সালোকসংশ্লেষণ এবং শ্বসন

আপনি কথা বলেছেন,হাটছেন,দাঁত কেলিয়ে হাসছেন।এই সব কিছুর জন্য শক্তি প্রয়োজন।কোথা থেকে অাসে এই শক্তি?শুধু আপনার বন্ধ চোখ খোলার জন্য আপনার শরীরকে যে দীর্ঘ রাসায়নিক বিক্রিয়া আর কতকিছুর মধ্য দিয়ে যে যেতে হয় তা যদি একবার অনুভব করতে পারতেন তবে অবাক না হয়ে আর পারবেন না।


(এক)
যাই হোক শক্তির কথা বলছিলাম।আমরা শক্তি কোথা থেকে পাই?
খাবার থেকে।তাই তো?
আমরা খাবার পাই উদ্ভিদ আর প্রানী থেকে।প্রানীরা খাদ্য পায় উদ্ভিদ থেকে।
আর উদ্ভিদ?
উদ্ভিদ খাদ্য বা শক্তি পায় সূর্য থেকে।
উদ্ভিদ সৌরশক্তিকে রাসায়নিক শক্তিতে রুপান্তরিত করে।কিছু নিজে ব্যবহার করে বাকিগুলো আমরা বা অন্যান্য প্রানীরা ব্যবহার করি।
উদ্ভিদ সূর্যের শক্তিকে রাসায়নিক শক্তিতে রুপান্তরিত করে কিভাবে?আর এই রাসায়নিক শক্তি এবং রাসায়নিক শক্তিতে রুপান্তরটাই বা কি?
বিষয়টা ক্লিয়ার করা প্রয়োজন।

বস্তুর পরমানু এবং অনুগুলো তড়িৎচৌম্বকিয় বলের মাধ্যমে একে অপরের সাথে যুক্ত থাকে।এই বলটাকে আমরা রাসায়নিক শক্তি বলি। এই বল, অারো পরিস্কারভাবে বললে দ্রব্যগুলো যখন আমাদের শক্তি দিতে পারে তখন আমরা বলি রাসায়নিক শক্তি অন্য শক্তিতে রুপান্তরিত হয়েছে।যেমন দুটো আলাদা ধাতুকে যখন আমরা একটা তার দিয়ে জোড়া দিই তখন সক্রিয়তা অনুসারে তারের মধ্যে ইলেক্ট্রন চলাচল করে।এই ইলেক্ট্রনকে যখন আমরা ব্যবহার করতে পারি তখন আমরা বলি রাসায়নিক শক্তি তড়িৎ শক্তিতে রুপান্তরিত হয়েছে।ঠিক ওভাবে বলা যায় না যে তাদের বন্ধন শক্তি এবং অান্ত:আনবিক শক্তি থেকেই শক্তি উৎপন্ন হয়েছে।তবে যেহুতু শক্তির সংরক্ষনশীলতা আছে তাই কোনো দ্রব্য শক্তি উৎপন্ন করলে তা অবশ্যই ওই দ্রব্য থেকেই উৎপন্ন হবে।তাই রাসায়নিক দ্রব্যর মধ্য যতধরনের শক্তি (কনাদের গতিশক্তি,বন্ধনশক্তি,অান্ত:আনবিকশক্তি)আপনি এদের রাসায়নিক শক্তি বলতে পারেন।

আর রাসায়নিক শক্তিতে রুপানন্তরিত হওয়াটা কি?
ধরেন ADP(অ্যাডিনোসিন ডাইফসফেট) আর pi(অজৈব ফসফেট) আছে।এরা কারো সাহায্য ছাড়া একসাথে যুক্ত হতে পারে না।এভাবে ভাবতে পারেন যে এদের মাঝখানে একটা এনার্জি ব্যারিয়ার আছে।অনেক যৌগ আছে যেগগুলোতে অন্য যৌগ যুক্ত করার জন্য তাদের সক্রিয় করতে হয়।ATP আর ফসফেটকে যুক্ত করার জন্যও তাদের সক্রিয় করে তুলতে হয়।এই শক্রিয়তার জন্য সৌরশক্তি শক্তি লাগে।ফোটন লাগে বলাটাই ভালো।একে Activation Energy বলে।এখানে ফোটন পাতার ক্লোরোফিল কর্তৃক গৃহীত হয়।ফলে ক্লোরোফিলের যে অঙ্গানু ফোটন শোষন করে সেই অঙ্গানুর বহিস্তরের ইলেক্ট্রন মুক্ত হয়ে যায়।আর এই ইলেক্ট্রনই ADP আর Pi কে যুক্ত করায়।এবার নিশ্চই বুঝেছেন সক্রিয়া করা বলতে কি বোঝাতে চাইছি। ক্লোরোফিলের ওই অঙ্গানুটা ইলেক্ট্রন হারিয়ে চার্জিত হয়ে থাকে।ফরে পানিকে ফেলে H থেকে একটা ইলেক্ট্রন নিয়ে নেয়।ফলে পানির গঠন ভেঙ্গে যায়।হাইড্রোজেন চার্জিত হয় এবং অক্সিজেন মুক্ত হয়ে যায়।দুইটা O মিলে O2 হয়ে পত্ররন্দ্রের মধ্য দিয়ে বের হহয়ে আসে।
এই যায়গায় আমাদের রসায়নের সাথে একটু সমস্যা হয়। কারন রসায়ন বলে যৌগ গঠিত হলে শক্তি বের হয়। আর আমরা বলছি যৌগ গঠন করতে শক্তি লাগে।কারনটা নিশ্চই বুঝতেই পারছেন।তাহলে কি ADP থেকে ATP হলে শক্তি বের হয়না? হয় অবশ্যই ।তবে তা খুব কম।সেই তুলনায় এদের সক্রিয় করতে আরো অনেক শক্তি লাগে এবং মোটামুটি একারনেই ফসফেটের বন্ধন শক্তিতে অনেক শক্তি থাকে।তাই ADP থেকে ATP তে শক্তি বেশি থাকে(মোটেও ADP ও Pi থেকে বেশি নয়) তাহলে এখন কি দাড়াচ্ছে?সৌরশক্তি ATP এর বন্ধন শক্তিতে আবদ্ধ হয়ে গেছে।এটাই সৌর শক্তি রাসায়নিক শক্তিতে রুপান্তরিত হওয়া।
এখানে বলে রাখা ভালো যে সৌরশক্তি সরাসরি ADP আর Pi কে সক্রিয় করে না।

আরেককটা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হচ্ছে ATP আর Pi কে কাছে আনা।এই কাজটা কে করবে।এর জন্যও কিন্তু শক্তির প্রয়োজন।মূলত একারনেই সালোকসংশ্লেষনের বিক্রিয়াগুলো ল্যাভে হয় না।কিন্তু ব্যাপারটা কেমন হবে আপনি যদি হাত দিয়ে ধরে দুইটা যৌগকে চাপদেন।তখনকি শক্তির প্রয়োজন আছে?আসলে কোষে এরককমই কিছু একটা হয়। কোষে এনজাইম থাকে।যৌগদের জন্য এই এনজাইম পাহাড়ের মতো।এনজাইম এই ADP আর pi কে কাছে আনে।মোটামুটি বিক্রিয়া করার পরিবেশ তৈরি করে।

কি এই এনজাইম।
এনজাইম প্রোটিন দিয়ে দিয়ে তৈরি।বড় এবং খুব জটিল হয়।
মানব দেহে অনেক ধরনের এনজাইম আছে।প্রতিটা রাসায়নিক বিক্রিয়ার জন্য আলাদা আলাদা এনজাইম।তবে কখনো কখনো একটা এনজাইম একাধিক বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রন করে।হ্যা এনজাইম বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রন করে।এনজাইম কে ফ্যাক্টরির মেশিন বলতে পারেন।সে বিক্রিয়ায় অংশ নেয় না কিন্তু বিক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।পরিস্কার করে বলে বিক্রিয়ার জন্য যে ধরনের পরিবেশ দরকার তা তৈরি করে।আমরা পরে এটা নিয়ে কথা বলব।তখন এটা কিভাবে কাজ করে তা পরিস্কার ভাবে বলব।

(দুই)
আগেই বলেছি যে উদ্ভিদ সৌরশক্তিকে
রাসায়নিক শক্তিতে রুপান্তরিত করে।সৌর শক্তি,পানি, CO2, এনজাইমের উপস্থিতিতে গ্লুকোজ উৎপন্ন হয়।এটা অনেক দীর্ঘ প্রক্রিয়া।এই বিক্রিয়াটিকে সালোকসংশ্লেষন বলে।
সালোকসংশ্লেষণ কে ব্ল্যাকম্যান ১৯০৫ সালে দুইটি ভাগে ভাগ করেন।আলোক নির্ভর পর্যায় আর অন্ধকার পর্যায়।

আলোক নিরপেক্ষ পর্যায়:
সূর্য থেকে ফোটন আসছে।এই ফোটনে আছে শক্তি।ফোটনের উপস্থিতিতে পাতার স্টোমা বা পত্ররন্দ্র খুলবে।যত বেশী ফোটন পত্ররন্দ্র তত বেশী খুলবে।
পাতা সম্পর্কে একটু আলোচনা করা যাক।পাতার কোষগুলো কিন্তু স্পেসাল।
পাতার টিস্যুকে বলে মেসোফিল টিস্যু।এগুলো এজন্যই স্পেসাল যে এই টিস্যুর কোষগুলোতে ক্লোরোপাস্ট নামক প্লাস্টিড থাকে।সালোকসংশ্লেষণের সবগুলো বিক্রিয়া এখানেই হয়।নিচের চবি গুলো দেখেন।ক্লোরোপাস্টের অবস্থান আশাকরি ক্লিয়ার হবে।
উদ্ভিদের মূলের মাধ্যমে পানি শোাষন করে।মূল থেকে পানি অন্ত:অভিস্রবণ পক্রিয়ায় কর্টেক্স পেরিয়ে ভেসেল নামক জাইলেম কোষে যাবে।তারপর সেখান থেকে ব্যাপন পক্রিয়ায় পাতার ক্লোরোপাস্টে যাবে।ক্লোরোপাসটের কোন জায়গায় থাকবে? গানামচক্র বা থাইলোকয়েডে।চবিগুলো আবার দেখেন।
পত্ররন্দ্র খোলা অাছে। সেখান দিয়ে CO2 ডুকবে।এই গ্যাস জমা হবে স্ট্রোমাতে।থাইলাকয়েডে NADP আছে।আর অাছে ADP আর Pi.
পানিতো আছেই।
ফোটনের শক্তিতে H2O ভেঙ্গে হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, ইলেক্ট্রন উৎপন্ন হবে।একে ফটোলাইসিস বলে।হাইড্রোজেন গুলো NADP এর সাথে যুক্ত হয়ে NADPH গঠন করবে।আর দুইটা O মিলে O2 হয়ে বেরিয়ে আসবে। আর ADP আর Pi যুক্ত হয়ে ATP গঠিত হবে।খেয়াল করেন ফোটনের শক্তি এখন এদের মাঝে সংরক্ষিত হয়ে গেছে।এতক্ষন এটাইতো বলেছি।
পরে এগুলো একসময় কাজে লাগবে।
আলোক নিরপেক্ষ পর্যায় মোটামিটি এখানেই শেষ। শর্করা উৎপন্ন হয় রাতে।তবে বলে রাখি শর্করা দিনেও উৎপন্ন হয়।তবে দিনে অনেক কাজ থাকে তো তাই উৎপাদনের পরিমানটাও খুব কম হয়।

আলোক নিরপেক্ষ পর্যায়:
এখন আমাদের কাছে NADPH অাছে, ATP অাছে।অার স্ট্রোমাতে সেই CO2 অাছে।আরো আছে H+।এরা CO2 কে বিজারিত করে গ্লুকোজ উৎপন্ন করবে।বিক্রিয়ার পরিবেশ সৃস্টি করতে আছে এনজাইম।এনজাইম বিক্রিয়ার জন্য যৌগগুলোকে একজায়গা হতে আরেকজায়গায় বহন করবে।এই জায়গায় গ্লুকোজ উৎপন্ন হওয়ার
প্রক্রিয়াটা সব উদ্ভিদে এক না।CO2 বিজারিত হওয়ার তিনটি গতিপথ আছে।
এই জায়গায় NADPH আর ATP আবার NADP, ADP
আর Pi হয়ে যাবে।আলো ফেলে আবার....।
বুঝতেইতো পারছেন।
তারপর এই শর্করা জাইলের মাধ্যমে সবগুলো কোষে পৌছে যাবে।কোষে যাওয়া মাত্র তার শ্বসন শুরু হয়ে যাবে।
এই শ্বসনের মতো এত জটিল আর দীর্ঘ বিক্রিয়া জীবদেহেই সম্ভব।শ্বসন ২৪ ঘন্টাই হয়।
শ্বসন প্রক্রিয়া সম্পাদিত হবে ৪ টি ধাপে।

গ্লাইকোলাইসিস:
শর্করা গুলো জাইলের মাধ্যমে কোষে পৌছবে।
তারপর কোষের ভিতরে প্রবেশ করলেই শুরু হয়ে যাবে শ্বসন।শর্করা বা C6H12C6 যখন সাটোপ্লাজমে যাবে তখন এটি বিভিন্ন এনজাইমের উপস্থিতিতে বিক্রিয়া করে দুই অনু পাউরুবিক এসিড(C3H4C3) উৎপন্ন করবে।দেখেন দুইটা অনুর মোট তিনটা তিনটা ছয়টা কার্বন পরমানু। কিন্তু হাইড্রোজেন মোট ৮ টা।বাকি চারটা যায় কোথায়?দুইটা হাইড্রোজেন NADH এর সাথে বিক্রিয়া করে দুই অনু NADH2 গঠন করবে।
৪ অনু ATP গঠিত হবে।যার মধ্য দুইটা খরচ হয়ে যায়।
এখন এখানে এনজাইমের ভূমিকা কি?
শর্করা কেন ভাঙ্গবে?বলেছিলাম এগুলো এনজাইমের উপস্থিতিতে বিক্রিয়া করে।হ্যা, এনজাইমের কারনেই ভাঙ্গে।এনজাইম ভাঙ্গার জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করে। সেই পরিবেশেই
ADP এর সাথে ফসফেট জোড়া লাগবে।NADPH এর সাথে হাইড্রোজেন জোড়া লাগবে।
এখানে কিন্তু একটা ইন্টারেস্টিং ব্যাপার আছে।NADPH এর কাছে হাইড্রোজেন অাসে কেন?অাসলে এনজাইম অানে।
কিন্তু একটা প্রশ্ন কি থেকে যায় না যে এনজাইম এগুলো বুঝে কি করে?সে কিভাবে বুঝে যে হাইড্রোজেনকে ওই জায়গায় নিতে হবে?ইলেক্ট্রন কে নিতে হবে।
আসলে এনজাইম কোনো কিছুই বুঝে না। সে বিক্রিয়া কোনদিক হবে তা কেয়ারও করে না।যদি করত তবে ফিজিক্সের ল ভাঙ্গত!!

অ্যাসিটাইল কো-এ সৃস্টি:
আগের ধাপে যে C3H4C3 উৎপন্ন হয়েছিল তা এবার অনেক ধরনের বিক্রিয়া শেষে ২ কার্বন বিশিষ্ট ১ অনু অ্যাসিটাইল কো এনজাইম এ সৃস্টি করবে।এই বিক্রিয়ায় এনজাইমের পাশাপাশি প্রয়োজন অারেকটা নতুন প্রভাবকের।সেটা হচ্ছে অক্সিজেন।বলেছিলাম ২ কার্বন বিশিষ্ট এনজাইম তৈরি করবে।পাউরুবিক এসিড তিন কার্বন বিশিষ্ট।বাকি কার্বনটা অক্সিজেনের সাথে যুক্ত হয়ে CO2 গঠন করবে।মানে শ্বসন হচ্ছে তো CO2 সৃস্টি হবেই।
তাহলে এই ধাপে দুই অনু পাউরুবিক এসিড থেকে উৎপন্ন হবে ২ অনু অ্যাসিকোটাইল কো এ।দুই অনু কার্বণ ডাই অক্সাইড আর দুই অনু NADPH2
গঠিত হবে।

ক্রেবস চক্র:
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং দীর্ঘ একটা চক্র।এই ধাপে এতক্ষন পর্যন্ত যা উৎপন্ন হয়েছে তা মাইটোকন্ড্রিয়াতে চলে যাবে।এখানে দুই অনু অ্যাসিটাইল কো এ থেকে মোট চার অনু কার্বন ডাই অক্সাইড, ছয় অনু NADPH2, 2 অনু FADH2,2 অনু GTP( ATP দলের সদস্য) উৎপন্ন হবে। মানে অমাদের শর্করা এ ধাপেই ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে।শর্করা বলে অার কিছু থাকবে না।

ইলেকট্রন প্রবাহতন্ত্র:
এতক্ষন পর্যন্ত যেসবNADH2,FADH2,
উৎপন্ন হয়েছে।তা এবার জারিত হয়ে ATP, পানি, উচ্চশক্তির ইলেক্ট্রন,প্রোটন উৎপন্ন করে।এই ইলেক্ট্রনই মূলত ADP আর Pi কে সক্রিয় করে তুলে যেনো তারা জোড়া লাগে।আর তাদের শক্তিটা সংরক্ষিত হয় ATP এর বন্ধন শক্তিতে।
এখন,সব মিলিয়ে মোট ৬ অনু CO2 আরর ৩৮ অনু ATP উৎপন্ন হবে।অামরা ATP কে মোটামুটি একক হিসেবে ব্যবহার করি। এই দিক থেকে ATP সাথে GTP এর কোনো পার্থক্য নেই।

একটা জিনিস খেয়াল করেছেন ২য় ধাপে কিন্তু অক্সিজেনের প্রয়োজন ছিল।তারমানে অক্সিজেন ছাড়া কোনো উদ্ভিদ বাচবেনা?
কিন্তু তা হলে সৃস্টির শুরুতে এত কম অক্সিজেনের মধ্য উদ্ভিদ গুলো কিভাবে বেচে ছিল?

