আশা করি আপনারাও থাকবেন। ইন্সপেক্টর বললেন
- চিন্তা করবেন না অফিসার, আমরা থাকছি। ফারাবী বলল
সূর্য ডুবতে থাকলো, ধীরে ধীরে রাত নেমে আসলো ইমুলু টাউনে। এখন রাত ১১টা ৪৫মিনিট। প্রচুর গার্ড ও পুলিশে ভরপুর মিউজিয়াম। অপেক্ষা শুধু রাত বারোটার। জুয়েলারি ঘরে পায়চারি করছে ফারাবী, তার আশেপাশে বাকিরাও। সঙ্গে পুলিশ। ধীরে ধীরে সময়ও এগুতে শুরু করেছে। ফারাবী দেয়ালে লাগানো বড় ঘড়িটির দিকে তাকিয়ে বলল, আর মাত্র পাঁচ মিনিট! তার কথায় যেন সবাই আরো সতর্ক হয়ে গেল। হঠাৎ মি. ওসবর্ন আমতা আমতা করে বলল, আমি একটু সামনের ঘর থেকে আসছি!
(চলবে...)

ফারহান আহমেদ ফারাবী   

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম