ঘুম। আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। একটি বিরাট কর্মক্লান্ত দিনের পর একটি সুখনিদ্রা আমাদের দেয় আরেকটি দিন শুরু করার মনোবল আর শক্তি। ঘুমের মধ্যেও কতো কান্ড! স্বপ্ন দেখা, কেউ ঘুমের মধ্যে কথা বলেন, কেউ আবার সারাদিনে হাঁটাহাঁটি করেন নি-এই কথাটা যেন হঠাৎ মনে পড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় ই শুরু করে দেন হাঁটাহাঁটি!যা হোক, ঘুম নিয়ে যে বৈজ্ঞানিক ধারণা তার কথায় আসি। গত শতকের ৫০ এর দশকের আগ অব্দি ঘুমকে বলা হত শরীর ও মস্তিষ্কের নিষ্ক্রিয় দশা।আরো ধারণা করা হতো ঘুমের সময় মস্তিষ্কের কার্যক্রম কমে যায় আর জেগে থাকার মাধ্যমে এ কার্যক্রম স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরে আসে।১৯৫২ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণাগারে ইউজিন আরিয়েনস্কি নামের একজন স্নাতক শিক্ষার্থী প্রাপ্তবয়স্কদের নিদ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ার সময় ইইজি(ইলেকট্রোএনসেফালোগ্রাফ; মস্তিষ্ক থেকে সংকেত গ্রহণ ও এর বিশ্লেষণকে বলে এনসেফালোগ্রাফি!) সংকেত নথিবদ্ধ করছিলেন।আরিয়েনস্কির এই গবেষণার হাত ধরেই ঘুম নিয়ে গবেষণার আধুনিক যুগ শুরু হয়, বেড়িয়ে আসে REM, non-REM' সহ ঘুমচক্র সম্পর্কিত নানা তথ্য।
ঘুমের বিজ্ঞান নিয়ে কাজ করতে গিয়ে পাওয়া গেছে ঘুম চক্রের সন্ধান। আর এই ঘুম চক্রে চলে দুই ধরনের ঘুম দশা। এক হলো, নন-র্যাপিড-আই-মুভমেন্ট বা non-REM sleep, আরেকটি হলো র্যাপিড-আই-মুভমেন্ট বা REM sleep। আমাদের ঘুম চক্রের প্রথম দিকের দশা হলো নন-র্যাপিড-আই-মুভমেন্ট বা non-REM sleep। নন-র্যাপিড আই মুভমেন্ট (NREM) পর্যায়কে American Academy of Sleep Medicine (AASM) তিনটি পর্যায়ে ভাগ করেছেন।এগুলোকে এভাবে নাম দেয়া হয়,- N1,N2,N3। প্রথম ধাপ হচ্ছে ঘুম এবং জাগ্রত অবস্থার মাঝামাঝি সময়। স্বাভাবিকভাবেই, খুব সহজেই ঘুম ভেঙে যায় এই অবস্থায়।দ্বিতীয় ধাপ মোটামুটিভাবে প্রথম ধাপের ১০ মিনিট পর শুরু হয়। এই ধাপকে বলা যায়, হাল্কা ঘুম বা সত্যিকার অর্থে ঘুমানো। এই অবস্থায় আমাদের হৃদস্পন্দন এবং শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ হয়। এই অবস্থায় শরীরের তাপমাত্রাও কমতে শুরু করে।তৃতীয় ধাপটা হলো রেম ঘুমের (র্যাপিড-আই-মুভমেন্ট) আগের ধাপ।ধীরে ধীরে আমরা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হতে শুরু করি এবং আচ্ছন্ন হই। আমাদের হৃদস্পন্দন ও শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি কমতে শুরু করে। শরীরের মাংসপেশীর কার্যক্রম কমে আসে এবং ছন্দাকারে তালে তালে শ্বাস-প্রশ্বাস শুরু হয়। এই পর্যায়ে ঘুম ভাঙলে জেগে উঠে পারিপার্শ্বিক অবস্থার সাথে তাল মিলিয়ে নিতে কয়েক মিনিট সময় লেগে যায়।
গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হওয়ার মধ্য দিয়েই আমাদের প্রবেশ ঘটে র্যাপিড আই মুভমেন্ট বা REM sleep দশায়। ঘুমিয়ে যাওয়ার প্রায় ৭০ থেকে ৯০ মিনিট পরে র্যাপিড আই মুভমেন্ট বা REM sleep শুরু হয়।যেহেতু এর অবস্থান ঘুম চক্রের শেষে, তাই আমাদের জেগে ওঠার আগের সময়ে আমরা এই দশাতে থাকি। এসময় চোখের পাতা বন্ধ থাকলেও চোখ নড়াচড়া করে। এই অবস্থায় হৃদপিণ্ড ধীরে ধীরে কাজ করে। শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি কমে আসে,আর সাময়িকভাবে শরীরের নড়ন বন্ধ হয়ে যায়।এই দশা মূলত শুরু হয় "পনস" নামে পশ্চাৎমস্তিষ্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ থেকে।পনস থেকে এসময় কিছু সিগন্যাল স্পাইনাল কর্ডে বা বাংলায় যাকে আমরা বলি মেরুরজ্জু। এখান থেকে যেসব নার্ভ বের হয়েছে, তাদের বিস্তৃতি পিঠ, হাত, পা এসব অঙ্গে।মেরুরজ্জু তখন এ জায়গাগুলোর মাংসপেশীগুলোকে অবশ করে ফেলে।এইজন্য আমরা এসময় তেমন একটা নড়াচড়া করি না। চমকপ্রদ ব্যাপার হল,এসময়ের ইইজি সংকেত জাগ্রত অবস্থার অনুরূপ থাকে। আমরা সজাগ না থাকলেও আমাদের মস্তিষ্ক এই দশায় সবচেয়ে বেশি কর্মরত থাকে। এমনকি কখনো কখনো আমরা সজাগ অবস্থাতেও আমাদের মস্তিষ্ক এত সক্রিয় থাকে না!আরো একটি মজার বিষয় হলো,বয়স পঞ্চাশ পার হলে অনেকেরই রেম ঘুম সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দেয়।এ সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা রেম ঘুমের সময় বিভিন্ন ধরনের নড়াচড়া করেন; যেমন লাথি ও ঘুষি মারা, লাফালাফি এমনকি দৌড়ানো!আমাদের স্বপ্ন দেখাও হয়ে থাকে এই দশাতেই।এই দশার পরেই, আমরা আবার non-REM sleep দশায় প্রবেশ করি। এই দুই দশার পুনরাবৃত্তি ঘটতে থাকে ঘুমন্ত থাকা সময় জুড়ে।ঘুম প্রক্রিয়ার এক একটি চক্রের দ্যৈর্ঘ্য গড়ে প্রায় নব্বই মিনিট হয়ে থাকে।সাধারণত, যত বেশি সময় ঘুমানো যায়, প্রতি চক্রে তত অল্প সময় মানুষ গভীর ঘুমে বা র্যাপিড আই মুভমেন্ট দশায় যায়।
"What would an ocean be without a monster lurking in the dark? It would be like sleep without dreams."
--Werner Herzog
স্বপ্নের কথা এখানে একটু বিশেষভাবে বলা দরকার।স্বপ্ন নিয়ে আমাদের জল্পনা কল্পনার শেষ নেই। এই লেখায় আমি মোটেও তার কোনো ইতি ঘটাবো না,আমার অতো জানাও নেই।যেহেতু এর সাথে "কল্পনা" শব্দটা আছে, আর গুরুদেব বলে গেছেন, কল্পনা জ্ঞানের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ,তাই আমি অবাধ কল্পনাপ্রবাহে কোনো বাধা দেবো না।
স্বপ্ন আসলে মানুষের একটি মানসিক অবস্থা, যাতে মানুষ ঘুমন্ত অবস্থায় বিভিন্ন কাল্পনিক ঘটনা অথবা বাস্তব ঘটনা অবচেতনভাবে অনুভব করে থাকে। ঘটনাগুলি কাল্পনিক হলেও স্বপ্ন দেখার সময় আসল বলে মনে হয়। অধিকাংশ সময়ই দ্রষ্টা নিজে সেই ঘটনায় অংশগ্রহণ করছে বলে মনে করতে থাকে। অনেক সময়ই পুরনো অভিজ্ঞতার টুকরো টুকরো স্মৃতি কল্পনায় বিভিন্ন ভাবে জোট বেঁধে ও পরিবর্তিত হয়ে সম্ভব অসম্ভব সব ঘটনার রূপ নেয়।আচ্ছা, এই যে বললাম, যে, স্বপ্নে আমরা অনেকসময় অনেক কাল্পনিক বা অবাস্তব জিনিস দেখি,যেগুলো বাস্তব জীবনে কখোনো ঘটার নয়,এটা কেনো হয়? আসলে, এর জন্য একটু নিউরোলজির কাছে যেতে হবে।কোনো কিছু বাস্তব না অবাস্তব (এবং তার নিরিখে সেটা বিশ্বাসযোগ্য কি না!),সেটা বিচার করার দায়িত্ব আমাদের দেহের "বড়বাবু" মস্তিস্কের । মস্তিষ্কের একটি নির্দিষ্ট অংশ(কর্টেক্স অংশের কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চল) আমাদের এই বিচারবোধ, আরো ভালো করে বললে যৌক্তিক বিচারবোধ এর জন্য দায়ী।রেম ঘুমের সময় সেই অংশটুকু অস্থায়ীভাবে নিষ্ক্রিয়তা প্রদর্শন করে।তাই যেকোন অসম্ভব কিছুই দেখলেও আমাদের যুক্তি,বিচারবোধ কাজ করে না। তাই স্বপ্নে সেসব বিষয় মেনেও নিই আমরা। এই দশাতে স্বপ্ন দেখার ক্ষেত্রে মানব মস্তিষ্কের দুটি রাসায়নিক পদার্থ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এগুলো হলো—এসিটোকোলিন ও নর এপিনেফ্রিন। এসিটোকোলিনের উৎপাদন যত বাড়ে, মস্তিষ্কের কর্মতৎপরতা তত বেড়ে যায়। স্বপ্নের বিষয়বস্তু একজনের কাছে কতটা স্পষ্ট হবে, সেটি নিয়ন্ত্রণ করে এসিটোকোলিন। আবার নর এপিনেফ্রিন সতর্কতা ও মানসিক চাপের মাত্রা নির্ধারণ করে। এসিটোকোলিনের উৎপাদন যত বাড়ে, নর এপিনেফ্রিনের পরিমাণ কমতে থাকে। নর এপিনেফ্রিনের পরিমাণ কমতে থাকলে আমাদের স্বপ্নগুলো মনে রাখার সক্ষমতাও কমতে থাকে।
আমরা যখন সকালে হুট করে উঠে পড়ি, তখন এই দুটো রাসায়নিকের ভারসাম্যে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটে। ফলে মস্তিষ্কের স্বপ্ন মনে রাখার সম্ভাবনা আরও কমে যায়।অনেক সময় মস্তিষ্ক নিজে নিজেই কিছু স্বপ্নের স্মৃতি ডিলিট করে দেয়, হয়তো সেগুলো খুব একটা উত্তেজনাকর নয়, সেইজন্য। স্লিপ রিসার্চার রবার্ট স্টিকগোল্ড বলেন,'যদি কেউ লাফ দিয়ে ঘুম থেকে উঠে দিনের কাজ শুরু করে দেন, তবে তার পক্ষে স্বপ্ন মনে রাখা সম্ভব হবে না। ছুটির দিনের প্রশান্তির ঘুমই স্বপ্ন মনে রাখার উৎকৃষ্ট উপায়।’ (উক্তিটি বিবিসি স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সংগৃহীত)
( এই খবরটা জানার পর থেকে আমি আর অ্যালার্ম-ট্যালার্ম সেট রেখে হুটহাট করে ঘুম থেকে উঠি না, বুঝলেন। একটু বকা খাওয়া লাগে আব্বুর ,কিন্তু তারপরেও এতে করে সকালে উঠে অ্যাস্থেটিক একটা ফিলিংস হয়। কারণ?
"যখন রাত আসে তখন ঘুম আসে,
যখন ঘুম আসে তখন স্বপ্ন আসে,
যখন স্বপ্ন আসে তখন তুমি আসো,
যখন তুমি আসো তখন ঘুম আসে না।
ঘুম না এলে স্বপ্নও আসে না।
স্বপ্ন না এলে তুমিও আসো না।"
---আপনারা এইটাও জানেন না ?
“Your future depends on your dreams, so go to sleep.” – Mesut Barazany
মানুষসহ অনেক প্রজাতি ঘুমায় রাতে। আবার ইঁদুর, পেঁচা, বাদুর প্রভৃতি ঘুমের কাজটা করে দিনে। মানুষের দিনে কাজ করা, আর রাতে ঘুমানোর পেছনে অবশ্য একটা হরমোনাল প্রভাব আছে। আমরা যখন সকালে বা দিনে সূর্যের আলো দেখি, তখন আমাদের মস্তিষ্ক বেশি বেশি কর্টিসল নিঃসরণ করে। এটা মূলত একটা উত্তেজক হরমোন, যা আমাদের জাগিয়ে রাখে। আবার রাতে যখন দিনের তুলনায় প্রাকৃতিক আলো কম থাকে, বা সহজ করে বললে অন্ধকার হয়,তখন মস্তিষ্ক নিঃসরণ করে মেলাটোনিন,যা আমাদের চোখে ঘুম নিয়ে আসে।মেলাটোনিন বা কর্টিসল--এগুলোর নিঃসরণ হয় মস্তিষ্কের পিনিয়াল গ্রন্থি থেকে। এছাড়া আমাদের মস্তিষ্ক সারাদিন অনেক কাজ করে থাকে, তখন নিঃসৃত হয় আ্যডেনোসিন। এর নিঃসরণ মাত্রা বেড়ে গেলেও আমাদের ঘুম পায়।আমরা যখন ঘুমাই, তখন মস্তিষ্ক এই আ্যডেনোসিন শুষে নেয়, যাতে করে ঘুম থেকে উঠে আমরা সতেজ অনুভব করি !
এখন কথা হলো, ঘুম কেনো জরুরী? খুব সহজেই যে উত্তরটা মাথায় আসে তা হলো, ঘুম সারাদিনের ক্লান্তি দূর করে।মস্তিষ্কের ভেতর তথ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ঘুমের একটা বড় ভূমিকা আছে।অপর্যাপ্ত ঘুম শরীরে ইনসুলিন উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।ঘুম দেহের ক্ষয়পূরণের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে উদ্দীপ্ত করে। ঘুমের সময় মস্তিষ্কসহ দেহের অন্যান্য কলাসমূহে বিভিন্ন কোষের বিকাশ ও মেরামত সংশ্লিষ্ট জিনগুলোর প্রকাশ ও প্রোটিন তৈরির গতি বেড়ে যেতে দেখা যায়।আবার, প্রাণীর কার্যক্রমকে দিনের নির্দিষ্ট সময়ে গন্ডীবদ্ধ করে রাখার সহজ সমাধান হতে পারে ঘুম।একটা মজার তথ্য দিই, ঘুমাতে না দেওয়া কিন্তু নির্যাতনের একটা উপায়!জানা যায় যে, প্রাচীন রোমানরা নাকি কারাবন্দীদের পেট থেকে গোপন তথ্য বের করা আর শাস্তির কৌশল হিসেবে বন্দীদের ঘুমাতে দিতো না ! অতীতের রোমান সাম্রাজ্যের মতো বর্তমানেও কিন্তু বিভিন্ন আধুনিক গণতান্ত্রিক দেশে বন্দীদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘুমাতে না দেয়া আইনত স্বীকৃত একটি পদ্ধতি ! ঘুমের অভাবে মানুষকে সাময়িকভাবে খানিকটা বিভ্রান্ত, সম্মোহিত কিংবা ভারসাম্যহীন মানসিক অবস্থার মধ্যে নিয়ে যাওয়া যায়। একটু গুগল করলেই জানতে পারবেন Randy Gardner এর কথা।সতেরো বছর বয়েসী এই স্কুল ছাত্র ১৯৬৫ সালে টানা এগারো দিন শুধু জেগে থাকার জন্যেই জেগে ছিলো।জানা যায়, ঘুমের অভাবে সে হয়ে পড়েছিলো মনমরা-বিষন্ন, অবিচক্ষণ আর খিটখিটে প্রকৃতির,দেখা গেছিলো মস্তিষ্ক বিকৃতির লক্ষণ আর কোন কিছুতে মনোসংযোগে অক্ষমতা । এছাড়া তার হ্যালুসিনেশন হতে শুরু করে– সে দেখতো তার ঘুমানোর ঘর থেকে একটি পথ বনের মধ্য দিয়ে চলে গেছে(উল্লেখ্য যে অনেক সময় ভূত-প্রেত-পরী দেখতে পাওয়াও অস্বাভাবিক নয়! )।
একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষের প্রতিদিন কমপক্ষে ৬/৭ ঘন্টা ঘুমানো উচিত।তবে, আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর জীবনে এসে ঘুমের প্রতি আমরা প্রায়ই কারণে--অকারণে অবিচার করে ফেলি।আমরা এখন অনেকেই এক দিনে যতটা সময় ঘুমাই,তার চেয়ে অনেক বেশি সময় ব্যয় করি প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট কাজে--টেলিভিশন দেখা, কম্পিউটারে কাজ করা, ম্যাসেঞ্জারে চ্যাটিং,ফেসবুকিং ইত্যাদি ইত্যাদি।অনেকক্ষেত্রে এসব কাজের জন্য আমরা ঘুমের সময়ও জেগে থাকছি, যেটা একেবারেই ঠিক নয়।আবার, স্মার্টফোন বা এই জাতীয় স্মার্ট ডিভাইসগুলো একপ্রকারের নীল আলো নিঃসরণ করে।এই নীল আলো মস্তিষ্কের পিনিয়াল গ্রন্থিকে বলে,দিন হয়ে গেছে, তুমি মেলাটোনিন নিঃসরণ বন্ধ করো।এর ফলে আমাদের ঘুমের সময়টা কমে আসতে থাকে।আজকালকার দিনের জন্য এটা নির্মম সত্যি এবং একই সাথে অত্যন্ত আশঙ্কার কথা!
ঘুমের প্রতি আমাদের এই অবিচারগুলোকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর জন্যই বিশ্বব্যাপী ঘুম-সচেতনতা সৃষ্টি করতে ১৬ই মার্চকে বিশ্ব ঘুম দিবস ঘোষণা করা হয়েছে! ঘুম দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য ছিলো "Healthy Sleep, Healthy Aging".
অর্থ্যাৎ, সুস্থ পরিপক্বতার জন্য সুস্থ ঘুম।
ঘুম নিয়ে এত কথা পড়ে ঘুমঘুম না লাগলেও অন্তত হাই তোলার তো কথা!স্মার্টফোনের নীল আলো অবশ্য এরমধ্যেই আপনার যথেষ্ঠ কর্টিসেল ক্ষরণ ঘটিয়ে ফেলেছে।ও কিন্তু ঘুমাতে দেবে না ! সেদিকে কিন্তু সাবধান ! সাবধান থাকুন, সুস্থ থাকুন, উপভোগ করুন দুঃস্বপ্নহীন শান্তির ঘুম ! --এই শুভকামনার সাথে সাথে অনাগত ঘুম দিবসের "ঘুমন্ত" শুভেচ্ছা জানিয়ে দাঁড়ি দিই আজকে।
Writer: Anirban Maitra