ওই অাদিম উদ্ভিদদের জন্য অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় না।এতক্ষন পর্যন্ত বলেছি সবাত শ্বসনের কথা।তারা শ্বসন কার্য চালাত অবাত শ্বসন পক্রিয়ায়।অর্থাৎ যে পক্রিয়ায় অক্সিজেন লাগে না।এই প্রক্রিয়াকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়।প্রথম ধাপটা সবাত শ্বসনের শতো।মনে অাছে গ্লাইকোলাইসিসেঅক্সিজেনের কোনো ভূমিকা ছিল না।কিন্তু পরের ধাপে ছিল।অবাত শ্বসনে পরের ধাপে পাউরুবিক এসিড জারিত হয়ে ইথায়ইল অ্যালকোহোল,ল্যাকটিক এসিড,CO2 গঠন করে।
এভাবেই অাদিম উদ্ভিদ গুলো বিন্দু বিন্দু করে পৃথিবীতে অক্সিজেন এনেছে।কি সে অাদিম উদ্ভিদ?
এগুলো হচ্ছে ব্যাকটেরিয়া অার ইস্টের মতো অনুজীব।এরা অাবাত শ্বসনে ইথাইল অ্যালকোহল তৈরি করে তাই বর্তমানে এদের খুব চাহিদা।
সবশেষে অাবার বলি।প্রতিটি ধাপে যে বিক্রিয়া কথা বলেছি তা অতি সংক্ষিপ্ত।প্রত্যকটা ধাপে দীর্ঘ বিক্রিয়া হয়।সাইট্রিক এসিডের সুধু ক্রেবস চক্রের একটা ফটো নিচে অাছে। দেখেন।
উদ্ভিদের খাদ্য সুধু গ্লুকোজ।অামরাতো
অামিষ খাই,ফ্যাট খাই।সে সবের বেলায়?
হ্যা এতক্ষন যা বলেছি তা সুধু গ্লুকোজের জন্য।অামিষ, ফ্যাট এগুলো পরিপাক হয়ে সরল অ্যামাইনো এসিড,ফ্যাটি এসিড উৎপন্ন হবে।সবগুলোর জন্য গ্লুকোজের মতো অাছে অালাদা অালাদা অনেক ধরনের দীর্ঘ বিক্রিয়া !
সাধে কি অার বলে যে জীবদেহ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রাসায়নিক কারখানা।
শ্বষনের ফলে যে ATP উৎপন্ন হয় এগুলোই আমাদের সকল শক্তির জোগান দেয়। ATP থেকে কিভাবে শক্তি উৎপন্ন হয়?ভেঙ্গে?ভাঙ্গলে কি শক্তি মুক্ত হয়?না,হয়না।
ATP মূলত ভাঙ্গে না।হাইড্রোলাইজ হয়!
ATP কিভাবে ব্যবহুত হয় তা একটা উদাহারন দিলে মনে হয় পরিস্কার হবে।

ধরেন আপনার বন্ধু আপনাকে কলম দিয়ে গুতা দিল।আপনার স্নায়ুগুলো একটা অপরোর সাথে জটিল ভাবে যুক্ত হয় জটিল দেয়াল সৃস্টি করে(এভাবে ভাবুন)।এই দেয়ালের বাইরে থাকে নেহেটিভ চার্জ ভিতরে থাকে পজেটিভ চার্জ।মানে একটা তড়িৎ ক্ষেত্র বিরাজ করছে।আপনাকে গুতা দিলে এই চার্জগুলোর অবস্থান পরিবর্তন হবে। ফলে তড়িৎক্ষেত্রের প্রভাব পরিবর্তিত হবে।এই প্রভাব তার পাশের কোষের তড়িৎ ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করবে।সেই ক্ষেত্রের প্রভাবও পরিবর্তিত হবে।এভাবে গুতার বৈদ্যুতিক সংকেতটি মস্তিস্কে যাবে।মস্তিস্ক সেই সংকেত গ্রহন করে সিদ্ধান্ত নিয়ে অনুরূপভাবে অাঙ্গাবাহী স্নায়ুর মাধ্যমে কি করতে হবে তা পাঠাবে।আপনার স্নায়ু সেটা বহন করে পেশির কাছে আসবে।পেশির সাথে সাথে স্নায়ু জটিলভাবে যুক্ত থাকে।এখন স্নায়ুর একেবারে শেষে সঠিক এনজাইম এবং পানির উপস্থিতিতে ATP হাইড্রোলাইজড হয়ে কিছু ইলেক্ট্রন (শক্তি)শুট করে।এটা স্নায়ুর সাথে মাসেলকে কন্ট্রেক্ট করায়।এভাবে ATP ব্যবহৃত হয়।
তাই পানিকে ভুলে যাবেন না। জানেনতো পানির অপর নাম জীবন।


Writer: Mohammad Jobayer Hossain
সদস্য, ব্যাঙের ছাতার বিজ্ঞান   

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form